স্টাফ রিপোর্টার – বাংলাদেশে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান বুধবার বুধবার ঢাকার একটি হোটেলে ‘মিট দ্য অ্যাম্বাসাডর’ অনুষ্ঠানে বলেন, বাংলাদেশে নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠু কি না, তা বাংলাদেশিরাই ঠিক করবে। এখানে বিদেশিদের কিছু করার নেই। নির্বাচন নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে মতপার্থক্য নিরসনে আলোচনা করতে পারে। তিনি নিজে বিএনপির সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাদের অভিযোগ শুনেছেন।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে তুরস্কের বিরোধিতা বিষয়ে রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান জানান, তুরস্কের রাষ্ট্রদূত হিসেবে তাকে সব সময় গণমাধ্যমকর্মীদের এ নিয়ে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। তিনি বিষয়টি আবারও স্পষ্ট করতে চান। ভুল-বোঝাবুঝি থেকেই সেই বিরোধিতা হয়েছিল। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে আবারও আস্থা ফিরে এসেছে।
রাষ্ট্রদূত বলেন, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের বিরুদ্ধে যখন অভ্যুত্থানচেষ্টা হয়েছিল তখন প্রথম ব্যক্তি হিসেবে এর নিন্দা জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নতুন করে রোহিঙ্গা সংকট শুরুর পর তুরস্কের ফার্স্ট লেডি বাংলাদেশে এসেছিলেন। আস্থা না থাকলে এ ধরনের সফর হতো না।
যুদ্ধাপরাধের বিচার ও মৃত্যুদণ্ড প্রসঙ্গে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত তার দেশের উদাহরণ দিয়ে বলেন, তুরস্ক সব ধরনের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে। তুরস্কে অভ্যুত্থানের পর প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রীকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছিল। এর আগে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। ক্ষমতায় থাকলে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার প্রবণতা ছিল।
আগামী নির্বাচন নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগ শুধু ক্ষমতাসীন দল নয়, অন্যান্য দল ও জনগণের প্রত্যাশাও পূরণ করবে, এমন প্রত্যাশার কথাও জানিয়েছেন তুরস্কের রাষ্ট্রদূত মোস্তফা ওসমান তুরান।
নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে বাংলাদেশ-তুরস্ক সম্পর্কে কী প্রভাব পড়বে জানতে চাইলে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বলেন, আমাদের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক কোনো নির্বাচন, সরকারের ওপর নির্ভর করে না। নির্বাচন বাংলাদেশের জনগণের বিষয়। তুরস্ক বাংলাদেশের জনগণের পাশে আছে। ভালো সময়েও আছে, খারাপ সময়েও আছে।
অনুষ্ঠানে প্রশ্নোত্তর পর্বে তুরস্কের রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি ও কোনো বলয়ের অংশ না হওয়ার নীতি এবং চর্চার প্রশংসা করেন। তিনি আশা করেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সঙ্গে আরো আলাপ-আলোচনা করবে এবং পরস্পরকে সুযোগ দেবে।