বিনোদন ডেস্ক: বিগত সরকারের আমলে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে গান গাওয়ার সুযোগ পাননি জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী আসিফ আকবর। রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তার গাওয়া কোনো গানও বাজানো হতো না এ দুই প্রচারমাধ্যমে। দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় এ গণমাধ্যম দুটি থেকে যোগাযোগ করা হয় এই শিল্পীর সঙ্গে। দেয়া হয়েছিল গান গাওয়ার প্রস্তাব। তবে, তাদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন আসিফ।
কেন তাদের প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছেন ফেসবুকে সে প্রসঙ্গে লিখেছেন কণ্ঠশিল্পী আসিফ।
বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আসিফ লিখেন, ‘বাংলাদেশ বেতারের একজন কর্মী আমাকে দাওয়াত দিয়েছে তাদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে। মেয়েটির বিনয়ী প্রস্তাব ফিরিয়ে দিতেই হলো। আরও কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী বেতারে আছেন, যারা বিগত ষোলো বছর আমার গান চালাতে চাইতো, পারত না। এখন পারছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন থেকেও ফোন পেয়েছি। প্রোগ্রাম প্রোডিউসার বলেছে, আপনাকে নিয়ে নতুনভাবে শুরু করতে চাই। তাকেও বিনয়ের সঙ্গে “না” করে দিয়েছি। আমি নিকট অতীতে দেখেছি, বিটিভিতে আমার গান চলেছে ঠিকই, শুধু নামটি বদলে দিয়েছে। চব্বিশ বছরের ক্যারিয়ারে (ওয়ান-ইলেভেনসহ) জীবন থেকে চলে গেছে আঠারো বছর। যৌবন পেরিয়ে এখন আমি মধ্যবয়সী। ফাঁকে ফাঁকে বেসরকারি টিভি চ্যানেলে গাইতাম, এখন আর গাই না, সেখানেও আর কখনো গাইব না। এসব নিয়ে আর কষ্টও পাই না। দীর্ঘদিনের অনভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে গেছি।’
অভিমানী হৃদয়ে তিনি লিখেছেন, ‘সেই মাথাভরা চুল আর নাই, সাদাও হয়ে গেছে কিছু, চোখের দৃষ্টিও ঝাপসা হয়েছে একটু। তবুও রাষ্ট্রকে ধন্যবাদ, আমাকে দেশে থাকতে দেওয়ার জন্য। গান গাওয়া আমার পেশা, মঞ্চে গাইব আর অল্প কয়েকটা বছর। কোটি মানুষ আমাকে ভালোবাসে, তাদের সামনে গাইবার ইচ্ছা আছে, নিশ্চয়ই তারাও বঞ্চিত হয়েছে। বেতার-বিটিভিতে আমার জায়গায় সুযোগ পাবে অন্য কেউ, সেখানেই আনন্দ খুঁজে নেব।’
‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ গেয়ে দেশের কোটি কোটি সংগীতপ্রেমীর কাছে পৌঁছেছিলেন শিল্পী আসিফ আকবর। এরপর বেশ কিছু জনপ্রিয় গান করেছেন তিনি। বেরিয়েছে বেশ কিছু অ্যালবাম। বিএনপিমনা রাজনীতির কারণে গত ১৬ বছর তার ক্যারিয়ারে নেমে আসে স্থবিরতা। তবে তিনি আশাবাদী, আবারও মানুষ তার কণ্ঠ শুনতে পাবেন।
শুধু আসিফ নন, রাজনৈতিকভাবে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে অনেক শিল্পীই রাষ্ট্রীয় এ গণমাধ্যমে কাজের সুযোগ থেকে বঞ্চিত ছিলেন। গত ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আবারও রাজনৈতিক কারণে বঞ্চিত শিল্পীদের কাছে টানার চেষ্টা করছে গণমাধ্যমগুলো। প্রচার শুরু করেছে গান। তাদের অনুষ্ঠানগুলোতে গান পরিবেশনের জন্য যোগাযোগও করা হচ্ছে।