Search
Close this search box.

অর্থ আত্মসাৎ: ইউএফএস’র এমডির বিরুদ্ধে মামলা করবে বিএসইসি

স্টাফ রিপোর্টার- বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সাল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস (ইউএফএস) এর বিরুদ্ধে বিনিয়োগেকারীদের টাকা নিয়ে নয়-ছয় করার প্রমাণ পেয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা। বিনিয়োগকারীদের প্রায় ২০৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে ইউএফএস’র বিরুদ্ধে। এরপর বিএসইসি তাদের বিরুদ্ধে তদন্তে নামে। তদন্তে অভিযোগের প্রমাণ পায় বিএসইসি।

বিএসইসি তদন্ত করে ইউএফএস’র বিরুদ্ধে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মিউচুয়াল ফান্ড বিধি ২০০১ ভঙ্গের প্রমাণ পেয়েছে। তারা এখন ইউএফএস’র লাইসেন্স বাতিলের নোটিশ জারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ ছাড়া অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে ইউএফএস’র ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ যারা জড়িত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে মানিলন্ডারিং আইনে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এ ছাড়া ট্রাস্টি ও কাস্টোডিয়ান হিসেবে ব্যর্থতার জন্য ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এর তখনকার ট্রাস্টি ও কাস্টোডিয়ান বিভাগের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কেন শাস্তি আরোপ করা হবে না, এই মর্মে নোটিশ জারিরও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। নিরীক্ষা ফার্ম আহমেদ জাকির অ্যান্ড কোং ও রহমান মোস্তফা আলম অ্যান্ড কোং এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

এর আগে গত মাসের শুরুতে চারটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ১৫৮ কোটি টাকা নিয়ে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের উধাও হওয়ার খবর সংবাদমাধ্যমে আসে। পর আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তৎপর হয় ফান্ডগুলোর ট্রাস্টি রাষ্ট্রায়ত্ত বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবি। মামলা সূত্রে জানা যায়, লোপাট হওয়া অর্থের পরিমাণ আরও ২০৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা।

এর আগে চারটি মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ১৫৮ কোটি ৩৭ লাখ টাকা নিয়ে ১৩ অক্টোবর দুবাই পাড়ি জমান ইউএফএসের এমডি সৈয়দ হামজা আলমগীর। ২০১৮ সাল থেকে তহবিল সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল বলে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির তদন্তে উঠে আসে।

এই জালিয়াতির ক্ষেত্রে ব্যাংকের প্রতিবেদন জালিয়াতি ও ভুয়া এফডিআর (ফিক্সড ডিপোজিড রেট) দেখিয়ে বিএসইসিকে অন্ধকারে রাখা হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারণে চার বছর নিষ্ক্রিয় ছিল ফান্ডের ট্রাস্টি ও কাস্টডিয়ান (গ্যারান্টি দেয়া প্রতিষ্ঠান) আইসিবি।

চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ ১ জানুয়ারি বিষয়টি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ পেলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ২ জানুয়ারি এমডির বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা জানতে চান হাইকোর্ট। পাশাপাশি সৈয়দ আলমগীরের দুবাই পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। একই সঙ্গে এ ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, তা জানাতে নির্দেশ দিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও আইসিবিকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দাখিল করতে বলা হয়।

পরদিন ৩ জানুয়ারি ইউএফএস ও এর এমডি সৈয়দ হামজা আলমগীরসহ ১৫ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট স্থগিত বা জব্দ করা হয়। মানিলন্ডারিং ও সন্ত্রাসী অর্থায়ন বন্ধে দায়িত্বপ্রাপ্ত বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) দেশের সব আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে এ কথা জানিয়ে চিঠি পাঠায়।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ