স্টাফ রিপোর্টার \ বিশেষ পুষ্টিসমৃদ্ধ নতুন ডিম বাজারজাত শুরু করেছে রেনাটা লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটির নিউট্রাসিউটিক্যালস বিভাগ ‘পূর্ণভা’ ডিম থেকে খাবারে ফোলেটের পরিমাণ বাড়াতে ‘ফোলেট ডিম’ নামের এই ডিম বাজারে এনেছে।
রোববার দুপুরে ঢাকা রিপোটার্স ইউনিটিতে ফোলেট ডিমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
এসময় রেনাটা কর্তৃপক্ষ জানায়, এই ফোলেট ডিমে সাধারণ ডিমের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি ফোলেট থাকে, যা প্রস্তাবিত খাদ্য চাহিদার (আরডিএ) ২০ শতাংশ পূরণ করে। এমনকি শিশু, কিশোর ও গর্ভবর্তী নারীদের জন্য বিশেষভাবে উপকারী এই ফোলেট (ভিটামিন বি-৯) লোহিত কণিকা তৈরিতে গঠন এবং বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।
অনুষ্ঠানে ফোলেট ডিমের ওপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব নিউট্রিশন অ্যান্ড ফুড সায়েন্সের পরিচালক অধ্যাপক ডা. খালেদা ইসলাম। এসময় তিনি বলেন, মুরগির ডিমে স্বাভাবিকভাবেই ফোলেট পাওয়া যায়। পূর্ণভার ফোলেট ডিমে সাধারণ ডিমের তুলনায় ৩৫ শতাংশ বেশি ফোলেট থাকে।
ফোলেট বিশেষভাবে শিশু, কিশোর ও গর্ভবতী নারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে লোহিত ও শ্বেত রক্ত কণিকা তৈরিতে সহায়তা করে, ডিএনএ এবং আরএনএ তৈরি করে। এমনকি এটি খাদ্যকে পরিপাকে সহায়তার মাধ্যমে শরীরে পুষ্টি উপাদানের জোগান দেয়।
ফলিক অ্যাসিডের ঘাটতি কার্ডিওভাসকুলার রোগের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এই ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে ফলিক অ্যাসিড আমাদের খাদ্যের একটি অপরিহার্য অংশ। প্রবন্ধে আরও বলা হয়, ফোলেট (ভিটামিন বি-৯) লোহিত রক্ত কণিকার গঠন এবং বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ। এই ডিম গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষ করে মেরুদণ্ড এবং মস্তিষ্কে জন্মগত ত্রুটিগুলো কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
ফোলেটের অভাবের ফলে ঠোঁট ও তালু ফাঁটা, হার্টের ত্রুটি, অঙ্গের ত্রুটি, প্রি-টার্ম ডেলিভারি, জন্মের সময় কম ওজন এবং গর্ভাবস্থায় গর্ভপাতের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সাধারণত ডিমে ফলিক অ্যাসিড থাকে কারণ এটি মুরগির খাদ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্তু মুরগির হজম প্রক্রিয়ার ফলে পাকস্থলীর অ্যাসিড ফোলেটকে হ্রাস করে, যার ফলে ডিমে ভিটামিন বি-৯ এর পরিমাণও কমে যায়। এই সমস্যা এড়াতে রেনেটা লিমিটেডের বিজ্ঞানীরা স্প্রে-কোটিং কৌশল ব্যবহার করে একটি পরিবর্তিত রিলিজ ফোলেট তৈরি করেছেন; যা মুরগির পেটে শক্তিশালী অ্যাসিডের উপস্থিতিতে অক্ষত থাকে। ফলে ডিমে স্বাভাবিকভাবেই বেশি ফোলেট পাওয়া যায়।
এই পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে রেনেটা লিমিটেড তাদের পোল্ট্রি রিসার্চ এবং ডেভেলপমেন্ট সুবিধা সংবলিত কাশর, ভালুকায় একটি ট্রায়াল পরিচালনা করেছিল। ১২টি মুরগির তিনটি দলে বিভক্ত করে মোট ৩৬টি মুরগি পরীক্ষায় ব্যবহার করা হয়েছিল। কন্ট্রোল গ্রুপের ডায়েটে একটি ফলিক অ্যাসিড অন্তর্ভুক্ত ছিল; যা সাধারণত মুরগির খাবারে ব্যবহৃত হয়। দুটি গ্রুপকে পরিবর্তিত রিলিজ ফলিক অ্যাসিড খাওয়ানো হয়েছিল। ফলাফল বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, গড়ে প্রতি ১০০ গ্রাম ফোলেট ডিমে ফোলেট থাকে ১৫২ এমসিজি।
অনুষ্ঠানে রেনাটা লিমিটেডের পক্ষ থেকে প্রতিনিধিত্ব করেন রেনাটার অ্যানিম্যাল হেলথ ডিভিশনের পরিচালক মো. সিরাজুল হক। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।