গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে আদা-রসুন-পেঁয়াজের। রাজধানীর বাজারগুলোতে এখন দেশি পেঁয়াজের কেজি শতক ছুঁয়েছে। যা এক সপ্তাহ আগেও ৮০ টাকা ছিল। সব বাজারে রসুনের দাম কেজিপ্রতি ২০ টাকা বেড়েছে। তবে সবচেয়ে বড় লাফ দিয়েছে আদার দাম। এ পণ্যটি কেজিতে ৮০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায়।
কোরবানির ঈদ ঘিরে প্রতিবছরই বাজারে এসব কাঁচাপণ্য ও মসলার চাহিদা বাড়ে। এ পরিস্থিতিতে বাজারে গিয়ে কোরবানির ঈদের প্রয়োজনীয় মসলা কিনতে হিমশিম খাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তরা নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে নাজেহাল।
সরেজমিনে রাজধানীর মতিঝিল, মগবাজার, মালিবাগ ও কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। কিছু দোকানে বাছাই করা পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হচ্ছে।
বিক্রেতারা বলছেন, ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির সুযোগ কম। কারণ, ভারত পেঁয়াজের ন্যূনতম রপ্তানি মূল্য ৫৫০ ডলার নির্ধারণ করে দিয়েছে। ওই পেঁয়াজ আমদানি করলে শুল্ককরসহ দেশে আনতে প্রায় কেজিপ্রতি ৭০ টাকা খরচ হয়। যে কারণে ভারতের পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে না। এতে বাজার শুধু দেশি পেঁয়াজের ওপর নির্ভর করেই চলছে।
পেঁয়াজ বিক্রেতা শরিফুল ইসলাম বলেন, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে বাজারে পেঁয়াজের বাড়তি চাহিদা রয়েছে। যে কারণে প্রতিদিন দু-এক টাকা করে পাইকারি দাম বাড়ছে। শুক্র-শনিবার এ দাম কোথায় গিয়ে ঠেকবে সেটা বলা যাচ্ছে না।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বাজারদরের তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে দেশে পেঁয়াজের দাম ৬৪ শতাংশ, রসুনের দাম ৬২ শতাংশ বেড়েছে। তবে গত বছর এসময়ে আদার দামও বেশি ছিল। যে কারণে এ পণ্যটির দাম বেড়েছে ২৩ শতাংশ।
কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা নুর ইসলাম জানান, প্রতি বছরই কোরবানির ঈদের আগে পেঁয়াজ-রসুনের দাম বাড়ে। তবে যে কোনো স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় এসব পণ্যের দাম এখন প্রায় তিনগুণ। সরবরাহ স্বাভাবিক না হলে আগামী কয়েক দিনে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়তে পারে।
তথ্য বলছে, বাংলাদেশে পেঁয়াজ, রসুন ও আদা এ তিন পণ্যের উৎপাদন চাহিদার তুলনায় কম। যে কারণে পেঁয়াজের ক্ষেত্রে ভারত ও বাকি দুটি পণ্যের জন্য চীনের ওপর নির্ভর করতে হয়। সেসব দেশ থেকে আমদানি ব্যাহত হলে বাজারে এসব পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ে। এছাড়া এসময়ে চাহিদা বাড়ায় এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীর মধ্যে অতি মুনাফার প্রবণতাও রয়েছে।
পেঁয়াজ আমদানিকারক আবদুল মাজেদ বলেন, ভারতেও পেঁয়াজের দাম অনেক বেশি। দেশটিতে গত দুই সপ্তাহে পেঁয়াজের দাম ৩০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। ঈদের আগে চাহিদা বাড়ায় সেদেশেও পেঁয়াজের মূল্যবৃদ্ধি ঘটেছে। ফলে এখন আমদানি করে পুষানো সম্ভব নয়।
আদা-রসুনের চড়া দাম নিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। বিশেষ করে চীনে আদা-রসুনের মৌসুম শেষ। তাই পণ্যটির দাম একটু বেশি।