Search
Close this search box.

শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে গুজরাটকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন ধোনির চেন্নাই

স্পোর্টস রিপোর্টার- শেষ ওভারের নাটকীয়তায় গুজরাট টাইটান্সকে ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে ৫ উইকেটে হারাল চেন্নাই সুপার কিংস। এ জয়ে ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগের (আইপিএল) ১৬তম আসরে রেকর্ড পঞ্চমবার শিরোপা ঘরে তুললো মহেন্দ্র সিং ধোনির দল। আইপিএলে এতদিন ৫টি শিরোপা জিতে এককভাবে শীর্ষে ছিল মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স। চেন্নাই এর আগে ২০১০, ২০১১, ২০১৮ ও ২০২১ সালে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল।

পেন্ডুলামের মতো দুলতে থাকা ম্যাচটির ভাগ্য ১৩তম ওভারে অনেকটা নিজেদের করে নেয় চেন্নাই। শেষ ৩ ওভারে ৩৯ রান দরকার হলে মোহিত শর্মার সেই ওভারের প্রথম তিন বলে দুটি ছক্কা ও একটি চার হাঁকান আম্বাতি রায়ডু। তবে চতুর্থ বলেই তিনি আউট হন। পঞ্চম বলে অধিনায়ক অধিনায়ক ধোনি এসেই শূন্য রানে বিদায় নেন। শুরুতে রান দিলেও মোহিত ম্যাচ নিজেদের দিকে রাখেন।

দুই ওভারে চেন্নাইয়ের জয়ের জন্য দরকার ২২ রান। গুজরাটের ৫ উইকেট। তবে ১৪তম ওভারে মোহাম্মদ শামি কোনো বাউন্ডারি হজম না করে ৮ রান দেন। যেখানে শেষ ওভারে চেন্নাইয়ের জয়ের জন্য দরকার ১৪ রান।  এই ওভারেও মোহিত প্রথম চার বলে মাত্র ৩ রান দেন। ফলে জয়ের জন্য শেষ দুই বলে দরকার পড়ে ১০ রান। স্ট্রাইকে ছিলেন রবীন্দ্র জাদেজা। অবশেষে এই অলরাউন্ডার হিসেব মিলিয়ে ফেলেন। পঞ্চম বলে ছক্কা ও ষষ্ঠ বলে চার মেরে চেন্নাইকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে দেন।

বৃষ্টির বাগড়ায় নির্ধারিত দিন রোববার মাঠে গড়ায়নি আইপিএলের ফাইনাল। রিজার্ভ ডে থাকায় আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়ামে আজ সোমবার তাই খেলা হচ্ছে। তবে এদিনও হানা দেয় বৃষ্টি। প্রথমে ব্যাট করে ২১৪ রানের বিশাল সংগ্রহ তোলে গুজরাট। ২১৫ রানের বিশাল লক্ষে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের মাত্র ৩ বল মাঠে গড়ায়। এরপরই শুরু হয় বেরসিক বৃষ্টি। বৃষ্টির কারণে খেলা বন্ধ ছিল দীর্ঘক্ষণ।

বৃষ্টি থামার পর এবং পিচ ও আউটফিল্ড খেলার উপযোগী হওয়ার প্রেক্ষিতে খেলায় এসেছে নতুন সমীকরণ। ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে কাটা হয়েছে চেন্নাই ইনিংসের ৫ ওভার। ১৫ ওভারে মহেন্দ্র সিং ধোনির দলের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৭১ রান। খেলা শুরু হয় বাংলাদেশ সময় ১২টা ৪০ মিনিটে।

এই ম্যাচে মাঠে নেমেই একটি রেকর্ড গড়ে ফেলেন চেন্নাইয়ের অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি। আইপিএলে এখনো পর্যন্ত ২৫০ ম্যাচ খেলার মাইলফলক অর্জন করেছেন ভারতের সাবেক এই অধিনায়ক। এই মাইলফলকে পৌঁছানো প্রথম ক্রিকেটার ধোনি।

১৭১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় চেন্নাই। উদ্বোধনী জুটিতে রুতুরাজ গায়কোয়াড় ও ডেভন কনওয়ে ৬.৩ ওভারে ৭৪ রান তোলেন। তবে সপ্তম ওভারে ৩ বলের ব্যবধানে এই দুই ওপেনারকে বিদায় করে গুজরাটকে ম্যাচে ফেরান নূর আহমাদ। গায়কোয়াড় ১৬ বলে ৩টি চার ও একটি ছক্কায় ২৬ করে রশিদ খানকে ক্যাচ দেন। আর মোহিত শর্মাকে ক্যাচ দেওয়া কনওয়ে ২৫ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় ৪৭ রানে মাঠ ছাড়েন।

এরপর দারুণ বল করা মোহিত শর্মান শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন আজিঙ্কা রাহানে (১৩ বলে ২৭), রায়ডু (৮ বলে ১৯) ও ধোনি। তবে চেন্নাইয়ের জয়ে অনন্য ভূমিকা রাখেন ওয়ানডে ডাউনে নামা শিভাম ডুবে। তিনি ২১ বলে ২টি ছক্কায় ৩২ রানে অপরাজিত থাকেন। আর জাদেজার ৬ বলে একটি ছক্কায় ও একটি চারে ১৫ রানের ক্যামিও ইনিংসে শেষ বলে জয় নিশ্চিত করে হলুদ জার্সিধারীরা।

এর আগে এদিন ম্যাচে টস জিতে গুজরাটকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় চেন্নাই। ব্যাটিংয়ে নেমেই চেন্নাইয়ের বোলারদের ওপর ঝড় বইয়ে দেন গুজরাটের দুই ওপেনার শুভমান গিল ও ঋদ্ধিমান সাহা। প্রথম দুই ওভারে মাত্র আট রান আসলেও ঝড় শুরু করেন তৃতীয় ওভার থেকে। চাহারের করা তৃতীয় ওভার থেকে আসে ১৬ রান। চতুর্থ ওভারে ১৪, পঞ্চম ওভারে ১১ রান আর পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আসে ১৩ রান।

তবে রবীন্দ্র জাদেজার করা সপ্তম ওভারের শেষ বলে ফিরতে হয় আসরজুড়ে আগুনে ফর্মে থাকা শুভমান গিলকে। দলীয় ৬৭ রানের মাথায় ধোনির ক্ষিপ্র স্ট্যাম্পিংয়ে অর্ধশতক তোলার আগেই ড্রেসিংরুমের পথ ধরেন গিল। যাওয়ার আগে ২০ বলে ৭ চারে ৩৯ রান করেন গুজরাটের এই ওপেনার। যদিও দ্বিতীয় ওভারেই ফিরতে পারতেন তিনি। তুষার দেশপান্ডের করা সেই ওভারে গিলের ক্যাচ ফেলেন দীপক চাহার।

গিলের আউটের পর গুজরাটের রান তোলার গতি ধীর হয়ে আসে। দলীয় ১০০ রান আসে ১১ ওভার ১ বলে। তবে দলীয় শতরান পূর্ণ হওয়ার পর খোলস ছেড়ে বের হওয়া শুরু করেন ওয়ান ডাউনে নামা সাই সুদর্শন। একের পর এক বাউন্ডারি হাঁকাতে থাকেন তিনি।

হাফ সেঞ্চুরি করে ১৪তম ওভারের শেষ বলে চাহারের শিকারে পরিণত হন সাহা। যাওয়ার আগে ৩৯ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কায় করেন ৫৪ রান। চারে ব্যাট করতে নামেন অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া।

অধিনায়ককে ক্রিজে পেয়ে ব্যাটিং তেজ যেন আরও বেড়ে যায় সুদর্শনের। ১৫তম ওভারে মহেশ থিকসানার বল ২ বার সীমানার ওপারে আছড়ে ফেলেন। দেশপান্ডের করা ১৭তম ওভারে একটি ছক্কার সঙ্গে মারেন ৩টি চার। ৩৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করা সুদর্শন শেষ পর্যন্ত আউট হন ৯৬ রান করে। ৪৭ বলের ইনিংসি ৮টি চার ৬টি ছক্কায় সাজান তিনি। পান্ডিয়া অপরাজিত ছিলেন ২১ রানে। শেষ পর্যন্ত গুজরাটের ইনিংস থামে ২১৪ রানে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ