স্টাফ রিপোর্টার- আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বহুবার ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর কে ক্ষমতায় এলো? খন্দকার মোশতাক, আওয়ামী লীগ নেতা, অর্থাৎ একটা ধারণা দেওয়া হলো আওয়ামী লীগপন্থিরাই ক্ষমতায় আছে। তার আড়াই মাস পর ক্ষমতায় এলো জিয়াউর রহমান। পরিচয় কী? মুক্তিযোদ্ধা। কর্মকাণ্ড কী? কর্মকাণ্ড হচ্ছে অমুক্তিযোদ্ধা, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার মূল্যবোধকে হত্যা করে এই দেশে পাকিস্তানি রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করা। সেই লক্ষ্যে সেদিন ১৫ আগস্ট সংঘটিত করে এদের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।’
রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় ১৪ দল আয়োজিত আলোচনা সভায় হানিফ এসব কথা বলেন।
সভায় আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, ‘দেশের বর্তমান সংবিধানের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে, তারা জাতীয় শত্রু। যারা দেশের অস্তিত্ব নিয়ে কথা বলে, তাদের কেন সংশ্লিষ্ট আইনে গ্রেফতার করা হয় না? শাস্তি দেওয়া হয় না? এটাই আজ আমাদের জিজ্ঞাসা। আইনের যথাযথ প্রয়োগ করে স্বাধীনতাবিরোধীদের জনগণের সামনে শাস্তি দেওয়া হোক।
বিএনপির কথাবার্তা ষড়যন্ত্রের আলামত দাবি করে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, ‘স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি করবেন না, পবিত্রভাবে কথা বলুন, না হয় দেশ ছেড়ে চলে যান। যতই দেশিবিদেশি ষড়যন্ত্র করেন, কোনো লাভ নেই।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘ইতিহাসের মীমাংসিত বিষয়ে কারও দ্বিমত থাকা উচিত নয়। একাত্তরের মীমাংসিত বিষয়কে বিএনপি অস্বীকার করে বাংলাদেশ দখল করেছিল। বিএনপি গণতন্ত্রের কুর্তা গায়ে দেওয়া আধুনিক রাজাকার প্রতিষ্ঠাকারী দল।’
তিনি বলেন, সামরিক শাসকের ঔরসজাত দল বিএনপি। আন্দোলনের নামে বিএনপি আবারও রাজনৈতিক অপরাধ করছে, যা এ দেশের জন্য অশনিসংকেত। গণতন্ত্রের কুর্তা গায়ে দিয়ে তারা আবারও জামায়াতকে হালাল করার চেষ্টা করছে।
ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘যতই স্বাধীনতা বিকৃতির চেষ্টা করা হোক না কেন, প্রকৃত ইতিহাস মুছে দেওয়া যায় না। বিশ্বের অন্যান্য দেশের দিকে তাকালে দেখা যায় বাংলাদেশ কতটুকু এগিয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বিকৃত করে ভোট ডাকাতির নির্বাচন করেছিল বিএনপি-জামায়াত। স্বাধীন নির্বাচনের জন্য আমরা লড়াই করেছি বলেই ফখরুদ্দীনরা নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়েছিল।
তিনি বলেন,আমরা একটি অংশগ্রহণমূলক, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্বচ্ছ নির্বাচন চাই। বিএনপি নির্বাচনে যাক না যাক, সেটা তাদের বিষয়। কিন্তু কোনো প্রকার বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে লাভ নেই। মুক্তিযুদ্ধের শহীদের তালিকা নিয়ে টালবাহানা করে ইতিহাস বিকৃতি করতে চায় বিএনপি। যত যাই হোক, স্বাধীনতাবিরোধীদের হাতে কোনো মূল্যে এ দেশের ভার দেওয়া যাবে না।
আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃনাল কান্তি দাসের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীরবিক্রম, গণতান্ত্রিক পার্টির নেতা ডা. শাহাদাৎ হোসেন, গণআজাদী লীগের সভাপতি এসকে সিকদার, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরসহ অনেকে।