স্টাফ রিপোর্টার- আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সংগ্রাম করছেন। বাংলাদেশেকে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে দুজন মানুষকে সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন। একজনকে রাজনৈতিক স্বাধীনতার জন্য আর আরেকজনকে আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য। বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সংগ্রাম করছেন। বাংলাদেশেকে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ গড়ার পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের আয়োজিত আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের একথা বলেন। সভার সভাপতিত্ব করেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, দেশের মানুষের কাছে অবশ্যই আমাদের অঙ্গীকার আছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণ করতেই হবে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের আদর্শ রাষ্ট্র গড়তে হবে। আইডিয়াল স্টেট গড়তে হবে। মুক্তির কান্ডারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে উন্নয়নের মহাসড়ক ধরে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বো। সেটাই আমাদের শপথ।
আগামী ২০২৬ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ৪ হাজার ডলার হবে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আজকে আমাদের মাথাপিছু আয় আড়াই হাজার ডলার। আর আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বা আইএমএফ সর্বশেষ প্রতিবেদনে বলেছে, বাংলাদেশ এখন পৃথিবীর ৩৫তম অর্থনৈতিক দেশ। যেভাবে এগিয়ে চলছে ২০২৬ সালে আমাদের মাথাপিছু আয় ৪ হাজার ডলারে উন্নীত হবে।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা আজ মুক্তির সংগ্রাম করছেন। বাংলাদেশকে একটা উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়তে ভিশন ২০৪১, ২১০০ পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব টানেল, একদিনে শত সেতু, শত রাস্তা, বাংলাদেশ আজ সারা বিশ্বের বিস্ময়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা এই বাংলায় বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের পুনর্বাসিত করেছে, পুরস্কৃত করেছে, হত্যার দায় থেকে মুক্তি দিতে কুখ্যাত ইনডেমনিটি আইন করেছিল মনে আছে তাদের কথা? যারা এই বাংলার গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। যারা এই দেশে ১ কোটি ভুয়া ভোটার তৈরি করেছিল। যারা এদেশের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছিল। যেজন্য তারেক রহমান সাত বছরের দন্ড নিয়ে লন্ডনে অবস্থান করছেন।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সাম্প্রদায়িকতা আর জঙ্গিবাদের বিশ্বস্থ ঠিকানা সেই বিএনপির হাতে এদেশের ক্ষমতা আমরা তুলে দিতে পারি না। তাদের হাতে ক্ষমতা আমরা ফিরিয়ে দিতে পারি না। তারা বলছে, টেক ব্যাক বাংলাদেশ। খুনির কাছে, দুর্নীতিবাজদের কাছে আমি আমার সোনার দেশ বঙ্গবন্ধুর বাংলার ক্ষমতা মঞ্চ ফিরিয়ে দেব, এটা হবে না। এটা হতে পারে না। তাই আমি সবাইকে আহ্বান জানাবো; গেট রেডি, প্রস্তুত হউন। সামনে নির্বাচন। সাম্প্রদায়িক শক্তি বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় আজকে মাঠে নেমেছে জঙ্গিবাদী, সন্ত্রাসবাদী। এদের প্রতিহত করতে হবে, পরাজিত করতে হবে।
এদিকে বিএনপিসহ বিভিন্ন দলের অবস্থান কর্মসূচির কঠোর সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ৫৪টি দল আজ শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাদের অবস্থানে কী হবে? ঘোড়ার ডিম পাড়বে। ৫৪টা ঘোড়ার ডিম পারবে ৫৪টি বিরোধী রাজনৈতিক দল।
বুধবার দুপুরে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এ সভার আয়োজন করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, যারা দেশকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়েছে, তারা নাকি দেশ মেরামত করবে। মেরামত তো করেন শেখ হাসিনা। বিএনপি ক্ষমতায় এলে দেশের স্বাধীনতা বাঁচবে না, গণতন্ত্রের বস্ত্রহরণ করবে। তাদের হাতে আমরা দেশকে ছেড়ে দিতে পারি না।
তিনি বলেন, খেলা হবে, খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, দুঃশাসনের বিরুদ্ধে, খেলা হবে গণতন্ত্র হত্যার বিরুদ্ধে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের পুনর্বাসিত করে দায় মুক্তি দিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পল্টনে মোটামুটি একটা সমাবেশ হয়েছে। ৫৪ দল একজন শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নেমেছে আজ। তারা ভুয়া।
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আব্দুস সবুর, উপ-প্রচার বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল আউয়াল শামীম ও কার্যনিবাহী সদস্য সানজিদা খানম।
এছাড়া কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেসবাহুল হক সাচ্চু, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকিও বক্তব্য রাখেন।