স্টাফ রিপোর্টার – বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ। উদ্বেগের সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি লুইস গুয়েন। শনিবার গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার সময় তিনি এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সীমান্ত পরিস্থিতি রাখাইন থেকে উদ্বিগ্নের। জাতিসংঘ প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করছে, মিয়ানমারের মিশনের সাথেও নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, সত্যি বলতে পুরো ঘটনা স্পষ্ট নয়। যদিও ঘটনাস্থলে দেখবার অনুমতি নেই। তাই উভয় দেশকে শান্তি বজায় রাখতে অনুরোধ করেন লুইস গুয়েন।
এর আগে শুক্রবার বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুমের সীমান্তে ৫টি মর্টারশেল হামলায় অন্তত একজন নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ৪ জন। এ ঘটনার পর ঘুমধুম সীমান্তে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। সন্ধ্যার পর থেকে মিয়ানমার অভ্যন্তরে ব্যাপক গোলাগুলি শব্দ শোনা যায়। রাত ৮টার দিকে ঘুমধুম ঘোনার পাড়া সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পরপর ৫টি মর্টারশেল এসে বিস্ফোরণ হয়েছে। এতে ঘটনাস্থলে একজন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন শূণ্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গা কমিউনিটির নেতা দিল মোহাম্মদ।
তিনি জানান, সন্ধ্যার পর থেকে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে গোলাগুলি, মর্টারশেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। রাত ৮টার দিকে শূন্যরেখায় বসবাসকারী রোহিঙ্গাদের ক্যাম্পে এসে পড়ে ৩টি মর্টারশেল। ক্যাম্পের নিকটবর্তী এলাকায় এসে পড়ে আরও ২টি মর্টারশেল। ৫টি মর্টারশেল বিস্ফোরণ হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এতে ঘটনাস্থলে একজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অনেকেই।
এদিকে মিয়ানমারের কাছে অস্ত্র বিক্রি বন্ধ করতে জাতিসংঘ সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার দপ্তর। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জাতিসংঘ মানবাধিকার দপ্তর এই আহ্বান জানায়। জনগণকে নিপীড়ন ও ভয় দেখিয়ে শাসন করা মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর কাছে রাজস্ব ও অস্ত্র পৌঁছানো থামাতে বিশ্বের দেশগুলোর আরও বেশি কিছু করা উচিত বলে মন্তব্য করে সংস্থাটি।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে এক অভ্যুত্থানে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করার পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে অস্থিরতা বিরাজ করছে। সামরিক বাহিনী গণতন্ত্রপন্থি প্রতিরোধ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে লড়াই করছে আর সামরিক শাসন বিরোধী হাজার হাজার লোককে গ্রেপ্তার করে চলছে। একই সময় অভ্যন্তরীণ অশান্তি ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞায় চাপের মুখে পড়া অর্থনীতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছে দেশটির সামরিক শাসকরা।