অমর একুশে বইমেলা শুরু আগামীকাল, উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী
স্টাফ রিপোর্টার – অমর একুশে বইমেলা শুরু হচ্ছে আগামীকাল। মেলার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা মহামারির কারণে বিগত দুই বছর ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন থেকে মেলা শুরু হতে পারেনি। সামাজিক দূরত্বের মতো কোভিড-১৯ – এর নিয়মগুলোর বাধ্যবাধকতা এখন না থাকায় এ বছরের মেলা ঐতিহ্যবাহী ১ ফেব্রুয়ারি তারিখেই শুরু হতে যাচ্ছে।
২০২০ সালের পর প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী সশরীরে মেলার উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার-২০২২ প্রদান করবেন এবং সাতটি নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করবেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। মেলা চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। বইমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান মিলে ১১ লাখ বর্গফুট জায়গায় মেলা হবে।
এবারের বইমেলার জন্য ৬০১টি প্রতিষ্ঠানকে ৯০১টি ইউনিট (স্টল) বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, যা গত বছর ছিল ৫৩৪টি প্রতিষ্ঠানের জন্য ৭৭৬টি স্টল। বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১১২টি প্রতিষ্ঠানকে ১৬৫টি স্টল এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৪৮৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৭৩৬টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এবার বইমেলার প্রতিপাদ্য ‘পড়ো বই গড়ো দেশ, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশ’।
মেলায় প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং ছুটির দিনে সকাল ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত চারটি প্রবেশপথ ও চারটি প্রস্থান পথ দিয়ে দর্শক, ক্রেতা ও পাঠকেরা চলাচল করতে পারবেন। তবে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে দর্শনার্থীরা সকাল ৮টায় মেলায় প্রবেশ করতে পারবেন এবং রাত সাড়ে ৮টার পর সব প্রবেশপথ বন্ধ থাকবে।
বাংলা একাডেমির তিনটি প্যাভিলিয়ন ও শিশু-কিশোর উপযোগী প্রকাশনা বিপণনের জন্য একটি স্টল থাকবে বলে জানিয়েছে আয়োজক কর্তৃপক্ষ। প্রতি শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত চলবে ‘শিশুপ্রহর’।
এবার লিটল ম্যাগাজিন চত্বর বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ থেকে স্থানান্তর করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের গ্রন্থ-উন্মোচন অংশের কাছাকাছি জায়গায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এবার লিটল ম্যাগাজিনের জন্য ১৫৩টি স্টল ও ৫টি উন্মুক্ত স্থান বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবারের মতো এবারের বইমেলাতেও চিত্তরঞ্জন সাহা স্মৃতি পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার, রোকনুজ্জামান খান দাদাভাই স্মৃতি পুরস্কার ও কাইয়ুম চৌধুরী স্মৃতি পুরস্কার দেওয়া হবে। এসব পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা হবে মেলার শেষ দিন।
গতবারের ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের স্থানটি এবারের মেলাতেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তবে এই জায়গাটি এবার নামাজের জন্য নির্দিষ্ট স্থান, শৌচাগার ও খাবারের দোকান দেওয়ার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রতিবারের মতো এবারের মেলায় মোবাইলে আর্থিক সেবাদাতা (এমএফএস) প্রতিষ্ঠান বিকাশের পক্ষ থেকে বই কেনায় ছাড় থাকবে।
এবারের মেলায় নতুন পুরোনো ১৩৬টি বই প্রকাশ করবে বাংলা একাডেমি। প্রথম দিন ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী: পাঠ বিশ্লেষণ’, ‘শেখ মুজিবুর রহমান রচনাবলী’, ‘আমার দেখা নয়া চীন: পাঠ বিশ্লেষণ’, ‘কারাগারের রোজনামচা: পাঠ বিশ্লেষণ’ এবং প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হাসান আজিজুল হকের ‘সাবিত্রী উপাখ্যান’ বইয়ের ইংরেজি অনুবাদগ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের আত্মজীবনী ‘আমার জীবন, আমার রাজনীতি’ বইটির মোড়ক উন্মোচন হবে।
অমর একুশে বইমেলা কমিটির সম্পাদক কে এম মুজাহিদুল ইসলাম সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রকাশক ও মেলাপ্রেমীদের পরামর্শ ও চাহিদার কথা বিবেচনা করে আমরা স্টল ও প্যাভিলিয়ন ব্যবস্থার পাশাপাশি প্রবেশ ও প্রস্থান পয়েন্টে কিছু পরিবর্তন এনেছি। পূর্ববর্তী পদ্ধতি পরিবর্তন করা হচ্ছে এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের অভ্যন্তরে ৪৮৯টি স্টল এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছে যাতে দর্শনার্থীরা যেকোনো কোণ থেকে পুরো মেলার মাঠ দেখতে পারেন।