মানবাধিকার লঙ্ঘন ও গণতান্ত্রিক শাসনের পথে যথাযথ অগ্রগতি না হওয়ায় চার দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি বাতিল করতে চলেছে যুক্তরাষ্ট্র। চারটি দেশই আফ্রিকা মহাদেশের। সেগুলো হলো- উগান্ডা, গ্যাবন, নাইজার ও মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র (সিএআর)। সোমবার (৩০ অক্টোবর) মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এই পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন। খবর বিবিসির।
২০০০ সালে আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপারচুনিটি অ্যাক্ট (আগোয়া) নামে একটি আইন চালু করে যুক্তরাষ্ট্র। এর অধীনে যোগ্য সাব-সাহারান আফ্রিকান দেশগুলোকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ১ হাজার ৮০০টিরও বেশি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়া হয়।
বাইডেন জানিয়েছেন, নাইজার এবং গ্যাবন আগোয়া চুক্তির অযোগ্য। কারণ তারা ‘রাজনৈতিক বহুত্ববাদের সুরক্ষা এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করতে পারেনি অথবা ওই পথে ক্রমাগত অগ্রগতি করছে না’। উভয় দেশেই এ বছর অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করেছে সামরিক বাহিনী।
মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং উগান্ডাকে বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, দেশ দুটির সরকার ‘আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন’ করছে।
গত মে মাসে সমকামিতার বিরুদ্ধে একটি কঠোর আইন পাস করে উগান্ডা। এতে সমকামিতায় জড়িত প্রমাণ পেলে দোষীদের মৃত্যুদণ্ডের বিধান রাখা হয়েছে।
সমকামিতা-বিরোধী এই আইন পাস হওয়ার পরপরই যুক্তরাষ্ট্র জানায়, তারা আফ্রিকান দেশটিকে আগোয়া চুক্তি থেকে বাদ দেওয়ার পাশাপাশি নিষেধাজ্ঞা আরোপের চিন্তা করছে।
সোমবার মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকারের উদ্দেশ্যে এক চিঠিতে জো বাইডেন বলেছেন, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, গ্যাবন, নাইজার এবং উগান্ডা আগোয়া যোগ্যতার মানদণ্ডের সঙ্গে সম্পর্কিত যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগগুলো সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে।
মার্কিন চুক্তি থেকে বাদ পড়া দেশগুলো এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।
আফ্রিকার চার দেশকে আগোয়া চুক্তি থেকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে আগামী বছরের শুরু থেকে। এটি দেশগুলোর অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে। এতে তাদের রপ্তানি, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও চাকরির বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
এর আগে, সামরিক অভ্যুত্থানের জেরে আগোয়া চুক্তি থেকে বাদ পড়েছিল বুরকিনা ফাসো, মালি এবং গিনি।