২০০ বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি মনীষীদের নির্বাচিত রচনা ‘বাঙালির চিন্তামূলক রচনা সংগ্রহ’-এর ৫৪ খণ্ডের মোড়ক উন্মোচন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের স্বপ্নদ্রষ্টা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদসহ বিশিষ্টজনরা। ১৬টি বিষয়ে ২০৮ খণ্ডে প্রায় ৭৪ হাজার পৃষ্ঠার এই রচনা সংগ্রহ প্রকাশিত হচ্ছে। এর প্রধান সম্পাদক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ।
বিভিন্ন বিষয়ে বাঙালি মনীষীদের নির্বাচিত রচনাবলি ভবিষ্যতের পাঠক, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, গবেষকসহ সবার কাছে সহজলভ্য করার জন্য বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের পক্ষ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিহাস, দর্শন, ধর্ম, শিল্প, সাহিত্য, বিজ্ঞান, পরিবেশ, চলচ্চিত্র, সংগীত, রাজনীতি, ভাষা, সংস্কৃতি, নারী, সমাজ, অর্থনীতি ও শিক্ষা—এই ১৬টি বিষয় সংগ্রহে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। গতকাল ইতিহাস চিন্তা, দর্শন চিন্তা, নারী চিন্তা, বিজ্ঞান চিন্তা, সংস্কৃতি চিন্তা—এই পাঁচটি বিষয়ের সংকলনের ৫৪ খণ্ডের মোড়ক উন্মোচন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিশিষ্টজনদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক, ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, কৃষি ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ প্রমুখ।
প্রকল্পটি সম্পর্কে গ্রন্থমালা সম্পাদক এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সভাপতি আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, ‘প্রকল্পটি ২০০০ সালে শুরু হয়েছিল। প্রকল্পের বেশির ভাগ প্রবন্ধই ২০০০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে সংগৃহীত। পরেও কিছু লেখা সংযোজিত হয়েছে। বাঙালির চিন্তামূলক রচনা সংগ্রহের লেখাগুলো দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন লাইব্রেরি ও ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে ফটোকপির মাধ্যমে আনা হয়েছে।
অসাবধানতাবশত কিছু বইয়ের প্রিন্টার্স লাইন ফটোকপি করা সম্ভব না হওয়ায় সেসব লেখার সংগ্রহসূত্র উল্লেখ করা যায়নি। ভবিষ্যতে ত্রুটিগুলো দূর করার চেষ্টা করা হবে।’আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ আরো বলেন, ‘গত ২০০ বছর বাঙালি জাতির জীবনে এক অভাবনীয় বিকাশ ও সমৃদ্ধির যুগ বহমান ছিল। এই সময় বাঙালির সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক জীবনের বহুতর উত্থান-পতনের পাশাপাশি তার চিন্তা, ভাবনা ও মননজগতেও দেখা দিয়েছিল এক অনন্য সাধারণ প্রাচুর্যের পর্ব। বাঙালি মনীষীরা জীবন ও জগতের বিচিত্র বিষয় নিয়ে যে শুধু উন্নত ও ঋদ্ধ চিন্তা করেছেন তা-ই নয়, বৈচিত্র্য ও গভীরতায় উজ্জ্বল সেই চিন্তাসম্পদের ফসল দিয়ে এই জাতির মনন ভাণ্ডারকে সমৃদ্ধও করেছেন।
গত ২০০ বছরে প্রকাশিত বিভিন্ন পত্রপত্রিকা, সাময়িকী ও বইয়ে তাঁদের সেসব ঋদ্ধিধর্মী চিন্তা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে, যা আমাদের জাতির জাগতিক ও আত্মিক দিকনির্দেশনার জন্যে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।