Search
Close this search box.

বিশ্বচোরদের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল –তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিশ্বচোরদের মুখপাত্র বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

তিনি বলেন, ‘চোরের মায়ের বড় গলা প্রবাদের মতো এখন বিশ্বচোরদেরও গলা বড়। বিএনপি দেশকে চারবার একক ও একবার যৌথভাবে দুর্নীতিতে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বানিয়ে বিশ্বচোর উপাধি পেয়েছিল। শুনতে খারাপ লাগলেও বাস্তবতা হচ্ছে, এখন সেই বিশ্বচোরদের মুখপাত্র মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেব।’

শুক্রবার রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তথ্যমন্ত্রী। এসময় বিএনপি মহাসচিবের সরকার রিজার্ভ গিলে খেয়েছে বলে দেওয়া বক্তব্যের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির শাসনামলে হাওয়া ভবনে বসে জনগণের টাকা গিলে খাওয়া হতো অভিযোগ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, তারা (বিএনপি নেতারা) হাওয়া ভবন বানিয়েছিলেন। হাওয়া ভবন তো আসলে খাওয়া ভবন ছিল। কারণ জনগণের টাকা ওখানে খাওয়া হতো। হাওয়া ভবনে বসে জনগণের সব ব্যবসা ও প্রজেক্টের ওপর টোল বসিয়েছিল এবং জনগণের টাকাটাই গিলে খেতো তারা। যারা জনগণের টাকা আগে গিলে খেয়েছে, তারা শুধু খাওয়ার কথাটাই চিন্তা করে বলে ফখরুল সাহেব এমন বক্তব্য দিয়েছেন।

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপির শেষ সময় ২০০৬ সালে রিজার্ভ ছিল ৩ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন ডলার অর্থাৎ সাড়ে তিন বিলিয়নেরও কম। আমাদের নেত্রী, বর্তমান সরকার সেটি ৪৪ বিলিয়নে উন্নীত করেছেন। এখন বিশ্ব পরিস্থিতি, নানা ধরনের ইনভেস্টমেন্ট বা বিনিয়োগ এবং রিজার্ভ থেকে টাকা নিয়ে বিশেষ তহবিল গঠনের কারণে তা ৩৭ বিলিয়নে নেমে গেছে। এরপরও বিএনপির সময়ের তুলনায় ১২ গুণ বেশি রিজার্ভ রয়েছে।

খুলনার পর বিএনপির রংপুর ও বরিশালের সমাবেশের আগেও পরিবহন ধর্মঘট নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, বিএনপিকে তো পরিবহন মালিক-শ্রমিক সবাই চেনে। কারণ ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে বিএনপি পরিবহনের ওপর পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করে আগুন জ্বালিয়ে দিয়ে মানুষ হত্যা করেছিল। তারা শত শত গাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে, মানুষ হত্যা করেছে। পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা শঙ্কিত। এজন্য এখন বিএনপি যেখানেই সমাবেশ ডাকে, সেখানেই তারা ধর্মঘট ডাকছে।

ধর্মঘট ডাকা মালিকদের মধ্যে যে বিএনপির নেতারাও আছেনে দাবি করে হাছান মাহমুদ বলেন, পরিবহন মালিকদের নেতা এবং সমিতির সদস্যদের মধ্যে বিএনপি, আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি, জাসদসহ বিভিন্ন দলেরই মানুষ আছে। শিমুল বিশ্বাস বাবু তো পরিবহন নেতা, তিনি তো বিএনপি করেন। ওনারাই তো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ধর্মঘট ডাকার।

তিনি বলেন, সুতরাং বিএনপি ঘরানার পরিবহন মালিকরাও শঙ্কিত এবং তারা কেউই যাতে বিএনপির অপরাজনীতির শিকার না হন, সেজন্য সবাই মিলেই ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ আরও বলেছেন, বিএনপি আমলে কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে যখন আন্দোলন হয়েছে, বিএনপি তখন মানুষের ওপর গুলি চালিয়েছে, মানুষ হত্যা করেছে। বিদ্যুৎ দেবে বলে তারা শুধু খাম্বা বসিয়েছে। সুতরাং, বিদ্যুৎ নিয়ে কথা বলার কোনও নৈতিক অধিকার তাদের নেই।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি ২০০১ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে টঙ্গীতে ৮০ মেগাওয়াটের একটি মাত্র বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করেছিল, যা মাত্র দুই দিন চলেছিল। অর্থাৎ দুই দিন চলার পরই সেটি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। বিদ্যুৎ খাতে দুর্নীতির কারণে বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফ  বিএনপি আমলে এই খাতে অর্থায়ন বন্ধ করে দিয়েছিল। এসব কারণে আমি বিএনপিকে বলবো— এ নিয়ে কথা না বলে বরং আয়নায় নিজেদের চেহারাটা দেখতে এবং মানুষকে বিভ্রান্ত করার পথ পরিহার করতে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের আগে দেশের মাত্র ৪০ শতাংশ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় ছিল। বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে সেটি আরও  কমেছিল, কিন্তু আজ দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে এবং প্রত্যন্ত গ্রামের ঘরে ঘরে আমাদের সরকার বিদ্যুৎ সুবিধা পৌঁছে দিয়েছে। গ্রামের মানুষ এখন বাড়িতে এয়ারকন্ডিশন ব্যবহার করে, ফ্রিজ-টেলিভিশন তো আছেই। ১৫ কোটি মানুষের মোবাইল ফোন, বৈদ্যুতিক গাড়ি, থ্রি হুইলারগুলো বৈদ্যুতিক চার্জে চলে। সেখানেও অন্তত শত শত মেগাওয়াট বিদ্যুৎ খরচ হয়।’

বৈশ্বিক অবস্থা তুলে ধরে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সাম্প্রতিক বিশ্বে জ্বালানি সংকটের কারণে জার্মানিতে পানি গরম করার বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ইউরোপের অনেক দেশেই এ রকম করা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়াতে রেশনিং করে বিদ্যুৎ দেওয়া হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রে মানুষকে এসএমএস করে জানানো হয়েছে— সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের জন্য। এই সংকট সমগ্র পৃথিবীতে এবং বাংলাদেশ তো বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। সে কারণে আমাদের দেশেও প্রধানমন্ত্রী সাশ্রয়ীভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহারের আহ্বান জানিয়েছেন এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। আশা করি, এই পরিস্থিতি সহসা কেটে যাবে। কিন্তু এটি নিয়ে বিএনপি যেভাবে কথা বলছে, সেই নৈতিক অধিকার তাদের নেই।’

মন্ত্রী জানান, ১৯০২ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত এই জনপদে ১০৭ বছরে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ছিল ৩৩ থেকে ৩৪ শ’ মেগাওয়াট, আর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে গত ১৪ বছরে সেই সক্ষমতা ২৪ হাজার মেগাওয়াটের বেশিতে গিয়ে দাঁড়িয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ