স্টাফ রিপোর্টার \ দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটে যাওয়া বাসে ডাকাতির ঘটনায় জড়িত দশজনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। এসময় ডাকাতি কাজে ব্যবহৃত দেশী ও বিদেশী অস্ত্র উদ্ধার করে র্যাব সদস্যরা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র্যাব লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি ডাকাতির কৌশল বর্ননা করে বলেন, ডাকাতির জন্য তারা ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন দূরপাল্লার আন্তঃজেলা বাসকে টার্গেট করে। এক্ষেত্রে চক্রটির কয়েকজন সদস্য আগেই নির্দিষ্ট বাসের কাউন্টার থেকে টিকিট কিনে বাসে উঠে। অন্য সদস্যরা পরে বিভিন্ন কাউন্টার থেকে টার্গেট করা বাসে উঠে। এছাড়া যেসব দূরপাল্লার বাস কাউন্টার ছাড়া যাত্রী উঠায় তারা এসব বাসকে প্রাধান্য দিয়ে ডাকাতি করত। সাধারণত তারা মহাসড়কের নির্জন এলাকাকে বাস ডাকাতির জন্য বেছে নেয়। ডাকাতি করার পর তারা আবার আশুলিয়ায় ফিরে আসে।
তিনি বলেন, গ্রেফতারকৃতরা সাভারের আশুলিয়ায় হানিফ পরিবহন ও গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে স্টার লাইন পরিবহনের বাসে ডাকাতিসহ বিভিন্ন সময়ে দূরপাল্লার বাসে ডাকাতির সঙ্গে জড়িত। শনিবার রাতে ঢাকার আশুলিয়া এলাকা থেকে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে র্যাব-৮ এর একটি আভিযানিক দল তাদের গ্রেপ্তার করে।
তিনি আরও বলেন, ডাকাত সর্দার হীরার নেতৃত্বে এই সংঘবদ্ধ ডাকাত দল গত এক মাসে চট্টগ্রাম থেকে যশোরের বেনাপোলগামী হানিফ পরিবহন, ঢাকা থেকে রাজশাহীগামী ন্যাশনাল ট্রাভেলস এবং কাশিয়ানীতে ঢাকা থেকে কোটালীপাড়াগামী স্টার লাইন পরিবহনে ডাকাতি করেছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো: ১) ডাকাত সর্দার মো. হীরা শেখ ওরফে কালাম শেখ ওরফে সোলেমান শেখ ২) মো. হাসান মোল্লা ওরফে ইশারত মোল্লা (৩৯), ৩) আরিফ প্রামানিক ওরফে আরিফ হোসেন (৩৩),৪) মো. নুর ইসলাম (৫৩), ৫) মো. রাজু শেখ ওরফে রাজ্জাক (৫৪), ৬) মো. রেজাউল সরকার (৪৯), ৭) মো. রতন (৩৬), ৮) মো. শরিফুল ইসলাম (৩৯), ৯) মো. হানিফ (৪২), ১০) মো. নজরুল ইসলাম (৩৫)।
গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতিতে ব্যবহৃত ১টি বিদেশি পিস্তল, ৩ রাউন্ড গুলি, ৮টি দেশীয় অস্ত্র, ৪টি শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসের টিকিট, ৩টি ব্যাগ উদ্ধার করা হয়।
কমান্ডার মঈন আরও জানান, এই দলের সদস্য সংখ্যা ১২ থেকে ১৫ জন। গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত সর্দার হীরা ও তার অন্যতম সহযোগী হাসান মোল্লা বিভিন্ন ডাকাতির পরিকল্পনা করে থাকে। ডাকাত দলটি দীর্ঘদিন ধরে ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন জেলামুখী যাত্রীবাহী বাসে উঠে ডাকাতি করে আসছিল। গত দুই বছরে তারা ১০-১৫টি বাসে ডাকাতি করেছে। আগেও চক্রটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে শ্যামলী পরিবহন ও মামুন ট্রাভেলস, ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে ন্যাশনাল ট্রাভেলস ও একতা ট্রাভেলসে ডাকাতি করেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
এছাড়া বিভিন্ন সময় তারা বাড়িঘরে ডাকাতি করত বলে জানা যায়। তাদের প্রত্যেকেই সর্বনিম্ন দুই থেকে সর্বোচ্চ ছয় বছর মেয়াদে কারাভোগ করেছে। গ্রেফতারকৃতদের নামে দেশের বিভিন্ন থানায় ডাকাতিসহ অস্ত্র আইনে মোট সাতটি মামলা রয়েছে।