স্টাফ রিপোর্টার \ নোয়াখালী সদরে বিত্তবানদের প্রেমের ফাঁদে ফেলে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে প্রতারণা করে আসছিল একটি চক্র। অশ্লীল ভিডিও ফাঁস করে দেয়ার হুমকি দিয়ে তারা টাকা আদায় করত।
এই অভিযোগে দায়ের করা মামলায় দুই নারীকে শুক্রবার ভোরে মাইজদীর হাউজিং এলাকা গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাদের মোবাইল ফোন থেকে বেশ কয়েকজন ধন্যাট্য ব্যক্তির ভিডিও ফুটেজও উদ্ধার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নোয়াখালী পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের শ্রীপুর গ্রামের ২০ বছর বয়সী সানজিদা আক্তার জেরিন এবং চাটখিল পৌরসভার দশঘরিয়া হাজিবাড়ির মাহাবুব রব্বানীর স্ত্রী ৩৫ বছর বয়সী সুবর্ণা মাহাবুব।
মামলার অন্য আসামি হলেন নোয়াখালী পৌরসভার হরিনারায়ণপুর এলাকার কাজী কলোনির পাশের রিফাত হাউসের ভাড়াটিয়া মো. নাঈমের স্ত্রী ২৬ বছর বয়সী নুসরাত জাহান তিথি। মামলা দায়েরের পর থেকে সে পলাতক রয়েছে বলে জানা গেছে।
দুপুরে নোয়াখালীর মুখ্য বিচারিক হাকিম ইকবাল হোসাইনের আদালতে সানজিদা আক্তার জেরিন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। শুনানি শেষে বিচারক দুজনকেই কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শহীদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেছেন, নোয়াখালীর মাইজদী শহরে দীর্ঘদিন ধরে একটি চক্রের সদস্যরা প্রতিষ্ঠিত বিত্তশালী পুরুষদের টার্গেট করে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভিডিও চ্যাটিংয়ের মাধ্যমে প্রথমে ঘনিষ্ঠ হয়। এরপর নির্জন কক্ষে ডেকে অশ্লীল ভিডিও ধারণ করে। পরে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়া বা পারিবারের সদস্যদের কাছে পাঠিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে তারা টাকা আদায় করত। এমন প্রতারণার শিকার বলে দাবি করা এক ব্যক্তি তিন নারীকে আসামি করে সুধারাম মডেল থানায় মামলা করেছেন।
এসপি আরও জানান, এক ব্যক্তি প্রতিকার চেয়ে অভিযোগ দিলে পুলিশ অনুসন্ধানে নামে। অভিযোগের সত্যতা পেলে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা নেয়া হয়। ওই মামলায় দুই নারী প্রতারককে শহরের হাউজিং এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে মোবাইলে ধারণ করা বিভিন্ন জনের অশ্লীল ভিডিও জব্দ করা হয়েছে।
তিনি জানান, পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই নারী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তারা জানান, পাঁচ-ছয় বছর ধরে কয়েকজন মিলে এই প্রতারণা করে আসছেন। তারা নানা জনের সঙ্গে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ভিডিও ধারণ করে টাকা আদায় করে আসছিলেন।
দুই নারীকে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে নিলে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।