জাকির হোসেন
আগামীকাল ৯ জুলাই। ১৯৭৯ সালের সালের এই দিনে বাংলাদেশ সংবিধানের ৫ম সংশোধনীর পর ইনডিমনিটি আইনটি বাংলাদেশ সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার বিচার কেউ যাতে কোনোদিন করতে না পারে সেই লক্ষ্যে খন্দকার মোশতাক পঁচাত্তরের ২৬ আগস্ট ‘ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স-১৯৭৫’ বা দায়মুক্তির অধ্যাদেশ জারি করেন। এর আগে তিনি ক্ষমতাকে সংহত করতে স্বাধীনতাবিরোধী ও পাকিস্তানপন্থি কয়েকজনকে গুরুত্বপূর্ণ উচ্চপদে বহাল করেন। এর ফলে স্বাধীনতাবিরোধী চক্র তখন রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক অঙ্গনে বেশ তৎপর হয়ে ওঠে। ব্যক্তিগতভাবে জেনারেল জিয়া সম্পর্কে খন্দকার মোশতাকের ধারণা ভালো ছিল না।
তিনি মনে করতেন, জিয়া চতুর ও উচ্চাভিলাষী। এ ধরনের লোক যেকোনো মুহূর্তে প্রেসিডেন্টের গদি ধরে টান দিতে পারে। আর তা যদি সে করেই বসে, তবে মোশতাকের প্রশাসন তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে। সঙ্গে সঙ্গে তিনিও ছিটকে পড়বেন প্রেসিডেন্টের গদি থেকে। কিন্তু রশীদ ও ফারুকের সাফ কথা সেনাবাহিনীর প্রধান হবেন মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান, আর কেউ নয়। খন্দকার মোশতাক বিনা শর্তে তাদের এই দাবি মেনে নিতে বাধ্য হন। আর পূর্বতন সেনাপ্রধান মেজর জেনারেল সফিউল্লাহকে অব্যাহতি দিয়ে তার চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করেন রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগের জন্য। তৎকালীন ব্রিগেডিয়ার এইচ এম এরশাদকে মেজর জেনারেল পদে পদোন্নতি দিয়ে উপ-সেনাপ্রধান হিসেবে
নিয়োগ করা হয়। মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে এরশাদ কর্নেল থেকে দুটি পদোন্নতি পেয়ে মেজর জেনারেল হন, যা সেনাবাহিনীর ইতিহাসে বিরল ঘটনা।
খন্দকার মোশতাক ছিলেন পাকা উকিল। অত্যন্ত জটিল, কুটিল ও পাকা বুদ্ধির মানুষ। তিনি সবকিছু সহজভাবে মেনে নেওয়ার মতো মানুষ নন। জেনারেল জিয়া সেনাবাহিনীর প্রধান ও তোয়াব বিমানবাহিনীর প্রধান হওয়ার পর মোশতাক যথারীতি ওকালতি প্যাঁচ কষলেন। কারও সঙ্গে কোনোরকম পরামর্শ না করে তিনি ‘চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ’-এর পদ সৃষ্টি করলেন। আর এই আসনে বসালেন বাংলাদেশ রাইফেলসের প্রধান মেজর জেনারেল খলিলুর রহমানকে। মর্যাদার দিক দিয়ে এ পদটি সেনাবাহিনীর তিন প্রধানের পদেরও ওপরে।
মোশতাক সবার ওপর বসালেন বাংলাদেশের প্রথম প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল এমএজি ওসমানীকে। জেনারেল ওসমানী হলেন নতুন প্রেসিডেন্টের সামরিক উপদেষ্টা। মোশতাকের প্রত্যাশা ছিল, জেনারেল ওসমানীর সাহায্যে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে পারবেন। কেননা তাকে সেনাবাহিনীর প্রায় সব অফিসারই মেনে চলেন। সামরিক বাহিনীর ওপরের স্তর সাধ্যমতো সাজানো শেষে খন্দকার মোশতাক নজর দেন প্রশাসনের দিকে। প্রশাসনের সব গুরুত্বপূর্ণ অফিসার তার হুকুমমাফিক না চললে তা যেকোনো মুহূর্তে নতুন সরকারের বিপদ ডেকে আনতে পারে। তাই মোশতাক প্রশাসনের ওপরতলায় তার আস্থাভাজন লোকদের এনে বসালেন।
এইচ টি ইমাম বঙ্গবন্ধু এবং তাজউদ্দীন আহমদের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় তার বিরুদ্ধে অতিসাধারণ বিষয়ে সামরিক আইনের বিধিমালার আওতায় দুটি মামলা দিয়ে জেলে পাঠানো হয়। শফিউল আজমকে করা হয় নতুন সরকারের ক্যাবিনেট সেক্রেটারি। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় এই শফিউল আজম ছিলেন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের চিফ সেক্রেটারি। পাকিস্তানি হানাদাররা বাঙালির রক্তে বাংলাদেশের মাটি ভিজিয়ে দিলেও বিষয়টি তার মনে এতটুকু দাগ কাটেনি। তিনি তখনও বহাল তবিয়তে পাকিস্তান সরকারের খেদমত করে গেছেন।
স্বরাষ্ট্র সচিব হলেন সালাহউদ্দিন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে তিনি ছিলেন পূর্ব পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্র সচিব। স্বাধীনতার পর তিনি চাকরি নিয়ে গিয়েছিলেন বিদেশে। খন্দকার মোশতাক তাকে বিদেশ থেকে এনে স্বরাষ্ট্রসচিবের পদটি উপহার দেন। এবিএস সফদার আগে ছিলেন পাকিস্তান গোয়েন্দা দফতরের একজন অফিসার। তাকে জাতীয় গোয়েন্দা (এনএসআই) দফতরের সেক্রেটারি জেনারেলের আসনে চড়িয়ে দেন। এ ছাড়া তোবারক হোসেন ছিলেন পাকিস্তান পররাষ্ট্র দফতরের একজন বড় অফিসার। পারিবারিক সূত্রে পাকিস্তান প্রেসিডেন্ট জেনারেল ইয়াহিয়া খানের সঙ্গে তোবারক হোসেনের ছিল নিকটাত্মীয়তার সম্পর্ক। মোশতাক তার হাতে দেন পররাষ্ট্র দফতরের দায়িত্ব। অর্থাৎ তিনি হন পররাষ্ট্র সচিব
এতকিছু সত্ত্বেও খন্দকার মোশতাক নিশ্চিত হতে পারেননি। তার আশঙ্কা চারদিকের এই সতর্কবাঁধ শেষ পর্যন্ত যদি না টেকে? যদি কেউ নতুন অভ্যুত্থান ঘটিয়ে তার ক্ষমতা কেড়ে নেয়? তাহলে ষড়যন্ত্রকারীরা, খুনিরা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? তাদের কপালে যে অনিবার্য মৃত্যুদণ্ড! সেই পথে কাঁটা দেওয়ার জন্য মোশতাক ১৯৭৫ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর একটি অর্ডিন্যান্স জারি করেন। এর নাম ‘ইনডেমনিটি অর্ডিন্যান্স-১৯৭৫’ বা ১৯৭৫ সালের দায়মুক্তির অধ্যাদেশ। এই অধ্যাদেশের ফলে ভবিষ্যতে কেউ বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের ২১ জনকে হত্যার জন্য খুনিদের বিচার করতে পারবেন না। শাস্তি দিতে পারবেন না। এমনকি যেসব ব্যক্তি এ কাজের ছক কেটে দিয়েছে, প্ররোচনা দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাবে না। সরকারি গেজেটে এই অধ্যাদেশ প্রকাশ করা হয় এবং এ ব্যাপারে তখন অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করা হয়, গণমাধ্যমে এ বিষয়ে কিছুই প্রকাশ করা হয়নি। কারণ এটা ওই সময় প্রকাশ হলে সারা দেশে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হতো।
বঙ্গবন্ধুর ঘাতক রশীদ ও ফারুকের মাথায় এ বুদ্ধি আসেনি। তারা এ নিয়ে ভাবেনি। এই চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের জন্ম খন্দকার মোশতাক আর জেনারেল জিয়ার মাথায়। এই দুই চক্রান্তকারীর মনে সব সময় একটা ভয় কাজ করত। তাদের মনে এই শঙ্কা জাগত যে যদি কোনো দিন ক্ষমতা তাদের হাতছাড়া হয়ে যায় এবং যদি তারা বেঁচে থাকে, তাহলে বঙ্গবন্ধু হত্যার দায়ে তাদের ফাঁসিতে ঝুলতে হতে পারে। এ শঙ্কা থেকেই মোশতাক
আর জিয়া এই দায়মুক্তির অধ্যাদেশ জারি করেন। খন্দকার মোশতাক এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এম এইচ রহমান স্বাক্ষরিত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের প্রথম অংশে বলা হয়, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ভোরে বলবৎ আইনের পরিপন্থি যা কিছুই ঘটুক না কেন, এ ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টসহ কোনো আদালতে মামলা, অভিযোগ দায়ের বা কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না। দ্বিতীয় অংশে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি উল্লিখিত ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত বলে যাদের প্রত্যয়ন করবেন তাদের দায়মুক্তি দেওয়া হলো। অর্থাৎ তাদের বিরুদ্ধে কোনো আদালতে
মামলা, অভিযোগ দায়ের বা কোনো আইনি প্রক্রিয়ায় যাওয়া যাবে না।
এর পর নানা নাটকীয়তা ও মর্মান্তিক ঘটনার মধ্য দিয়ে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রক্ষমতার নিয়ন্ত্রক হন। সেসময় রাষ্ট্রপতি ছিলেন বিচারপতি আবু সা’দাত মোহাম্মদ সায়েম। ১৯৭৬ সালের ২৯ এপ্রিল জেনারেল জিয়াউর রহমান সামরিক আইন প্রশাসক হন আর ১৯৭৭ সালের ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি হন। ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি সামরিক আইনের অধীনে দেশে দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রহসনের ওই নির্বাচনে জিয়াউর রহমানের দল বিএনপি দুই-তৃতীয়াংশ আসনে বিজয়ী হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল পর্যন্ত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশসহ চার বছরে সামরিক আইনের আওতায় সব অধ্যাদেশ-ঘোষণাকে সংবিধানের পঞ্চম সংশোধনীর মাধ্যমে আইনি বৈধতা দেওয়া হয়। সংশোধনীটি পাস হয় ১৯৭৯ সালের ৯ এপ্রিল। সংসদে উত্থাপিত আইনটির নাম ছিল ‘সংবিধান (পঞ্চম সংশোধনী) আইন-১৯৭৯’। এই সংশোধনীর মাধ্যমে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশকে বৈধতা দেওয়ায় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অপরাধীরা দায়মুক্তি পেয়ে যায়।
জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পরও বিচারপতি আবদুস সাত্তার, এইচ এম এরশাদ এবং ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এলেও ইনডেমনিটি অধ্যাদেশটি বাতিল বা রহিত করেননি। কেননা তারা সবাই ছিলেন বঙ্গবন্ধু হত্যার সুবিধাভোগী। ফলে তারা খুনিদের নানাভাবে সহযোগিতা করেছেন। বিদেশে বিভিন্ন দূতাবাসে তাদের চাকরি দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। জিয়া, সাত্তার ও এরশাদের আশ্রয় ও প্রশ্রয় খুনিরা ১৫ আগস্টের হত্যার সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা প্রকাশ্যেই বলে বেড়িয়েছে, নানা রকম উসকানিমূলক এবং ঔদ্ধত্যপূর্ণ কথাবার্তা বলেছে।
১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল সংক্রান্ত আইনগত দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব আমিন উল্লাহর নেতৃত্বে যে কমিটি গঠন করা হয়, তাদের রিপোর্টেই প্রকাশ পায় এই কালো আইনটি বাতিলের জন্য সংবিধান সংশোধনের প্রয়োজন নেই। এ পরিপ্রেক্ষিতে এর পর তৎকালীন আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বিল বাতিলের জন্য ‘দি ইনডেমনিটি রিপিল অ্যাক্ট-১৯৯৬’ নামে একটি বিল উত্থাপন করেন।
১৯৯৬ সালের ১২ নভেম্বর সংসদে পাস হয় বহুল সমালোচিত ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ বাতিল বিল। এরই মাধ্যমে জাতি ২১ বছরের কলঙ্কমুক্ত হয় এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পথ উন্মুক্ত হয়। এর আগে ১৯৯৬ সালের ১৪ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার তিন প্রধান আসামি লে. কর্নেল সৈয়দ ফারুক রহমান, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী তাহের উদ্দিন ঠাকুরকে গ্রেফতার করা হয়। ১৯৯৭
সালের ১৫ জানুয়ারি সিআইডি এই মামলায় ২০ জনকে অভিযুক্ত করে মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে চার্জশিট দাখিল করে এবং একই বছরের ১২ মার্চ ছয় আসামির উপস্থিতিতে আদালতে বিচার শুরু হয়।
১৯৯৭ সালের ১৯ জুন পর্যন্ত বিচারক বিব্রত হওয়াসহ নানা কারণে ৮ বার বিচার কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়। এভাবে দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে ১৯৯৮ সালের ৮ নভেম্বর মামলার রায়ে বিচারক কাজী গোলাম রসুল ১৫ জন সাবেক সেনা কর্মকর্তাকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। অন্যদিকে ২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৪ দিনের শুনানি শেষে বিভক্ত রায় প্রদান করেন। বিচারক এম রুহুল আমিন অভিযুক্ত ১৫ আসামির মধ্যে ১০ জনের মৃত্যুদণ্ডাদেশ বজায় রাখেন। কিন্তু অপর বিচারক এবিএম খায়রুল হক অভিযুক্ত ১৫ জনকেই সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেন। পরে হাইকোর্টের তৃতীয় বেঞ্চে ১২ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকে।
পরবর্তীতে ২০০১ সালের অক্টোবরের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় এলে বিচারকাজ বন্ধ থাকে। দীর্ঘ ছয় বছর পর ২০০৭ সালের ২৩ আগস্ট রাষ্ট্রপক্ষের মুখ্য আইনজীবী বর্তমান সরকারের আইনমন্ত্রী আনিসুল হক সুপ্রিম কোর্টে সংক্ষিপ্ত বিবৃতি প্রদান করেন এবং ২৩ সেপ্টেম্বর আপিল বিভাগের তিন সদস্যের একটি বেঞ্চ ২৭ দিনের শুনানি শেষে ৫ আসামিকে নিয়মিত আপিল করার অনুমতিদানের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন। ২০০৯ সালের ১২ নভেম্বর ২৯ দিনের শুনানির পর চূড়ান্ত আপিল শুনানি শেষ হয় এবং আদালত ১৯ নভেম্বর রায়ের তারিখ নির্ধারণ করেন। ওইদিন (১৯ নভেম্বর) বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বহাল রেখে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ৫ আসামির দায়ের করা আপিল আবেদন খারিজ করা হয়। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি আপিলের রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের রিভিউ খারিজ হয়ে গেলে ২৮ জানুয়ারি ৫ আসামির ফাঁসির রায় কার্যকর করে জাতি দায়মুক্ত হয়।