Search
Close this search box.

দেশ বাঁচলে মানুষ বাঁচবে স্বপ্ন থাকবে

দেশ বাঁচলে মানুষ বাঁচবে স্বপ্ন থাকবে

॥ মোল্লা জালাল ॥

ঝড়,বন্য,জলোচ্ছাস,মহামারি বাংলাদেশের নিত্য সঙ্গী। তার মধ্যে দিয়েও বাংলাদেশ আজ গোটা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল। সঠিক নেতৃত্ব ও মানব সম্পদই এর মূল চালিকা শক্তি। সংসদ নেতা, সরকারের প্রধান নির্বাহী, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচীত সঠিক সিদ্ধান্তই দেশকে ক্রমাগত এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। তাঁর সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন কল্পনা করলেই চোখের সামনে ভেসে উঠে ‘সমৃদ্ধির আরেক বাংলাদেশ’। ভারতের চেরাপুঞ্জির অতি বৃষ্টির ফলে সিলেট অঞ্চল এখন দুর্গত। পাশাপাশি দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বন্যার ক্রমাগত অবনতি ঘটছে। এই সময়ে ‘দাতা’ কাউকে পাশে পাওয়ার আশা করা দূরাশা। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধের কারনে গোটা বিশ্ব নিজেদের নিয়েই ব্যস্ত। বিশ্বের সর্ববৃহৎ সামরিক জোট ন্যাটো বলছে, এই যুদ্ধ কয়েক বছর ধরে চলবে। ইউরোপে বিভিন্ন দেশের সরকার যুদ্ধের জন্য নিজ দেশের লোকদের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বলছে। মোদ্দাকথা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ক্রমাগতভাবে অর্থনৈতিক বিশ্বযুদ্ধে পরিনত হচ্ছে। এমতাবস্থায় উন্নয়নশীল দেশগুলোর নিজের পায়ে দাঁড়ানো ছাড়া কোন বিকল্প নেই। প্রধানমন্ত্রী গত কয়েকদিন ধরে তাঁর প্রতিটি বক্তব্যে সে কথাই বলে যাচ্ছেন। বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটা সত্য, দেশ বাঁচলে মানুষ বাঁচবে স্বপ্ন থাকবে।

সরকারের সিদ্ধান্ত

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, রাত ৮ টার পর থেকে সারাদেশে দোকান-পাট,শপিংমল, বিপনি বিতান বন্ধ রাখতে হবে। এটা বলছেন জ্বালানী সাশ্রয়ের জন্য। যুদ্ধের বাজারে তেলের দাম বাড়ছে, আরো বাড়বে। একসময় হয়তো তেল পাওয়াই যাবে না। প্রধানমন্ত্রী আগে বলেছেন, কৃচ্ছতা সাধনের কথা। পরে বলছেন অপরিকল্পিত ব্যয় বন্ধ করতে। এরপর সরকারি কর্মচারিদের বিদেশ সফরের লাগাম টেনে ধরা, উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহনের আগে প্রকল্প এলাকার পরিবেশ-প্রতিবেশ খেয়াল করা, দেশের প্রতিইঞ্চি জমি আবাদের আওতায় আনা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে উৎসাহিত করাসহ কৃষিজমি রক্ষায় তিনি বলেছেন, যত্রতত্র শিল্প কারখানা স্থাপন করলে গ্যাস ও বিদ্যুত সংযোগ দেওয়া হবেনা। শিল্প স্থাপনের জন্য দেশে শতাধিক অর্থনৈতিক জোন স্থাপন করা হয়েছে। প্রয়োজন হলে আরো করা হবে। কিন্তু কৃষিজমি নষ্ট করে কাউকে শিল্প স্থাপন করতে দেওয়া হবেনা। সদ্য সমাপপ্ত বিশ্ববানিজ্য সংস্থার(ডব্লিউটিও) জেনেভা সম্মেলন থেকে সল্পোন্নত দেশগুলো খালি হাতে ফিরেছে। এবারের সম্মেলনে সল্পোন্নত দেশগুলো তাদের সংকটের কথা জোড়ালোভাবে বললেও উন্নত দেশগুলো কর্নপাত করেনি। এর কারন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ইতোমধ্যে বিশ্বকে বুঝিয়ে দিয়েছে ‘নিজে বাঁচলে বাপের নাম’। বেঁচে থাকার অন্যতম উপাদান খাদ্য। এমন একটা সময় আসতে যাচ্ছে, যখন টাকা থাকলে খাদ্য সামগ্রী পাওয়া যাবেনা। খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারলে আরাম আয়েস বিলাসিতা না থাকলেও মানুষের জীবন চলবে।

খাদ্যের উৎস

বাংলাদেশে খাদ্যের প্রধান উৎস কৃষি। বলা হয়, এখন দেশের জনসংখ্যা ১৭ কোটি। চলমান জনশুমারি শেষ হলে হয়তো এ সংখ্যা ২০ কোটিতে গিয়ে দাঁড়াতে পারে। বিপুল জনসংখ্যার এই দেশে উৎপাদনের প্রধান খাত কৃষি। তাই কৃষিজমি রক্ষা ও তার সর্বোত্তম ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু দিনকে দিন সারাদেশে কৃষি জমি কমতে শুরু করেছে। শিল্পের নামে জমি আটকে রাখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শিল্প বিরোধী নন। তিনি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প স্থাপনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। কারন তাতে উৎপাদন বাড়ে কর্ম সংস্থান হয়। কিন্তু বর্তমানে দেশের সমতল ভূমি থেকে শুরু করে একেবারে প্রত্যন্ত অঞ্চলের পাহাড়, টিলা, খাল-বিল, এমনকি নদীরচর এলাকায়ও দেখা যায় ব্যাঙ্গের ছাতারমত জমি ঘিরে রাখা অসংখ্য বাউন্ডারি। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া পর্যন্ত সর্বত্র একই অবস্থা।
এসব বাউন্ডারি দেওয়া জমি কোন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য নয়,করা হচ্ছে ব্যাংক লুটের উদ্দেশ্যে। যারা এসব করছেন তারা খুবই চালাক-চতুর লোক। প্রতিটি এলাকায় তারা কমিশন এজেন্ট নিয়োগ করে রাখেন। কাঁচা টাকা পেয়ে ওই সব এজেন্টরা কৃষকদের কাছ থেকে নানা ধরণের প্রলোভন দেখিয়ে জমি কিনে নেয়। কেউ জমি বেচতে না চাইলে তাদের ওপর জুলুম নির্যাতন চালায়। জাল দলিল থেকে শুরু করে হামলা-মামলা সবই করা হয়। এই নেটওয়ার্কে প্রশাসন থেকে শুরু করে ব্যাংকের লোকজনও জড়িত। ফলে, এদের বিরুদ্ধে তেমন কিছু করা যায়না। ময়মনসিংহের ভালুকা, মুক্তাগাছা, ফুলবাড়িয়া, টাংগাইলে ঘাটাইল, মধুপুর, সখিপুর, বিস্তির্ণ গাজীপুর জেলা হচ্ছে আদিভূমির ভূখন্ড। এসব এলাকায় বহুতল ভবন নির্মানের ক্ষেত্রেও তেমন কোন ব্যায় হয়না। যোগাযোগ ব্যবস্থাও ভাল। ফলে এ অঞ্চলে ‘শকুনের’ নজর বেশি। যদি শুধু ভালুকার কথাই ধরা হয়, তবে কোন পরিসংখ্যান ছাড়াই চোখ বন্ধ করে বলে দেওয়া যায়, এখনই ভালুকায় কমপক্ষে দশ সহশ্রাধিক বাউন্ডারি দেখা যাবে যেখানে কোন শিল্প প্রতিষ্ঠান করা হয়নি। ভালুকারহবিরবাড়ি,পাড়াগাও,কাচিনা,বাটজোর,ডাকাতিয়া,আঙ্গারগারা,মল্লিকবাড়ি,কাতলামারি,ভরাডুবা,মেদুয়ারি, উথুরা,বনগাঁও, চামিয়াদিসহ ফুলবাড়িয়ার আছিম,পোড়াবাড়ি,খলাবাড়ি,খাগাডি,জামতলি, শাপখালি বগারবাজার এলাকার সবখানেই শতশত একর উর্বর কৃষিজমি বাউন্ডারি দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে। এ অবস্থা শুধু ময়মনসিংহ অঞ্চলেই নয় সমগ্র বাংলাদেশেই দেখা যাবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কৃষিজমিতে শিল্প স্থাপন করলে গ্যাস-বিদ্যুত দেওয়া হবে না। কিন্তু তাঁর এই সময়োচীত দুরদর্শী ঘোষনার বাস্তবায়ন হবে কেমনে ? কথায় বলে, ‘চোরে না শুনে ধর্মের কাহিনী’। শুধুমাত্র প্রশাসন দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনার বাস্তবায়ন হবেনা।

সংসদ সদস্যবৃন্দ

প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনার সঠিক বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন ভূমিকা রাখতে পারেন সংসদ সদস্যগন। তারা চাইলে এ বিষয়ে জাতীয় সংসদে নতুন আইন প্রনয়নও করতে পারেন। সংসদ সদস্যরা কেউ গরীব মানুষ না। তাদের ধন-সম্পদের অভাব নেই। তারা নিজেদের যা আছে তা নিয়ে সন্তোষ্ট থেকে ‘শোকর আলহামদুলিল্লা’ বলে জোড়ালোভাবে প্রধানমন্ত্রীর পাশে থাকলে দেশ ও জাতির কল্যান হবে। সংসদ সদস্যরা সক্রিয় হলে তাদের দলেও মানুষের অংশগ্রহন বাড়বে। নির্বাচনে জয়লাভ করার জন্য আমলাতন্ত্রের সাহায্য-সহযোগিতা কিংবা কূটচালের ওপর নির্ভর করতে হবেনা। শিল্পের জন্য প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে শতাধিক ইকনোমিক জোন করেছেন। প্রয়োজনে আরো করবেন। যারা সত্যিকার অর্থেই শিল্প প্রতিষ্ঠান করতে চান তারা ওই সব ইকনোমিক জোন থেকে জমি নিয়ে শিল্প প্রতিষ্ঠান করতে পারেন। জনকল্যানে শুধু সরকার নয়, জনপ্রতিনিধিরাও দুর্বৃত্তদের প্রতিরোধ করতে পারেন। সাধারণ মানুষ সেটাই প্রত্যাশা করে। কারন, জনপ্রতিনিধিদের নিয়েই গণতান্ত্রিক সরকার হয়।
সংসদ সদস্যদের বড় শক্তি দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। দেশের প্রতিটি গ্রামে রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী রয়েছে। কারা কৃষিজমি কিনে লুটপাট করে নেতা-কর্মীরা সবই জানে। তারা রুখে দাঁড়ালে অবস্থার পরিবর্তন হতে বাধ্য। একই সাথে স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিরাও এ বিষয়ে ভূমিকা রাখতে পারেন। যদি তারা একটু নির্মোহ হন।

সংবাদকর্মী

এমপি, মন্ত্রী নেতা-কর্মী কেউ কিছু না করলেও স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন কাজটি করতে পারেন। এদেশের সাধারণ মানুষ সংবাদ কর্মীদের কাছে সেটাই প্রত্যাশা করে। তাদের অন্য কিছু করার দরকার নেই। করতে পারবেও না। তারা শুধু সরকার তথা দেশবাসীকে অবহিত করতে পারেন। এই অবহিত করাটাই সংবাদকর্মীদের অন্যতম পেশাগত দায়িত্ব। কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে প্রশাসনকে। প্রশাসন সে দায়িত্ব পালন না করলে সংবাদ কর্মীরা সেটাও জাতিকে অবহিত করা অধিকার রাখেন। অবশ্য যদি দেশ ও মানুষের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতা আছে বলে তারা মনে করেন। পাশাপাশি তাদের এটাও মনে রাখতে হবে, বর্তমান প্রযুক্তির যুগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম খুবই শক্তিশালী। ইন্টারনেটে সবার আগে সব খবর দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। সুতরাং সংবাদকর্মীরা কোন কারনে কোন কিছু চেপে গেলেও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সব কিছু প্রকাশ হয়ে সংবাদকর্মীদের মানুষের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলবে।

ব্যাংক ব্যবস্থাপনা

ব্যাংকের টাকা লকার থেকে আকাশে উড়ে যায়না। বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় লকার থেকে টাকা বেড়োয়। এগুলো জনগন করেনা, করে ব্যাংকের লোকেরা। বাংলাদেশ ব্যাংক সত্যিকার অর্থে ব্যাংক লুট বন্ধ করতে চাইলে তা করতে পারে। কারণ, বাংলাদেশ ব্যাংকের হাত অনেক লম্বা। তারা যদি ইমানদারির সঙ্গে কাজ করে তাহলে জাতি কৃতজ্ঞ থাকবে।

ব্যবসায়ী সমাজ

দেশের ব্যবসায়ী সমাজ বর্তমান ও আগামীদিনের কথা বিবেচনায় রেখে দেশ ও জাতির কল্যানে তাৎপর্যপূর্ন ভূমিকা রাখতে পারেন। একটি দেশের জন্য সবচেয়ে জরুরি দু’টি বিষয়ের একটি হচ্ছে ‘দেশপ্রেমিক আমলাতন্ত্র’ আরেকটি ‘দেশপ্রেমিক পূঁজি’। এই দুই শেণীর মধ্যে দেশপ্রেম থাকলে কারো সাধ্যি নেই লুটপাট করে। ঘুষ-দুর্নীতি বন্ধ হবে। বাজার স্থিতিশীল থাকবে। দেশ ক্রমাগত এগিয়ে যাবে।
ব্যবসায়ীরা বড় বিনিয়োগকারি। তাদের অনেক ক্ষমতা। তারা সরকার বানায়, সরকার ফালায়। আর সে কারনেই তারা যখন যা চায় সরকারে কাছ থেকে তা আদায় করে নিতে পারে। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের সাথে পাল্লা দিয়ে পারেনা। কেননা সরকারের ভিতরে বাইরেও তাদের লোক আছে।

সাধারণের সংকট

দেশের বৃহত্তর বিশাল জনগোষ্ঠীর নিন্ম, নিন্ম মধ্য ও মধ্যবিত্তের মানুষের সংকট সবচেয়ে বেশি। আক্ষরিক অর্থে তাদের কোন শক্তি নাই। তাদের আশা-ভরষার জায়গা ‘সরকার’। এর বাইরে কিছু লোক আছে যারা এই তিন শেণীর মানুষ নিয়ে ভিন্ন মাত্রায় ধান্ধা করে। বিদেশীদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে দেশের নিন্ম আয়ের মানুষের স্বার্থের কথা বলে নিজেদের আখের গোছায়। এরা ইস্টইন্ডিয়া কোম্পানীরমত।বিভিন্ন বিষয়ে সারাক্ষন সরকারের সমালোচনা করে বিদেশীদের স্বার্থ হাসিলের দরকষাকষি করার সুযোগ করে দেয়। তারা সময়ে সময়ে সবাই এক সুরে কথা কয়। শুধু কথা কইতে পারেনা সাধারণ মানুষ। তারা শুধু খেয়ে না খেয়ে ‘সামলে’ নেওয়ার নিরন্তর লড়াই করে। আর প্রধানমন্ত্রীর কথায় স্বপ্ন দেখে। কৃষিজমি রক্ষায় প্রধানমন্ত্রীর কথায় দেশের কত পার্সেন্ট মানুষ আশায় বুক বাঁধছে পরিসংখ্যান বিদরা তা কল্পনাও করতে পারবেন না।

পরিবর্তিত বিশ্বে

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ভয়াবহ পরিনিতির আলামত দেখা যাচ্ছে। ইউরোপ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে শরনার্থী কি জিনিস। ইউরোপে রেকর্ড মুদ্রাস্ফিতি। বেকারত্ব ঘরে ঘরে। ফলে, দীর্ঘদিনের সুবিধাভোগী বিলাসি ইউরোপীয় সমাজ সবকিছু বাদ দিয়ে নিজেদের কথা ভাবতে শুরু করেছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কা লাগছে বাংলাদেশেরমত উন্নয়নশীল দেশগুলোর অর্থনৈতিক মেরুদন্ডে। যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হলে বহু প্রবাসি কর্মহীন হয়ে দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হবে। পাশাপাশি রপ্তানি বানিজ্যেও ধস নামবে। সুতরাং এখনই প্রস্তুতি নেওয়ার সময়। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে। এ জন্য তথ্য-প্রযুক্তি ও কৃষিখাত সবচেয়ে বড় সেক্টর। কৃষিজমি রক্ষা করে কৃষিকে আরো আধুনিক করা হলে দেশের শিক্ষিত যুব সমাজ পেশা হিসেবে কৃষি কাজে আগ্রহী হবে। কৃষিপন্যের ভাল দাম নিশ্চিত করা হলে উৎপাদন দুই তিনগুন বাড়বে।

স্থিতিশীল বাজার

নিত্যপন্যের দাম নিয়ে যারা প্রতিনিয়ত গলা ফাটায়, সরকারের চৌদ্দ গোষ্ঠী উদ্ধার করে তাদের গায়ে দ্রব্যমূল্যের আঁচ তেমন একটা লাগেনা। কারণ তারা বেনিফিসিয়ারি। বাজারে যায় ঘুষের টাকার বান্ডেল নিয়ে। গাড়ি ভরে জিনিস কিনে বেসুমার মুনাফার টাকা দিয়ে। ভোগান্তির শিকার হয় নিন্ম ও নিন্ম মধ্যবিত্তের মানুষ। বাজার লুটেরাদের দমনে সরকারকে সার্বক্ষনিক তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। মাঝে মধ্যে লোক দেখানো অভিযান করে কার্যকর কোন ফল পাওয়া যাবেনা। মানব সভ্যতার ইতিহাসে বহু নজির আছে, দুর্বিক্ষ, মহামারি, যুদ্ধ-বিগ্রহের সময় একশ্রেণীর লোক বেসুমার অর্থ-সম্পদের মালিক হয়ে যায়। আর্ন্তজাতিক লুটেরা চক্র লুটের টাকা সুইস ব্যাংকে জমায়। সুইস ব্যাংকে বর্তমানে বাংলাদেশীদের জমানো টাকার পরিমান ৮ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি। বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ৮ লাখ হাজার কেটি টাকা। এর মধ্যে গত এক বছরেই জমা হয়েছে ২ হাজার ৯৯২ কোটি ডলারের অধিক টাকা। এ হিসাব শুধু নগদে জমানো টাকার। এর বাইরে সোন-দানা,হীরা,মনি-মুক্তার হিসাব আলাদা। গত দুই বছর ধরে দেশ করোনায় আক্রান্ত। ব্যবসা-বানিজ্য জীবন-জীবিকা সব কিছু প্রায় অচল ছিল। তারপরও এত বিপুল পরিমান টাকা সুইস ব্যাংকে গেল কেমনে। কারা, কোথা থেকে কিভাবে এত টাকা পাচার করলো এ প্রশ্নের কোন উত্তর নেই। কারন, সুইস ব্যাংকে যারা টাকা রাখেন তাদের নাম কখনো প্রকাশ করা হয়না। শুধু দেশের পরিচিতি জানা যায়। এরাই মানুষের পকেট কাটে, বাজার লুটে। বাজার লুট রোধ করতে পারলে চরম সংকটেও মানুষের জীবন-জীবিকা সচল থাকবে। হাপিত্তিস করবে শুধু বেনিফিসিয়ারি শ্রেণীর লোকেরা। যারা কেবল “খাই খাই, নাই নাই, যাই যাই করে”।

লেখক ঃ সিনিয়র সাংবাদিক, বিএফইউজের সাবেক সভাপতি।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ