স্টাফ রিপোর্টার – উজানের পাহাড়ি ঢল ও টানা ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় তিস্তার পানি ১০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গত কয়েকদিনের ঘন বৃষ্টিপাত ও ভারতের গজলডোবা ব্যারাজে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া তিস্তা নদীতে পানি বেড়েছে। শুক্রবার তিস্তা নদীর ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এদিকে, তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমা উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় নদীর তীরবর্তী এলাকায় ও নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। এতে জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার সানিয়াজান,গড্ডিমারী, সিংগীমারী, সিন্দুর্না,পাটিকাপাড়া ও ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নে নদীর তীরবর্তী এলাকার পরিবারগুলো পানি বন্দি হয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ ছাড়া পানি নিয়ন্ত্রণ করতে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪ টি জলকপাট খুলে দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডালিয়া পয়েন্টের নির্বাহী প্রকৌশলী আসফা-উদ-দৌল্লা বলেন, তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। রাতে পানি আরও বাড়তে পারে। তিস্তা ব্যারেজের ৪৪ টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে তিস্তাপাড়ের মানুষকে সর্তক করার পাশাপাশি সকল প্রকার দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।
লালমনিরহাটের তিস্তা নদীতে উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে পানি বেড়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নিম্নাঞ্চল ও নদীর তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা দেখা দিয়েছে। শুক্রবারও ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপরে পানি প্রবাহের রেকর্ড করা হয়েছে।
তবে বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপরে পানি প্রবাহিত হলেও আজ শুক্রবার সকালে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপরে ও পরে ১০ সেন্টিমিটার ওপরে রেকর্ড করা হয়। ফলে ভাটি এলাকায় ধীরে ধীরে পানি বৃদ্ধি পেয়ে নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। বন্যা মোকাবিলায় নিজেদের সবটুকু গুছিয়ে নিচ্ছেন নদী পারের মানুষ।
চলতি বছর ৫ দফা বন্যায় জেলার পাটগ্রাম, হাতিবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার তিস্তা নদীর তীরবর্তী অঞ্চলে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পানিবন্দি দোকানে ক্রেতা নেই। তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান ইউনিয়নের শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রমনীগঞ্জ, সিঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, সদর উপজেলার কালমাটি, ফলিমারীর চর, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, বড়বাড়ি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) জি,আর সারোয়ার জানান, পানিবন্দি পরিবারগুলোর সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। দু’একদিনের মধ্যে এসব পরিবারের বাড়ি থেকে পানি নেমে যাবে। বিদ্যালয়ের মাঠে পানি, শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত। লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে প্রবাহিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমরা জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছি।’