স্টাফ রিপোর্টার: প্রাথমিকের শিক্ষার্থীরা ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখেই পাঠ্যপুস্তক (বই) পাবে। এ লক্ষে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির জন্য ২০টি প্যাকেজে ১৪৭ কোটি ৯৭ লাখ ৫৯ হাজার টাকায় ৪ কোটি ২ লাখ ৫৬ হাজার পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবরাহে ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন করেছে সরকার।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে এই অনুমোদন দেয়া হয়।
বৈঠক শেষে সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকের বই ছাপানোর ব্যাপারে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। যথা সময় যাতে ছাত্র-ছাত্রীরা বই পায় সেটা নিশ্চিত করা হবে। বইয়ের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ মানের বিষয়টি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। বই উৎস হবে কি না– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটি তিনি বলতে পারবেন না। তবে ছাত্র-ছাত্রীরা বই পাবে।
এদিকে বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রাথমিক স্তরের প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির ২০টি প্যাকেজে ৯৮টি লটের মধ্যে ৭০টি লটের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয়প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। বাকি ১৮টি লটের প্রস্তাব পুনঃদরপত্রের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ৭০টি লটের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ (কাগজসহ), বাঁধাই ও সরবরাহে ব্যয় হবে ১৪৭ কোটি ৯৭ লাখ ৫৯ হাজার ৫৩৭ টাকা।
সূত্রটি জানায়, শিক্ষার্থীর কাছে তাদের কাঙ্ক্ষিত পাঠ্যপুস্তক যথাসময়ে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিক স্তরের (১ম, ২য় ও ৩য় শ্রেণির) ২০টি প্যাকেজে ৯৮টি লটে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হলে ২৫২টি দরপত্র জমা পড়ে।
এর মধ্যে ২০৯টি দরপত্র রেসপনসিভ হয়। টিইসি কর্তৃক ৯৮টি লটের বিপরীতে ৮৮টি লটে সুপারিশ করা রেসপনসিভ সর্বনিম্ন দরদাতা মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান ৪ কোটি ২ লাখ ৫৬ হাজার ৩৪৬টি বই সরবরাহ করার সুপারিশ করা হয়। এতে মোট ব্যয় ধরা হয় ১৪৭ কোটি ৯৭ লাখ ৫৯ হাজার ৫৩৭ টাকা। প্রতিটি বই মুদ্রণ, কাগজসহ বাঁধাই ও সরবরাহ বাবদ খরচ ধরা হয় ৩৬ টাকা ৭৬ পয়সা।
এই ৮৮টি লটের মধ্যে ৭০টি লটের সর্বনিম্ন দরদাতা ৭০টি দেশীয় প্রতিষ্ঠান এবং অবশিষ্ট ১৮টি লটের মধ্যে ২টি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান সর্বনিম্ন দরদাতা। বাকি ১০টি লটের জন্য রেসপনসিভ দরদাতা নেই। এ কারণে এই ১০টি লটের পুনঃদরপত্র আহ্বান করা হবে। এছাড়া ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে যে দুটি লটের বই নেয়ার পরিকল্পনা করা হয়েছিল, সে দুটি লটেও নতুন করে দরপত্র নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠকে উপস্থিত এক সদস্য জানান, এবার কাগজের মানের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কর্ণফুলী পেপার মিলের কাগজ দিয়ে বই ছাপানো হবে। আর যেহেতু রাজনৈতিক চাপ নেই, সুতরাং নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বই ছাপানোর কাজ শেষ হবে এবং শিক্ষার্থীরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই বই পাবে।
তিনি বলেন, অন্যবার রাজনৈতিক বিষয় থাকতো। যে কারণে যারা টেন্ডার পেতেন অনেক সময় বই সরবরাহ দিতে দেরি হতো। এবার সেই সম্ভাবনা নেই।