টরন্টো বিমানবন্দরে অবতরণের সময় উড়োজাহাজ উল্টে আহত ১৮

কানাডার টরন্টো পিয়ারসন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় যাত্রীবাহী একটি বিমান উল্টে গেছে। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনায় শিশুসহ কমপক্ষে ১৮ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে তিনজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন দেশটির জরুরি সেবা বিভাগের কর্মকর্তারা। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ডেল্টা এয়ারলাইন্সের ওই বিমানটি মিনিয়াপোলিস থেকে টরন্টো আসছিল। অবতরণকালে তাতে ৮০ জন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন। দুর্ঘটনার পর সবাইকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। অন্টারিও এয়ার অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস জানিয়েছে, দুর্ঘটনার পর তারা তিনটি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স হেলিকপ্টারসহ পাঁচটি অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে। উড়োজাহাজটি ঠিক কী কারণে উল্টে গেছে, সেটি এখনও স্পষ্ট নয়। তবে দুর্ঘটনার আগে টরন্টোতে ব্যাপক তুষারপাত হয়েছিল বলে জানা গেছে। যদিও দমকল বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ঘটনার সময় বিমানবন্দরের রানওয়ে শুষ্ক ছিল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দুর্ঘটনার বেশ কিছু ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে তুষারাবৃত টারমার্কে একটি উড়োজাহাজ উল্টে পড়ে আছে। ঘটনার পর ধারণ করা একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় যাত্রীরা উল্টে যাওয়া বিমানের ভেতর থেকে বেরিয়ে আসছেন। উড়োজাহাজটির অন্তত একটি পাখা ভেঙে গেছে বলেও ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে। ভিডিও ধারণ করা এক যাত্রী বলেছেন, আমরা সবেমাত্র টরন্টোয় অবতরণ করেছি। আমাদের বিমানটি বিধ্বস্ত হয়েছে, এটি উল্টে গেছে।

টরন্টো পিয়ারসন বিমানবন্দরের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ডেবোরা ফ্লিন্ট এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, বিমান উল্টে যাওয়ার ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ মারা যায়নি। বিমানের যাত্রীদের মধ্যে কানাডা ছাড়াও আরও অনেক দেশের নাগরিক ছিলেন বলেও জানান মিজ ফ্লিন্ট। রানওয়েতে বিমান উল্টে যাওয়ার ঘটনাকে ‘গুরুতর ঘটনা’ বলে মন্তব্য করেছেন কানাডার পরিবহনমন্ত্রী অনিতা আনন্দ। তিনি নিবিড়ভাবে বিষয়টিকে পর্যবেক্ষণ করছেন বলেও জানিয়েছেন ।

ঘটনার পর দ্রুত যাত্রীদের উদ্ধার করায় উদ্ধারকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন মিনেসোটার গভর্নর টিম ওয়ালজ। অন্যদিকে, কানাডার ট্রান্সপোর্টেশন সেফটি বোর্ড (টিএসবি) বলেছে যে, তারা দুর্ঘটনার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ ও মূল্যায়ন করার জন্য একটি দলকে ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছে। দুর্ঘটনার পর সাময়িক সময়ের জন্য বিমানবন্দরের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। পরে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অবশ্য স্বাভাবিক বিমান চলাচল শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

তবে তদন্তের জন্য বিমানবন্দরের দুটি রানওয়ে বেশ কয়েকদিন বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে বিমান ওঠা-নামায় কিছুটা বিলম্ব হতে পারে বলেও জানানো হয়েছে। উল্লেখ্য, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তর আমেরিকায় একের পর এক বিমান দুর্ঘটনা ঘটছে। এর মধ্যে জানুয়ারির শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে একটি সামরিক হেলিকপ্টারের সঙ্গে যাত্রীবাহী বিমানের সংঘর্ষে অন্তত ৬৭ জন প্রাণ হারান। এরপর ফিলাডেলফিয়ায় আরেকটি উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত হয়ে কমপক্ষে সাতজন নিহত হন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ