Search
Close this search box.

শাহরিয়ার আলম আঙুল ফুলের কলাগাছ

স্টাফ রিপোর্টার: শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, এমপিদের দুর্নীতির সব খবর একের পর এক সামনে আসছে। বিভিন্ন অসদুপায় অবলম্বন করে কোটি টাকা বনে যাওয়ার গল্পগুলো বিস্ময় সৃষ্টি করছে জনমনে। তৎকালীন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের কোটিপতি হওয়া  বা ‘আঙুল ফুলে কলাগাছ’ হওয়ার গল্পটা যে কাউকেই অবাক করবে।

২০০৮ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়ে রাজশাহী-৬ আসন থেকে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন শাহরিয়ার আলম এবং  এলাকাতেও পোশাক কারখানা স্থাপনসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে স্বল্পমূল্যে কিনেছেন কোটি কোটি টাকার জমি।

২০১৪ সালে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী হিসেবে মন্ত্রিসভায় স্থান করে নেন তিনি। ২০১৮ সালেও একই পোর্টফোলিও ধরে রাখতে সক্ষম হন। গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে চতুর্থবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

শাহরিয়ার আলমের ১৫ বছরে সম্পদের পাহাড় গড়ার একটি চিত্র উঠে এসেছে গণমাধ্যমে। জানা যায়, রাজশাহীতে নর্থ বেঙ্গল এগ্রো ফার্মস লিমিটেড নামে একটি কৃষি খামারের মালিক শাহরিয়ার আলম। এ ছাড়া ২০২০ সালে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার গোগ্রাম ইউনিয়নের বসন্তপুর মোড়ের পাশে একই প্লটে ৪০ বিঘা জমি কিনেছেন। জমির মালিক ছিলেন বাঘা উপজেলার বাঘা পেট্রোল পাম্পের মালিক গোলাম মোস্তফা। তাঁর অভিযোগ, জমির মূল্য পরিশোধ না করে শাহরিয়ার আলম প্রতারণার মাধ্যমে দখল নেন।

খবরে বলা হয়, নিজের জমা দেয়া হিসাব অনুযায়ী, শাহরিয়ার ছিলেন ‘ভূমিহীন’। অর্থাৎ তার কোনো স্থাবর সম্পদ ছিল না। কিন্তু ১৫ বছরেই তিনি কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। রাশিয়া, ব্রাজিল ও চীনে খুলেছেন নিজস্ব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। গড়েছেন আটটি পোশাক কারখানা। নিয়েছেন নিজের রেনেসাঁ গ্রুপের নামে ‘দুরন্ত’ টেলিভিশন। রাজশাহীতে করেছেন বেসরকারি মেডিকেল কলেজ। পাশাপাশি ঢাকার গুলশানে নিজের নামে দুটি, পুত্রের নামে একটি এবং দ্বিতীয় স্ত্রীর নামে নিয়েছেন ৩ হাজার ৬০০ বর্গফুটের রাজকীয় ফ্ল্যাট। নিজের নামে কৃষি ও অকৃষি জমি দেখিয়েছেন ৫১ বিঘা। অথচ ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে জমা দেয়া হলফনামার তথ্যমতে, তখন শাহরিয়ার আলমের স্থাবর কোনো সম্পদ ছিল না। তার বাবা মো. শামসুদ্দিন ছিলেন রেলের কর্মচারী।

লালমনিরহাট জেলার কালীগঞ্জ উপজেলায়ও ২০১৭ সালে ১৩ বিঘা জমি কেনেন শাহরিয়ার আলম। সেখানেও গড়ে তোলা হয়েছে খামারবাড়ি। বিভিন্ন দামি সবজি, মাছসহ নানা ধরনের চাষাবাদ করা হচ্ছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ২০০৮ সালে এমপি হওয়ার পর এসব জমি ও অর্থসম্পদ গড়ে তোলার নেশায় শাহরিয়ার আলম তার নির্বাচনী এলাকায় ব্যাপক লুটপাট চালিয়েছেন। তিনি তার এপিএস সিরাজুল ইসলামের মাধ্যমে এককভাবে নিয়ন্ত্রণ করতেন টিআর-কাবিখাসহ সরকারি সব অনুদান ও প্রকল্প। এমনকি স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষক নিয়োগেও করেন বাণিজ্য। চাকরি, বদলিসহ বিভিন্ন কাজেও এপিএসের মাধ্যমে নেন মোটা অঙ্কের টাকা। প্রতিমন্ত্রীর তহবিলে টাকা না দিলে কারও টিআর-কাবিখা বা সরকারি অনুদান পাওয়ার সুযোগ ছিল না। আবার টাকা দিলে ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামেও মিলেছে সরকারি বরাদ্দ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

সর্বশেষঃ