Search
Close this search box.

কারো কাছে মাথা নত করব না – শেখ হাসিনা

কারো কাছে মাথা নত করব না - শেখ হাসিনা

স্টাফ রিপোর্টার – ‘যতক্ষণ দেহে আছে প্রাণ, প্রাণপণে সরাবো জঞ্জাল, এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাবো আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার অঙ্গীকার। কবি সুকান্তের ভাষায় বলে গেলাম।’ রবিবার (১১ জুন) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের ‘ছাড়পত্র’ কবিতার কয়েকটি লাইন এভাবেই বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশকে এগিয়ে নেওয়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করে কারো কাছে মাথা নত না করার অঙ্গীকার করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

যতক্ষণ দেহে প্রাণ আছে ততক্ষণ জঞ্জাল সরাতে কাজ করে যাবেন। তিনি বলেছেন, আমাদের মনে রাখতে হবে দেশটাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব। বাংলাদেশ, বাঙালি জাতি বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবে। আত্মমর্যাদা নিয়ে, আত্মসম্মান নিয়ে চলবে। কারো কাছে মাথা নোয়াব না। এটাই হচ্ছে আমাদের প্রতিজ্ঞা।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মাধ্যমিক থেকে স্নাতক ও সমমান পর্যায়ের অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে ‘উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ কার্যক্রম’ উদ্বোধন; ‘বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০২৩’র সেরা মেধাবী পুরস্কার ও ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলার অ্যাওয়ার্ড-২০২২’ প্রদান অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে আসা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ছোট্ট সোনামণিদের কাছে আমার পরামর্শ সব সময় মাথায় রাখতে হবে আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী জাতি। কারো কাছে মাথা নত করে আমরা চলি না। মাথা উঁচু করে আমরা চলি, মাথা উঁচু করে চলবো। আজকে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল, কাজেই আমরাও পথ দেখাতে পারি। আমাদের মেধাবী ছেলেমেয়েরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের তিনি প্রশ্ন করেন, পারবে না? শিক্ষার্থীরা সমস্বরে ‘পারবো’ বলে চিৎকার করে নিজেদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। আজকের শিক্ষার্থীরা আগামী দিনে জাতির হাল ধরবে- এ কথা স্মরণ করিয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে শেখ হাসিনা বলেন, দেশের মানুষকে ভুলবে না। মানুষের জন্য কিন্তু সব। জাতির পিতা বলেছিলেন- শিক্ষিত ভাইয়েরা, আপনাদের লেখাপড়ার যে খরচ জনগণ দিয়েছে তা শুধু আপনাদের সংসার দেখবার জন্য নয়। দিয়েছে এই জন্য যে তাদের জন্য আপনারা কাজ করবেন, তাদের সেবা করবেন। তাই জনগণের সেবা করতে হবে। জনসেবার চেয়ে আর কোন কিছু বড় না।

দারিদ্র মুক্ত দেশ গড়তে শিক্ষিত জাতির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে সরকারপ্রধান বলেন, স্বাধীনতার পর জাতির পিতা একটা কথা বলতেন; দারিদ্র বিমোচনের জন্য শিক্ষাই হচ্ছে মূল হাতিয়ার। শিক্ষা ছাড়া একটা জাতি দারিদ্র মুক্ত হতে পারে না। শিক্ষাই জাতির মেরুদণ্ড। জাতির পিতা বলেছেন, শিক্ষায় যত অর্থই ব্যয় হোক এটা হচ্ছে বিনিয়োগ। শিক্ষিত জাতি ছাড়া দারিদ্র মুক্ত বাংলাদেশ গড়া সম্ভব না। তার জন্যই আজকে আমাদের সব উদ্যোগ এই শিক্ষা ক্ষেত্রে আমরা নিয়ে যাচ্ছি।

বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দক্ষতা অর্জনের ওপর গুরুত্বারোপ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, বিশ্ব পরিবর্তনশীল, এই পরিবর্তনশীল বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের চলতে হবে। আজকে প্রযুক্তির যুগ, বিজ্ঞানের যুগ, গবেষণার যুগ।

শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে সরকারের নানা সৃজনশীল কর্মসূচির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি মনে করি, আমাদের ছেলেমেয়েদের যে মেধা, সেই মেধা যদি বিকাশের সুযোগ আমরা দেই। তাহলে এই দেশকে কখনো কেউ আর পিছাতে পারবে না। আমরা এগিয়ে যাবো। এ সময় বিজ্ঞান, কারিগরি শিক্ষার প্রসারের পাশাপাশি শিক্ষাকে বহুমুখী করতে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথাও উল্লেখ করেন তিনি।
স্বাস্থ্য, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি বিষয়ে গবেষণা ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, একটা জায়গায় আমাদের গবেষণা একটু পিছিয়ে আছে, সেটা হচ্ছে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে। স্বাস্থ্য বিজ্ঞানে গবেষণার ওপর আমি গুরুত্ব দিচ্ছি। কৃষিতে আমরা যথেষ্ট অগ্রগতি লাভ করেছি। কিন্তু বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কিন্তু অতটা করতে পারিনি।

বিগত বছরগুলোয় বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতি ও সফলতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত ধারাবাহিকভাবে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত আছে বাংলাদেশে। এই প্রথম, ৫০ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম। আর সেটা আছে বলেই আজকে আমাদের দেশটা উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন শিক্ষা মন্ত্রী ডা. দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। এর আগে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক স্মৃতি কর্মকার। তিনি জানান, মাধ্যমিক থেকে স্নাতক (পাস) ও সমমান পর্যায়ের প্রায় ৫৩ লাখ ৬০ হাজার শিক্ষার্থী উপবৃত্তি ও টিউশন ফি হিসেবে মোট ১২০০ কোটি টাকা পাচ্ছে। এই উপবৃত্তি ও টিউশন ফি বিতরণ করা হবে মোবাইল ফাইন্যান্স সেবার মাধ্যমে।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ-২০২৩ এ ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ১৫ জন মেধাবী শিক্ষার্থী পুরস্কার পেয়েছে। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০২২ পেয়েছেন ২২ জন শিক্ষার্থী। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পর্যায়ে পুরস্কার প্রাপ্ত ৫ শিক্ষার্থী তাদের অনুভূতি প্রকাশ করেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ