Search
Close this search box.

২০১৪ সাল থেকে আমাদের রাজনীতি করতে দেয়নি আ.লীগ: জি এম কাদের

স্টাফ রিপোর্টার: জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, ‘১৯৯৬, ২০০১ এবং ২০০৮ সালে ভালো নির্বাচন হলেও দেশ ভালো সরকার পায়নি। সুষ্ঠু নির্বাচনের পর আমরা কখনো সঠিক রাজনীতি পাইনি। আমাদের সংবিধান এক ব্যক্তির হাতে সকল ক্ষমতা দিয়েছে। একই ব্যক্তি নির্বাহী বিভাগ, সংসদ ও প্রায় শতভাগ বিচার বিভাগের প্রধান। সাংবিধানিক সকল প্রতিষ্ঠান ওই একই ব্যক্তির হাতে। এ কারণেই, লর্ড এটনের একটি বিখ্যাত উক্তি অমর হয়ে আছে। তিনি বলেছিলেন, ক্ষমতা মানুষকে দুর্নীতিগ্রস্থ করতে পারে। কিন্তু, অসীম ক্ষমতা নিশ্চিত ভাবেই মানুষকে দুর্নীতিগ্রস্থ করে। ক্ষমতা বাড়াতে সংবিধানকে বারবার পরিবর্তন করা হয়েছে। এই সংবিধানের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচনে যাকেই ক্ষমতায় বসাবেন, তিনিই ক্ষমতার জোরে দানব হতে বাধ্য। শুধু সুষ্ঠু নির্বাচন নয়, সুষ্ঠু শাসন ব্যবস্থা চাই। নির্বাচনের আগে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ চাই। দুটি দলই দলীয়করণের মাধ্যমে সকল প্রতিষ্ঠান কুক্ষিগত করেছিলো। আমরা কখনো প্রশাসন ও বিচারবিভাগ দলীয়করণ মুক্ত পেয়েছি? এক দলীয়করণ থেকে আরেক দলীয়করণ চাই না। পঞ্চদশ সংশোধনী বাতিল করে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। সংবিধানের এক তৃতীয়াংশ কখনোই বাতিল করা যাবে না, এটা কোন যৌক্তি কথা নয়। সংবিধান সংশোধন করে গণভোট দেয়ার বিধান থাকলেও আওয়ামী লীগ সরকার তা করেনি। আমি মনে করছি, কেউ রিট করলেই মহামান্য আদালত বিষয়টি মঞ্জুর করবেন। সংবিধান সংশোধন করে গণমুখি এবং জবাবদিহিতামূলক সরকার ব্যবস্থা করতে হবে। জাতীয় নির্বাচনের আগে আমরা স্থানীয় সরকারের নির্বাচন চাই। তবেই, আমরা বুঝতে পারবো নির্বাচন বিষয়ে কতটা সংস্কার হলো, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে কিনা। যারাই ক্ষমতায় আসুক তারা যেনো দানব না হতে পারে। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রতি আমাদের আস্থা আছে। ব্যক্তিগতভাবেও আমরা তাদের বিশ্বাস করি।’

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের বনানীস্থ কার্যালয় মিলনায়তনে জাতীয় যুব সংহতির নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জি এম কাদের এসব কথা বলেন।

বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশ যখন স্বৈরাচার মুক্ত হলো, তখন একটি শ্রেণী আমাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে। অপপ্রচারে বলা হচ্ছে, আমরা ২০২৪ সালের নির্বাচনে গিয়েছি তাই নাকি আওয়ামী লীগ দানবে পরিণত হয়েছে। আমরা নির্বাচনে না গেলে কি নির্বাচন হতো না? আমরা নির্বাচনে না গেলে আওয়ামী লীগ কি ক্ষমতাচ্যুত হতো? ২০১৪ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ আমাদের মাঝে একটি দালাল পার্টি তৈরী করে রেখেছিলো। অবৈধভাবে তাদের জাতীয় পার্টির লগো ও প্রতিক ব্যবহার করতে সহায়তা করেছিলো আওয়ামী লীগ। টেলিভিশনে গিয়ে তারা জাতীয় পার্টি পরিচয়ে আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলতো। আমাদের বিভ্রান্ত করা হতো। আওয়ামী লীগ দানবীয় শক্তি দিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে রাজনীতি করতে দেয়নি। বিএনপিকে জেল-জুলুম করে ঘরছাড়া করেছিলো। জামায়াতকে তো রাজনীতির মাঠে দাঁড়াতেই দেয়নি। ২০১৪ সাল থেকে আমাদের রাজনীতি করতে দেয়নি। ২০২৪ সালে বলা হলো, আপনি নির্বাচন না করলে অন্যকেউ জাতীয় পার্টির লাঙ্গল নিয়ে নির্বাচন করবে। আমরা তাতে রাজি হইনি। পরবর্তীতে বলা হলো নির্বাচনের প্রস্তুতি নিন, নির্বাচন সুষ্ঠু না হলে আপনারা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবেন। আমরা নির্বাচনে না গেলে হয়তো অন্য একটি গ্রুপ জাতীয় পার্টি নামে নির্বাচনে যেতো। দেশী-বিদেশী রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বললেন, নির্বাচন বন্ধ করা যাবে না। আওয়ামী লীগ যে কোন মূল্যে নির্বাচন করে ফেলবে। শেখ হাসিনা আওয়ামী লীগ দিয়েই এ ও বি টিম তৈরী করেছিলো। জাতীয় পার্টিতেও বিকল্প দল তৈরী করেছিলো। তারপরও আমাদের জোর করে নির্বাচনে নেয়া হয়েছে। কখনোই আমরা নির্বাচনে ছাড় চাইনি, আমরা চেয়েছিলাম অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। ২০২৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর আমি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিতে চেয়েছিলাম। সে অনুযায়ী গণমাধ্যমকে খবর দেয়া হয়েছিলো। সকাল থেকে ফোনে আমাকে হুমকী দেয়া হচ্ছিলো। আমি ঝুকি নিয়েও গণমাধ্যমের সাথে কথা বলে নির্বাচন থেকে সড়ে দাড়াতে চেয়েছিলাম। গণমাধ্যমের সামনে আমাকে কথা বলতে দেয়া হয়নি। আমাদের অফিস ও অলিগলি কর্ডন করে রাখা হয়েছিলো। আমাদের কক্ষ থেকে বের হতে দেয়নি আইন শৃংখলা রক্ষাবাহিনী ও বিভিন্ন সংস্থার সদস্যরা। যারা অফিসে ছিলেন, আইন শৃংখলা রক্ষা বাহিনী ও বিভিন্ন সংস্থার লোকেরা জানেন কেমন করে আমাদের নির্বাচনে যেতে বাধ্য করা হয়েছিলো। যে সাংবাদিকরা জাতীয় পার্টি অফিসে উপস্থিত ছিলেন তাদের সামনেই সব কিছু হয়েছে, কেউ কি প্রতিবাদ করেছিলো? তখন সব কথা প্রকাশ করার পরিবেশ ছিলো না। অন্যান্য রাজনৈতিক দল সেদিন যেভাবে স্বৈরাচারের দানবীয় শক্তির কাছে পরাজিত হয়েছিলো, আমরাও সেভাবেই পরাজিত হয়েছিলাম। নির্বাচন করে সরকার তো কোথাও বাঁধাগ্রস্থ হয়নি। সরকার বাঁধাগ্রস্থ হয়েছে জেদ ও অহংকারের কারনে।’

জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জাতীয় যুব সংহতি’র সভাপতি এইচ এম শাহরিয়ার আসিফ এর সভাপতিত্বে এবং জাতীয় পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান ও যুব সংহতি’র সাধারণ সম্পাদক আহাদ ইউ চৌধুরী শাহীন এর পরিচালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, প্রেসিডিয়াম সদস্য এ্যাড. মোঃ রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, জহিরুল ইসলাম জহির, আতিকুর রহমান আতিক, শেরীফা কাদের, মোঃ জসীম উদ্দিন ভূঁইয়া, মোঃ আরিফুর রহমান খান, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মোঃ খলিলুর রহমান খলিল, ভাইস চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলাম সরু চৌধুরী, সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুক্তি, সম্পাদকমন্ডলী অলিউল্ল্যাহ মাসুদ চৌধুরী, এমএ হান্নান, এমএ রাজ্জাক খান, ইঞ্জিনিয়ার এলাহান উদ্দিন।

জাতীয় যুব সংহতির নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, মোঃ হেলাল উদ্দিন, দ্বীন ইসলাম শেখ, মোঃ এমরানুল হক, এ্যাড. মাঈন উদ্দিন মাইনু, আবু নাসের বাদল, ফররুখ আহমাদ, মোঃ হাসানুজ্জামান নাজিম, মোঃ মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর, রিপন ভাওয়াল, আব্দুল হামিদ, ওমর আলী মান্নাফ, এ্যাড. খন্দকার ফিরোজ আহমেদ, মোঃ দুলাল মৃধা, মোঃ মারুফ ইসলাম তালুকদার প্রিন্স, রাহুল দেব, শাহান উদ্দিন নাজু, প্রভাষক মোঃ রফিকুল ইসলাম, শরীফ উদ্দিন, শাহ আনোয়ারুল অনু, আশরাফুল ইসলাম রুমন, আশিকুর রহমান বাপ্পী, আবু তাহের, আরিফুল ইসলাম রুবেল, মর্তুজা আহমেদ চৌধুরী, এ্যাড. শামীম, মোঃ গোলাম মোস্তফা হীরা, মাহমুদ আলম, অধ্যাপক নুরুল বশর সুজন, মোঃ শরিফুল ইসলাম, মোঃ হুমায়ুন কবির, ইউনুস হাওলাদার, নূর মোহাম্মদ রুবেল, মোঃ মেহেদী হাসান, মোঃ তোফায়ুল রহমান পায়েল, মোঃ আমিনুল ইসলাম, নজরুল ইসলাম হেমায়েত, মোঃ কামরুল হাসান, মেহেদী হাসান জাকির, ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মহিউদ্দিন সরকার, রাজিব চৌধুরী, মোঃ দিদারুল ইসলাম, হেলাল পাটোয়ারী, শরিফুল ইসলাম বাবু, বিএম রশীদ, শাকিল আহমদ, শাহজাহান মোল্লা, রফিকুল ইসলাম, মোঃ আবু সাঈদ, এমএ মতিন চৌধুরী, আব্দুল কাদির, সালাহউদ্দিন সিকদার, মোঃ ফরহাদ হোসেন, আব্দুল হাই ডালিম, হাবিবুর রহমান, মোঃ মিজানুর রহমান, মোঃ জাকির হোসেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

সর্বশেষঃ