মলয় বিকাশ দেবনাথ ॥ চা শ্রমিকদের নতুন মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চা-বাগান মালিকপক্ষের সংগঠন বাংলাদেশ টি অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) বৈঠক শেষ হয়েছে।
বিকেল ৪টার পর গণভবনে এ বৈঠক শুরু হয়। এতে দেশের বৃহৎ ১৩ চা বাগান মালিক উপস্থিত ছিলেন।
১৭০ টাকা মজুরি ছাড়া আনুপাতিক হারে অন্যান্য ভাতাও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস শনিবার বিকেলে এ তথ্য জানান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চা-শ্রমিকদের বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে মূখ্য সচিব জানান, অন্যান্য সুবিধা মিলিয়ে দৈনিক ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা পাবেন চা শ্রমিকরা। রোববার থেকে শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে ৯ আগস্ট থেকে দুই ঘণ্টা করে কর্মবিরতি এবং পরে ১৩ আগস্ট অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছেন চা শ্রমিকরা। প্রশাসন থেকে শুরু করে চা শ্রমিক সংগঠনের নেতারা শ্রমিকদের কাজে যোগদান করতে নানা কৌশল ও বৈঠক করলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা ছাড়া কাজে যোগদান করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
এবার ভরা মৌসুমে মজুরি বৃদ্ধির টানা ১৭ দিনের শ্রমিক আন্দোলনের ফলে শত শত কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে চা-শিল্পে। টানা শ্রমিক আন্দোলনের প্রথম দিকে সব চা-বাগানে উত্তোলন করা কাঁচা চায়ের পাতা প্রক্রিয়াজাত করতে না পারায় পচে ও শুকিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এ ছাড়া চা প্ল্যান্টেশন এলাকা থেকে কচি চা-পাতা তুলতে না পারায় সেগুলোও এক থেকে দেড় ফুট লম্বা হয়ে গেছে। এ পাতা চায়ের জন্য প্রক্রিয়াজাত করা সম্ভব নয়।
এদিকে আন্দোলনের কারণে শ্রমিকদের ঘরে চুলা আর জ্বলছে না। বাগান কর্তৃপক্ষ বর্তমান হারে রেশন দিতে চাইলেও আন্দোলনরত শ্রমিকরা রেশন গ্রহণ করেননি। এমনকি দৈনিক মজুরির টাকাও তারা নিচ্ছেন না। ফলে অনেক পরিবারে খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে। খেয়ে না খেয়ে আন্দোলন করছেন শ্রমিকরা।
ড. আহমদ কায়কাউস জানান, শিগগিরই ভিডিও কনফারেন্সে চা-শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী।