Search
Close this search box.

আন্তর্জাতিক কন্যাশিশু দিবস আজ

জিনাতুন্নেসা সরকার

সমসাময়িক কালে হয়তো চোখে পড়ে না। বেশ কিছুদিন আগে ও গ্রামের প্রায় বাড়িতেই দেয়ালে ঝুলত ফ্রেমে বাধানো কাপড়ে রঙ্গিন সুতোয় সুঁই এর ফোড়ে কাঁচা হাতের লেখায় কিছু উপদেশ বাণী। তার মধ্যে একটি ছিল-‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে। সুখের পেছনে যদি রমণীর গুণকেই গুরুত্ব দিতে হয়, তবে বলতেই হয় গুণতো এমনি এমনি বিকশিত হবে না। তার জন্য প্রয়োজন শিশু রমণীর সঠিক পরিচর্যা। অর্থাৎ সব শিশুর পরিপূর্ণ অধিকার নিশ্চিত করা। এর প্রধান দায়িত্ব পরিবারকেই নিতে হবে। সকল মা-বাবাই যেন পুত্র ও কন্যা সন্তানদের একই মানসিকতায় বড় করেন। লক্ষ্য রাখতে হবে ছেলেকে প্রাধান্য দিতে গিয়ে কন্যা শিশুটি যেন অবহেলায় তার মধ্যে সঞ্চিত গুণগুলোকে প্রকাশ করার সাহস হারিয়ে না ফেলে।

ঘরে ঘরে প্রায় প্রতি ঘরে আছে কন্যা শিশু। আর শিশু কন্যার জন্য পরিবারে আছে উৎকণ্ঠা। পুত্র হোক বা কন্যা পরিচয় তার মানব শিশু। মানুষের সৃষ্টি নারী পুরুষের বৈষম্য অতি প্রাচীন। শত সহস্র বছর ধরে পুরুষ শাসিত হয়ে নারী কোণঠাসা হয়ে ছিল। আজ অবশ্য সে অবস্থা নেই। তবে নির্ভয়ে এগিয়ে যাওয়া পথে প্রধান বাঁধা নারীর নিরাপত্তাহীনতা। প্রতিদিন অনিরাপদ নারীর পথ চলা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নকে কতখানি এগিয়ে নিতে পারবে এ প্রশ্ন আজও আমাদের ভাবায়।

দেশের মোট জনসংখ্যার অর্ধেক নারী। তাঁদের মধ্যে যারা প্রয়োজনে বেরিয়ে আসছেন বাইরে, তাদের বেশির ভাগেরই রাস্তায় বা গণপরিবহণের কুৎসিত অভিজ্ঞতা আছে। চলার পথে কখনো বা অনাকাঙ্খিত কদর্য ঘটনায় থমকে যায় জীবন। কেউ বা জীবনভর মানসিক ক্ষত বয়ে বেড়ায়। আবার অনেক সময় আমরা মায়েরা নিজেরাই ছেলে ও মেয়ে শিশুটিকে আলাদা দৃষ্টিতে লালনপালন করি। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের পরিবারে ছোটবেলা থেকেই কন্যা শিশুটি তার চাওয়া পাওয়া থেকে বঞ্চিত থাকে। এক সময় ভুলেই যায় যে তারও নিজের মত করে বেঁচে থাকার অধিকার আছে।

দুঃখজনক হলেও সত্য, আজও কন্যা শিশুর জন্ম নিয়ে অনেকেই সন্তুষ্ট হতে পারে না। কারণ হিসেবে মনে করা হয় মেয়েরা অর্থনৈতিক উন্নতিতে পরিবারের কোন কাজ আসবে না। বড় হয়ে স্বামীর বাড়ি যাওয়াটাই তাঁদের  আসল গন্তব্য। তারপরও আমাদের কন্যারা থেমে নেই। তারা আমাদের গৌরব, আমাদের সম্পদ। তাদের পাশে থেকে চলার পথে সব বাধা দূর করে আমাদের সংঘবদ্ধ হতে হবে। সকলকে বুঝতে হবে যে সংসারতো এক ব্যক্তির নয়। সবার সুখের সাথে রমণীর সুখকেও তো এড়িয়ে যাওয়া যাবে না। সংসারের সুখের জন্যই দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি রমণীর প্রাপ্য অধিকারটুকু দিতে হবে সদানন্দে। তবেই সুখের হবে সকল সংসার। আসুন আমরা সকলে মিলে কন্যাশিশুদের সুস্থ সামাজিক পরিবেশ উপহার দিই। শিক্ষিত সভ্য জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে ছোটবেলা থেকে সুশিক্ষার আলোয় আলোকিত শিশু কন্যারা। তাঁদের গুণ শুধু সংসার নয়। পুরো পৃথিবীকে সুখের ঠিকানায় নিয়ে যেতে পারবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ