Search
Close this search box.

পুতিন যুগের দীর্ঘসূত্রিতায় আধিপত্য হারাতে পারে পশ্চিম

করোনা মহামারির পর বিশ্ব অর্থনীতিতে আরও বিপর্যয় ডেকে এনেছিলো রাশিয়া- ইউক্রেন সংঘাত। দুই বছর পার হয়ে তৃতীয় বর্ষে পা দেওয়া এ সংকটের একদিকে ইউক্রেন ও তার পশ্চিমা মিত্ররা, আরেকদিকে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বৈশ্বিক অর্থনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলা এই যুদ্ধ বন্ধে নিষেধাজ্ঞা, সমালোচনা কোনো কিছুতেই কর্ণপাত না করা পুতিন ভূমিধস জয়ের মাধ্যমে পঞ্চমবারের মতো রাশিয়ার ক্ষমতায় এসেছেন। ধারণা করা হচ্ছে পুতিন একাই পাল্টে দিতে পারেন বিশ্বের ভবিষ্যৎ।

নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আবারও ক্ষমতায় আসীন ভ্লাদিমির পুতিনের বেশিরভাগ সমালোচকই কারাগারে বন্দি অথবা রহস্যজনক মৃত্যুর স্বীকার। শুধু নিজ দেশেরই নয়; এ নির্বাচনে জয়লাভ এবং রাশিয়ার শাসনে পুতিনের দীর্ঘসূত্রিতা মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে বিশ্ব পরাশক্তিরও। এক্ষেত্রে পশ্চিমারা এবং তাদের সামরিক ও আঞ্চলিক সংগঠনসমূহ ভুগতে পারে নানাবিধ নিরাপত্তা ঝুঁকি কিংবা আধিপত্যহীনতায়। অন্যদিকে চীন, উত্তর কোরিয়া, ইরান, ভারত এবং দক্ষিণ আফ্রিকাসহ বেশ কিছু দেশ এগিয়ে আসতে পারে ক্ষমতাযুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে।

পুতিনের হাতে যত সমীকরণ

সারাবিশ্বের এমন সংঘাত উদ্বেগের মধ্যে ক্রমেই আরও পরাক্রমশালী হয়ে চলেছে পুতিন। বিশ্বের বর্তমান সময়ের অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং গণতান্ত্রিক পরিসরে বিরাট রকমের মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারে-এমন অনেক সমীকরণই রয়েছে পুতিনের হাতে। পুতিন বিশ্ব ব্যবস্থায় যেসব মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ক্ষমতার রদবদল এবং প্রাচ্যের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা।

পুতিন প্রভাব টিকিয়ে রাখতে যেসব কৌশল বেশি কার্যকরী ছিল তন্মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল ২০২৩ সালের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মস্কো সফর, এবং নিরাপত্তা, শিল্প, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, অর্থনীতি এবং বাণিজ্য নিয়ে চীন ও রাশিয়ার মধ্যে এক ডজন দ্বিপাক্ষিক চুক্তি স্বাক্ষর। এর ফলে দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান পারস্পরিক নির্ভরতা বাড়ে, পশ্চিমবিরোধী বলয় শক্তিশালী হতে শুরু করে। তাই পুতিনের আবারও ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার সুফল বেশি ভোগ করতে পারে চীন। শুধু পরাশক্তিধর দেশ নয়, পুতিন কৌশলে অপেক্ষাকৃত ছোট দেশগুলোতেও বাড়ছে পুতিনের সমর্থন। সেসব সুযোগ কাজে লাগাতে পারে পুতিন। পুতিনের দীর্ঘসময়ের ক্ষমতা যেসব ক্ষেত্রে প্রভাব রাখতে পারে সেসব বিষয়গুলো হলো:

নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থতা বাড়বে পশ্চিমাদের

চলমান রাশিয়া ইউক্রেন সংঘাতে ন্যাটোর মতো সংগঠনের দুর্বল ভূমিকা ক্রমান্বয়ে আরও দুর্বল হয়েছে। ইউক্রেনে গোলাবারুদ সরবরাহ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে ইউরোপীয় মিত্ররা। যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন নির্বাচন ও রাজনীতির জটিল সমীকরণে তিন-চার মাস ধরে ইউক্রেনে সহায়তা আসাও বন্ধ হয়ে গেছে। এফ-১৬ যুদ্ধবিমানের মতো অস্ত্র এবং অত্যাধুনিক এমজিএম-১৪০ আর্মি ট্যাকটিক্যাল ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা (এডিএসিএমএস) এখনও হাতে পায়নি ইউক্রেন। জার্মানি টাউরুস ক্ষেপণাস্ত্র দেবে কি না, তাও অনিশ্চিত। ইউরোপীয় মিত্রদের মাঝেও আগের মতো দৃঢ় ঐক্য দেখা যচ্ছে না। ন্যাটো এবং ইইউ এর ব্যর্থতার সুযোগে আরও পরাক্রমশালী হয়ে উঠবে রাশিয়া।

এদিকে ইউক্রেনকে সহায়তা প্রদানে অপারগতার সাথে সাথে তীব্র হচ্ছে হামাস-ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির দীর্ঘসূত্রিতা। যুক্তরাষ্ট্র একদিকে বলছে ফিলিস্তিনের গণহত্যা বন্ধ করতে হবে, অন্যদিকে ইসরায়েলকে দিচ্ছে সামরিক ও কুটনৈতিক সাহায্য। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বারবার হুশিয়ারি দেওয়া ছাড়া আর তেমন জোরদার কিছু করতে পারছেনা বাইডেন প্রশাসন। ইসরায়েল-হামাস ইস্যুতে ক্রমেই শক্তি হারাচ্ছে পশ্চিমারা,বাড়ছে পশ্চিমাবিরোধী জনমত। আর্থিক সহায়তা প্রদানে পরাশক্তি দেশগুলোর অপারগতা, শক্তিবলয় কাজে লাগিয়েও কোনো সংঘাতের মীমাংসা করতে না পারার ব্যর্থতাসহ আরও অনেক পরাজয় যুক্ত হচ্ছে পশ্চিমাদের ঝুলিতে।

ন্যাটোর ব্যর্থতায় এখন উল্টো দিকে ঘুরেছে পশ্চিমা পরিকল্পনা। বাল্টিক অঞ্চলসহ পূর্ব ইউরোপের পোল্যান্ড, রুমানিয়ার মতো দেশগুলো রুশ আক্রমণের ভয়ে রয়েছে। শেষ পর্যন্ত ইউক্রেনে পুতিনের জয় তাদের সেই ভীতিকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে।

প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পশ্চিমাদের আধিপত্য কমবে

পিউ ইন্টারন্যাশনালের এক গবেষণা বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ অর্থনীতি ও নিরাপত্তার কারণে চীনকে হুমকি মনে করছেন, যেখানে রাশিয়ার প্রতি এমন মনোভাব রাখেন মাত্র ১৭ শতাংশ। কিন্তু সেই রাশিয়ার সাথেই সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ হয়েছে চীনের।

পশ্চিমারা যখন রাশিয়াকে বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে, চীনের সাথে তখন থেকেই বাড়তে থাকে অর্থনৈতিক সংযোগ। চীনের সাথে বিভিন্নভাবে যুক্ত থাকার ফলে দুই দেশের সম্পর্কও অনেক মজবুত। তাই পুতিনপন্থি চীন ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের আধিপত্য নিতে পশ্চিমাদের থেকে কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকবে। চীন ইতিমধ্যেই প্রশান্ত মহাসাগরীয় বিভিন্ন দেশগুলোকে বাণিজ্যিক সুবিধা এবং আর্থিক ঋণ সুবিধা দিয়ে বন্ধত্বপূর্ণ সম্পর্ক মজবুত করেছে। দ্বিপাক্ষিক চুক্তি এবং আঞ্চলিক সংগঠনের আওতায় অনেক দেশের অর্থনীতির চাকাই এখন চীনের নিয়ন্ত্রণে। রাশিয়ার ক্ষমতায় পুতিন থাকা মানে ইউক্রেন ইস্যুতে ধরাশায়ী থাকবে পশ্চিমারা। এদিকে অর্থনীতি,বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং আধিপত্য বিস্তারে এগিয়ে যাবে পুতিনপন্থিরা।

পশ্চিমা বিশ্বের তাত্ত্বিকরা চিন্তিত ইউক্রেনের পুতিনের জয়ের পরের সম্ভাব্য বিশ্বব্যবস্থা নিয়ে। নিরাপত্তা, আধিপত্য বিস্তারসহ নানা ইস্যুতে তারা মনে করছেন, ইউক্রেনে পুতিনের জয়ের অর্থ হলো ভারত প্রশান্ত মহাসাগীয় এলাকা, প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা, দক্ষিণ চীন সাগরসহ বিস্তীর্ণ জলসীমায় চীনের প্রভাব বৃদ্ধির ঘটনা আরও জোরালো হবে।

তাইওয়ান ইস্যুতেও ধাক্কা খেতে পারে পশ্চিমারা

সম্প্রতি তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদল ক্ষমতাসীন ডেমোক্রেটিক প্রগ্রেসিভ পার্টির (ডিপিপি) প্রার্থী লাই চিং-তে। ডিপিপির সাথে সাথে যুক্তরাষ্ট্রও তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষে শক্ত অবস্থান নিয়ে আসছে, করছে বাণিজ্যিক ও সামরিক সহায়তাও।

অন্যদিকে পুতিনপন্থি চীন তাইওয়ানকে নিজের ভূখন্ডের অংশ মনে করে অনেক আগ থেকেই। তাইওয়ান বিষয়ে চীনের এ দাবি নতুন কিছু নয়। বরং শি জিনপিং এই একত্রীকরণের বিষয়টিকে বর্তমানে একটি লক্ষ্যে পরিণত করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র চায় তাইওয়ানের স্বাধীনতা আর চীন চায় তাইওয়ানকে নিজ ভূখণ্ড করতে। তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্ত রাষ্ট্রের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক না তা থাকলেও দেশটিকে লাগাতার সমর্থন দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।

কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইএর একটি নথিতে বলা হয়, ২০২৭ সালে তাইওয়ানকে মূল ভূখন্ডের সঙ্গে একত্রীকরণ করতে পারে চীন। এই ধারণা মিলে গেলে ইউক্রেনের মতো পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে তাইওয়ানকেও। সেক্ষেত্রে তাইওয়ানেও যুক্তরাষ্ট্র অপারগতা প্রকাশ পেতে পারে।

এমনিতেই করোনাকালীন সংকট নিয়ে ক্ষোভ এবং সন্দেহ, বাণিজ্য যুদ্ধ, হুয়াওয়ে নিয়ে তদন্ত, পরস্পরের কনস্যুলেট বন্ধ করে দেওয়া, সাংবাদিক বহিষ্কারসহ নানাবিধ ঘটনা নিয়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। তাইওয়ান ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের এমন হস্তক্ষেপ সম্পর্কের তিক্ততা আরও বাড়াবে। তাই তাইওয়ান ইস্যুতে ক্ষমতা প্রদর্শন ও মিত্রদের নিরাপত্তা রক্ষায় আবারও চীন-রাশিয়ার কাছে ধাক্কা খেতে পারে পশ্চিমারা।

এশিয়া ও আফ্রিকার ছোট দেশগুলোতেও পুতিন সমর্থন তুঙ্গে

যুক্তরাজ্যভিত্তিক থিংকট্যাক চ্যাথাম হাউজের ‘আফ্রিকা কর্মসূচি’র পরিচালক ড. অ্যালেক্স ভিনেস মনে করেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের মধ্যে গোটা বিশ্বের শক্তির পুনর্বিন্যাস ঘটে গেছে। তিনি বলেন, ‘এই পরিবর্তন আফ্রিকা জুড়ে বেশি দেখা গেছে। ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়ার নিন্দা করে জাতিসংঘে আনা প্রস্তুাবগুলোয় অংশ নেয়নি মহাদেশটির ৫১ শতাংশ দেশ; অথচ স্নায়ুযুদ্ধের আগে এর বিপরীত প্রবণতা দেখা যেত অঞ্চলটিতে।’

রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট মোকাবিলায় এশিয়া ও আফ্রিকার ছোট দেশগুলোর সাথে সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়েছিল রাশিয়া। ২০২৩ সালের রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরের সেই রাশিয়া-আফ্রিকা সম্মেলন পুতিনকে সুবিধাজনক অবস্থান দিয়েছিল। এ সম্মেলন ঘিরে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে পশ্চিমা চাপে থাকা রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন আফ্রিকার দেশগুলোর সমর্থন ধরে রাখার চেষ্টা করেছিলেন। আফ্রিকার ছয়টি দরিদ্র দেশকে বিনা মূল্যে খাদ্যশস্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে পুতিন। বুরকিনা ফাসো, জিম্বাবুয়ে, মালি, সোমালিয়া, মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্র ও ইরিত্রিয়ায় ২৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টন খাদ্যশস্য বিনা মূল্যে সরবরাহ করে রাশিয়া। এভাবে এক বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনের বন্দরগুলো থেকে প্রায় ৩ কোটি ৩০ লাখ টন শস্য রপ্তানি করে দেশটি। বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞার ক্ষতি এড়াতে ছোট দেশগুলোর সমর্থনও কার্যকর ভূমিকা রেখেছে পুতিনের জন্য।

এছাড়াও ইসরায়েল-হামাস ইস্যুতেও জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক আদালতে গণহত্যার মামলা করতে দেখা গেছে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। বিভিন্ন সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের মতের বিপক্ষে গিয়ে অবস্থান নিয়েছে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে। পশ্চিমারা এশিয়া এবং আফ্রিকার ছোট দেশগুলোর নিয়ন্ত্রণ যে হারিয়েছে এবং তা যে ক্রমান্বয়ে আরও বাড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।

আরও শক্তিশালী হবে উত্তর কোরিয়া

ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার সাথে অধিকাংশ দেশের বিচ্ছিন্নতা বাড়লেও উত্তর কোরিয়ার কাছে দেশটির মূল্য ক্রমশ বাড়তে দেখা যাচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন আগ্রাসন শুরুর পর উত্তর কোরিয়া প্রকাশ্যে সমর্থন দিয়েছে মস্কোকে। ‘কৌশলগত সহযোগিতার’ মাধ্যমে আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়ার সম্পর্ক।

ভ্লাদিভোস্তকের ফার ইস্টার্ন ফেডারেল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক আর্তিওম লুকিন সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে লিখেছেন, ‘ইউক্রেনে মস্কোর বিশেষ সামরিক অভিযান একটি নতুন ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার সূচনা করেছে, যেখানে ক্রেমলিন এবং উত্তর কোরিয়া ক্রমবর্ধমানভাবে ঘনিষ্ঠ হতে পারে।’

রাশিয়ায় গতবছর জুলাই থেকে ৬ হাজার ৭০০ কন্টেইনার ভর্তি লাখ লাখ গোলা পাঠিয়েছে উত্তর কোরিয়া। ‘যুক্তরাষ্ট্রের চ্যালেঞ্জ ও হুমকির’ বিরুদ্ধে পুতিনের পাশে থেকে নিজেও সমৃদ্ধ হচ্ছে কিম। ফলে শক্তিমত্তা বাড়া এবং পশ্চিমাবিরোধী আরও আগ্রাসী হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়।

কোরীয় উপদ্বীপে দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানের মতো এশীয় মিত্ররাও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে; কারণ উত্তর কোরিয়ার মতো পরমাণু শক্তিধর সেখানে লাগাতার অস্ত্র পরীক্ষা চালিয়ে যাচ্ছে; অর্থাৎ ওই ধরনের কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হলে বাস্তবিক অর্থে পশ্চিমাদের অবস্থান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং অবস্থায় যাবে।

ভারতের সাথে পশ্চিমা সম্পর্কের মোড় ঘুরতে পারে

ভারত ইতিমধ্যেই কানাডার শিখ নেতা হরদীপ সিং নিজ্জার হত্যার ঘটনায় কানাডার সাথে দ্বন্দ্বে জড়িয়েছে। তার কিছুদিন পর যুক্তরাষ্ট্রও তাদের নাগরিক অপর এক শিখ নেতা হত্যার অভিযোগ তোলে ভারতের বিরুদ্ধে। এসব ঘটনায় পশ্চিমাদের দাপট ভেঙে ভারতকে দেখা গিয়েছে খুবই আক্রমণাত্মক ভূমিকায়। এসব সংকটে ভারতকে একরকম সমীহ করতেই দেখা গেছে পশ্চিমাদের। সরাসরি কানাডাকে সমর্থন দেওয়া থেকে বিরত ছিল কানাডার বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে। অন্যদিকে কানাডার যেকোনো পদক্ষেপকে ভেস্তে দেওয়ার ক্ষমতা দেখিয়েছে ভারত।

এছাড়াও এই বছরই প্রথম যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে গিয়ে ফিলিস্তিনের পক্ষে সমর্থন জানায় ভারত। ভারতের সাম্প্রতিক বিভিন্ন আচরণ এবং রুশ বাণিজ্যের নতুন গন্তব্য হওয়ার ঘটনা পাল্টে দিতে পারে ভারত-পশ্চিমা সম্পর্কও। এক্ষেত্রে বাণিজ্য, কুটনীতি, আধিপত্যের প্রতিযোগিতায় রাশিয়া এবং চীনের সাথে সম্পৃক্ততা আরও বাড়তে পারে দেশটির।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ