স্টাফ রিপোর্টার :
ওয়ালটন ‘আমাদের পণ্যে’ আমাদের পণ্য বলে আমাদের সাথেই প্রতারণা করে গেছে এক যুগ। দেশীয় পণ্যের নামে নিম্ন মানের চায়না পণ্য বিক্রি করেছে দেশের মানুষের কাছে । ওয়ালটন এর ব্যাবসায়ী ফাঁদে পরে আজ পথে বসেছে অনেক ডিলার। ডিলারদের সাথে এারা বিভিন্ন ভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণা চালিয়ে যায় ।
ডিলারদের অভিযোগ অনুযায়ী, ওয়ালটন ও মার্সেল কোম্পানি পণ্য সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দিয়ে তাদের কাছ থেকে নগদ অর্থ সংগ্রহ করলেও পণ্য সরবরাহে নানা অনিয়ম করেছে। ডিলারদের পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে ৩৫-৪০ শতাংশ কমিশনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও, বাস্তবে তারা পেয়েছেন মাত্র ২০-২৪ শতাংশ। তাছাড়া, ডিজিটাল ক্যাম্পেইন, বিদেশ ভ্রমণ, গাড়ি, এবং রেজিস্ট্রেশন অফারের মতো বিভিন্ন প্রণোদনার কথা বলা হলেও সেগুলো বাস্তবায়িত হয়নি। বরং কোম্পানি তাদের নিজস্ব শোরুম তৈরি করে ডিলারদের বাজারে ব্যবসা করার সুযোগ সংকুচিত করেছে।
ডিলাররা অভিযোগ তুললে তাদেরকে নানা ভাবে ছলোনা করে চালিয়ে যেতে থাকে ব্যবসা |
এছাড়া এক ভুক্তভুগীর থেকে জানতে পেরেছি, পণ্যে না কিনে পণ্যের টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে তাদের । এ বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওয়ালটনের প্রতিনিধিরা ডিলারদের কোড ব্যবহার করে তাদের নামে পণ্য বিক্রি করে, ফলে তাদেরকে পণ্য না কিনেও টাকা পরিশেধি করতে হয়। টাকা দিতে না চাইলে তাদের নিয়ে যাওয়া হতো টর্চার সেলে । আরো জানা যার ভুয়া রিসিট তৈরি কমেও তাদের থেকে টাকা আদায় করে ওয়ালটন। ব্যবসা টিরিতে রাখতে ভিলাররা বংক লোল করে তদের ঢাকা পরিশোধ করে বলে জানিয়েছে অনেক ভুক্তভুগী |
ব্যাবসা ছেড়ে দিলেন না কেনো এ প্রশ্নে, এক ভক্তভুুগী বলে, তারা নকল রশিদ, অতিরিক্ত টাকা পরিশোধ, পণ্যের কমিশন, এসব বিষয় এ অভিযোপ তুললে ওায়ালটন কম্পানী তাদেরকে আইনি ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে রাখে ।
একজন ভুক্তভুগী বলে তাকে আয়নাঘর দেখিয়ে আনা হয়েছে। এক কথায় ভিলরদের জিম্মি করে চালিয়ে গেছে ব্যবসা।
সূত্রে জানা যায় ওয়ালটন অফিসে রয়েছে টর্চার সেল। কেউ তাদের টাকা দিতে ব্যর্থ হলে নিয়ে যাওয়া হতো সেখানে । নানা ভয় ভীতি দেখিয়ে আদায় করা হত অর্থ ।
ওয়ালটনের চেয়ারম্যান এর কাছে অভিযোগ তুলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যারনি বলে জানিয়েছেন ভুক্তভুগীরা |
বাংলাদেশের অন্যতম ইলেকট্রনিক্স পণ্য প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন এবং তাদের সহযোগী ব্র্যান্ড মার্সেলের বিরুদ্ধে ডিলারদের অর্থনৈতিক প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার প্রতিবাদে সারাদেশে চলছে ডিলারদের আন্দোলন।
১৪টি জেলার ডিলাররা দাবি করেছেন, কোম্পানি তাদের সঙ্গে মিথ্যা প্রতিশ্রুতি, অসম্পূর্ণ কমিশন প্রদান এবং বাজার দখলের মতো কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা কোম্পানির কাছে তিপূরণসহ ১১ দফা দাবি বাস্তবায়নের আলটিমেটাম দিয়েছে। দাবি পূরণ না হলে, তারা সারা দেশে বৃহৎ আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে যে, কোম্পানি ডিলারদের লেজারে ডেবিট এডজাস্টমেন্টের নামে অতিরিক্ত টাকা সংযোজন করেছে, যা ডিলারদের আর্থিক চাপে ফেলে দিয়েছে। জোরপূর্বক ব্ল্যাংক চেক এবং স্ট্যাম্প আদায় করে তাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে। এসব চেক কোম্পানি তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া, কিছু ডিলারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করে তাদের ব্যবসার পরিবেশ ধ্বংস করা হয়েছে।
ডিলারদের মধ্যে থেকে অভিযোগ উঠেছে, ২০১৯ সালে ওয়ালটন কোম্পানি ২০ লাখ পিস ফ্রিজ বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। তবে, লক্ষ্য পূরণের জন্য ডিলারদের না জানিয়ে তাদের কোটার পণ্য তুলে নিয়ে অন্যত্র বিক্রি করা হয়। ফলে, ডিলাররা ব্যাপক আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েন। এছাড়া, বিভিন্ন অফারের আওতায় যে বোনাস এবং অন্যান্য সুবিধা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তা থেকে ডিলাররা প্রায় পুরোপুরি বঞ্চিত হয়েছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ডিলাররা কোম্পানির বিরুদ্ধে ১১ দফা দাবি উত্থাপন করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হল: প্রতিশ্রুত কমিশন এবং বকেয়া টাকার পরিশোধ। ডেবিট এডজাস্টমেন্টের নামে বাড়তি টাকা ফেরত। ডিলারদের বাজার দখল বন্ধ এবং তাদের কাছে থেকে নেওয়া ব্ল্যাংক চেক ফেরত। ক্ষতিগ্রস্ত পণ্য প্রতিস্থাপন এবং ব্যবসায়ীদের পুনর্বাসনের সুযোগ।
ডিলারদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যদি ৭ দিনের মধ্যে এসব দাবি পূরণ না হয়, তাহলে তারা সারা দেশে ইলেকট্রনিক্স ব্যবসায়ীদের একত্রিত করে কঠোর কর্মসূচি গ্রহণ করবেন। এই কর্মসূচি ইলেকট্রনিক্স বাজারে বড় ধরনের অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।