স্টাফ রিপোর্টার: পাটের তৈরি পরিবেশবান্ধব সোনালি ব্যাগ বাজারে আসছে আগামী জানুয়ারিতে। দিনে উৎপাদন হবে পাঁচ থেকে সাত টন। এ ব্যাগের উদ্ভাবক জানিয়েছেন, যে কেউ চাইলেই প্রান্তিক পর্যায়েও এই ব্যাগ উৎপাদন করতে পারবেন। আর পরিবেশ গবেষকেরা বলছেন, গ্রামীণ ও আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী বেশ কিছু উপকরণ দিয়েও পলিথিনের বিকল্প চাহিদা মেটানো সম্ভব। এতে ক্ষুদ্রকুটির শিল্পে নতুন মাত্রা যোগ হবে।
২০১৬ সালে পলিথিনের বিকল্প হিসেবে পাট থেকে পরিবেশবান্ধব ও পচনশীল ‘সোনালি ব্যাগ’ উদ্ভাবন করেন বাংলাদেশ পাটকল কর্পোরেশনের (বিজেএমসি) প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোবারক আহমদ খান। ২০১৭ সাল পরীক্ষামূলকভাবে বাজারজাত করা হয় শপিং ব্যাগটি। তবে এর পর নানা কারণে আটকে যায় প্রক্রিয়া। অবশেষে বাজারে আসছে সোনালি ব্যাগ।
বিজেএমসির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোবারক আহমদ খান বলেন, পাটের সূক্ষ্ম সেলুলোজ দিয়ে তৈরি সোনালি ব্যাগ দেখতে প্রচলিত পলিথিনের মতোই। এটি হালকা-পাতলা ও টেকসই। জ্বালালে কাগজের মতো ছাই হয়ে মিশে যায় মাটিতে। তাই পরিবেশ দূষণের সম্ভাবনা নেই। এই ব্যাগ একাধিকবার ব্যবহার করা যায়। পরিবেশ বান্ধব এই ব্যাগ আগামী বছর বাজারে আনবে বিজেএমসি। ব্যাগের আবিষ্কারক জানান, একটি মিলে প্রতিদিন পাঁচ থেকে সাত টন করে এই বাণিজ্যিক ব্যাগ তৈরি সম্ভব।
পাটের পাশাপাশি প্রাকৃতিক নানা উপাদানেও তৈরি করা যায় ব্যাগ। গ্রামীণ ও আদিবাসীদের ঐতিহ্যবাহী বেশ কিছু উপকরণ দিয়ে এই চাহিদা মেটানো সম্ভব। আবার কলা গাছের তন্তু দিয়েও কাপড় উৎপাদন হচ্ছে। যা থেকে পানি নিরোধক ব্যাগও তৈরি করা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের ডিন ড. আব্দুস সালাম বলেন, বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় ক্ষুদ্র ও নৃগোষ্ঠী রয়েছে তাদেরকে এ ধরনের কাপড় তৈরিতে উৎসাহিত করা যেতে পারে। মানুষের কাছে এগুলোর প্রাচুর্য বাড়াতে অনেকগুলো বিকল্পের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। তাহলেই মানুষ পলিথিনের ব্যবহার থেকে সরে আসবে।
এনভায়র্নমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসডো) সেক্রেটারি জেনারেল ড. শাহরিয়ার হোসাইন বলেন, তরুণরাই এটা আবিষ্কার করেছে যে, কলাগাছের আঁশ দিয়ে দিয়ে এক ধরনের কাপড় তৈরি করা যাচ্ছে। এর বুনন যদি আরও ঘন করা যায় তাহলে পানি নিরোধক এক ধরনের প্রোডাক্ট তৈরি করা যেতে পারে।
বর্তমানে ব্যবহৃত প্লাস্টিক ব্যাগের ৪০ শতাংশই একবার ব্যবহৃত হয়। গবেষকেরা বলছেন, এসব ব্যাগে ১৮ ধরনের কেমিকেলের ১২টি উচ্চমাত্রায় বিষাক্ত। যা ক্ষুদ্রকণা রূপে রক্ত, মস্তিষ্কে মিশে থাকছে। মায়ের বুকের দুধের মাধ্যমে প্রবেশ করে নবজাতকের শরীরেও।