স্টাফ রিপোর্টার- রাজধানীর বাড্ডা থেকে আন্তঃজেলা পিকআপ চোর চক্রের ৪ জন সক্রিয় সদস্যকে ৩ টি চোরাইকৃত পিকআপসহ গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব-১ সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-১ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো: মোসতাক আহমেদ।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন যাবত রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় গাড়ী চুরি চক্রের তৎপরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছিল। চক্রের সদস্যরা নিরীহ মানুষকে কটু কৌশলে বোকা বানিয়ে এমনকি অনেক সময় আক্রমন করে বাস, প্রাইভেটকার, পিকআপ, ট্রাক, মোটর সাইকেল, গাড়ী, টাকা পয়সা, মোবাইল, স্বর্ণালংকার ইত্যাদি চুরি/ডাকাতি করে জন জীবন অতিষ্ঠ করে তুলছে। তাদের চুরি/ডাকাতির ভয়ে এলাকার লোকজন সর্বদা আতংকে থাকে।
র্যাব-১ দীর্ঘ দিন যাবৎ উক্ত চোর চক্রকে গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাবের সকল ধরনের গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। এসব অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে র্যাব-১ ছায়াতদন্ত ও গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে।
অধিনায়ক জানান, গত ১৪ জুন রাতে র্যাব-১ এর একটি আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাড্ডা থানা এলাকার মেরুল বাড্ডা ডিআইটি রোড প্রজেক্টে অবস্থিত মীম অটোমোবাইলস গ্যারেজে অভিযান পরিচালনা করে পিকআপ চোর চক্রের ৪ জন সক্রিয় সদস্য বিল্লাল হোসেন (৩০), কবির হোসেন (৩৬), ৩) মোঃ আশিক (২৮), রাজ (৩৫) কে আটক করে। এসময় তাদের নিকট থেকে ৩ টি চোরাইকৃত পিকআপ, ৪ টি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে অধিনায়ক বলেন আসামী বিল্লাল হোসেন (৩০) এই চুরি চক্রের অন্যতম মূলহোতা। তার নেতৃত্বে অন্যান্য সহযোগীরা গাড়ী চুরি করে ধৃত আসামী কবির হোসেন (৩৬) এর ব্যক্তিগত মীম অটোমোবাইলস গ্যারেজে নিয়ে আসে। এরপর পলাতক আসামী মোঃ আব্দুল করিম (৪৫) এসব চুরিকৃত গাড়ীর বিভিন্ন পার্টস খুলে একাধিক গাড়ীতে সংযোজন করে। এছাড়াও এক গাড়ীর চেসিস নম্বর অন্য গাড়ীতে সংযোজন করে বিক্রি করে।
আরো জানা যায়, এসব গাড়ীর বিভিন্ন পার্টস অন্যত্র বিক্রি করে এবং এই চোরাই গাড়ীগুলো দিয়ে ঢাকা শহরের বিভিন্ন এলাকায় তাদের অপরাধ কার্যক্রম ব্যবহার করে থাকে যেন আইন শৃংখলা বাহিনী তাদের আটক করলেও কোন প্রকার সঠিক তথ্য উৎঘাটন করতে না পারে।
মোশতাক আহমেদ আরও জানান, তারা পরস্পর যোগসাজশে বা নেটওয়ার্ক তৈরির মাধ্যমে সারাদেশ থেকে গাড়ী চুরি করে ঢাকা এনে বিক্রি করে। তাদের মধ্যে গ্রেফতারকৃত আসামী মোঃ আশিক (২৮) এবং রাজ (৩৫) গাড়ী চুরি ছাড়াও এক জেলার চুরিকৃত গাড়ী অন্য জেলায় গাড়ী বিক্রির কার্যক্রম করে থাকে।
র্যাব জানায়, এই চোর চক্রের সদস্যরা একেক জন্য এক এক দায়িত্ব নিয়ে তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে যা প্রাথমিকভাবে তারা স্বীকার করেছে। তারা প্রায় ৬/৭ বছর যাবত এই কাজ করে আসছে। তারা এ পর্যন্ত প্রায় ৩০/৩৫টি গাড়ী চুরি করে বিক্রি করেছে। এদের মধ্যে মূলহোতা বিল্লাল হোসেন (৩০) এর বিরুদ্ধে মাদক, চুরি, ডাকাতিসহ বিভিন্ন থানায় ৫ টি মামলা রয়েছে। এই চক্রটি চোরাইকৃত গাড়ীর বিভিন্ন পার্টস ও চেসিস পরিবর্তন করে বিভিন্ন মাদক কারবারীদের কাছে অল্প মূল্যে বিক্রি করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।