মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) তাড়া খেয়ে পালিয়ে ভারতে ঢুকছে দেশটির জান্তাবাহিনীর শত শত সেনা। সীমান্ত অতিক্রম করে এত বেশি সেনা আসার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে কেন্দ্রীয় সরকারকে অভিহিত করেছে মিজোরামের প্রাদেশিক সরকার। তারা আহ্বান জানিয়েছে, মিয়ানমারের এসব সেনাকে দ্রুত দেশে ফেরাতে যেন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। খবর-এনডিটিভির।
এক প্রতিবেদনে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমটি বলেছে, গত তিন মাসে তীব্র সংঘর্ষের মধ্যে মিয়ানমারের প্রায় ৬০০ সেনা ভারতে প্রবেশ করেছে। সরকারি সূত্র বলেছে, পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মিরা সেনাদের ক্যাম্প দখলে নেওয়ার পর তারা মিজোরামের লংটলাই জেলায় আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের আসাম রাইফেলস ক্যাম্পে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, মিয়ানমারের বিদ্রোহী বাহিনী ও জান্তা-বাহিনীর মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে এবং গত দুই দিনে মিয়ানমার ছেড়ে আরও সেনা সদস্য মিজোরামে প্রবেশ করেছে। গত বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে দেশটির ২৭৬ জন সৈন্য তাদের অস্ত্র ও গোলাবারুদ নিয়ে মিজোরাম-মিয়ানমার-বাংলাদেশ সীমান্ত ট্রাইজেকশনের বান্দুকবাঙ্গা গ্রামে পৌঁছেছে বলে বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে।
সূত্রগুলোর বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলছে, পশ্চিম মিয়ানমারের রাখাইনে জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) যোদ্ধারা সেনাবাহিনীর শিবিরগুলো দখল করার পরে সেনা সদস্যরা ভারতে আশ্রয় নেয়।
এমন পরিস্থিতি মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের মধ্যে জরুরি আলোচনার তাড়না দিয়েছে। সরকারি সূত্র বলছে, মিজোরাম রাজ্যের অভ্যন্তরে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের সেনা সদস্যদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা ও এই অঞ্চলের স্থিতিশীলতার ওপর এটির প্রভাব সম্পর্কে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে আবেদনটি এসেছে।
পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনের পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রী লালদুহোমা চলমান পরিস্থিতির ওপর আলোকপাত করে তিনি বলেন, মানুষ মিয়ানমার থেকে আমাদের দেশে আশ্রয়ের জন্য পালিয়ে আসছে এবং আমরা মানবিক কারণে তাদের সাহায্য করছি। মিয়ানমারের সৈন্যরা আসছে, আশ্রয় খুঁজছে। আগে আমরা তাদের আকাশপথে ফেরত পাঠাতাম। প্রায় ৪৫০ সেনা সদস্যকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেন, মিয়ানমারের সঙ্গে ভারতের সীমান্ত বাংলাদেশের সীমান্তের মতো সুরক্ষিত হবে। জাতিগত সংঘর্ষ থেকে বাঁচতে মিয়ানমারের বিপুল সংখ্যক সৈন্য ভারতে পালিয়ে যাওয়ার মধ্যেই শনিবার (২০ জানুয়ারি) আসাম পুলিশ কমান্ডোদের পাসিং আউট প্যারেডে এ ঘোষণা দেন তিনি।
অমিত শাহ বলেন, ভারতে অবাধ চলাচল সীমিত করার জন্য মিয়ানমার সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হবে। যার মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে ফ্রি মুভমেন্ট রেজিম (এফএমআর) বাতিল করা হবে।