ধর্ম ডেস্ক: আমাদের দেশে আমরা অনেকেই কোরআন ছুঁয়ে শপথ করি। কোরআন ছুঁয়ে বা ধরে শপথ করলে তা হবে কি না, এবং এই শপথ হলে তার কাফফারা দিতে হবে কি না। এর উত্তর হলো যে,মহান আল্লাহ ছাড়া আর কোনো কিছুর নামে শপথ করা যায় না।
হাদিস শরিফে আছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে শপথ করে, সে অবশ্যই কুফরি বা শিরক করল।’ (তিরমিজি: ১৫৩৫)
নবী করীম (সা.) বলেছেন, যে শপথ করতে চায় সে আল্লাহর নামে শপথ করবে। আর না হয় সে চুপ থাকবে। অন্য কারো নামে শপথ করতে পারবে না।
সা’দ ইবনু আবূ উবাইদাহ রহ. সূত্রে বর্ণিত, তিনি বলেন, আব্দুল্লাহ ইবন ওমর (রা.) এক ব্যক্তিকে এভাবে শপথ করতে শুনলেন, ‘না! এ কা’বার শপথ।’ তখন ইবন ওমর (রা.) তাকে বললেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহ ছাড়া অন্য কিছুর নামে শপথ করে সে শিরক করলো। (আবু দাউদ ৩২৫১)
অপর হাদিসে এসেছে, সাহাল ইবনে মিনজাব থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, যে ব্যক্তি কোরআন শরিফের কোন একটি সূরার কসম করবে সে ওই সূরার প্রত্যেকটি আয়াতের বদলায় একটি করে গুনাহ নিয়ে আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাত করবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা হাদীস ১২৩৬০)
তবে কোনো কিছু ছুঁয়ে যদি মহান আল্লাহর নামেই শপথ করে তাহলে তা শপথ বলে গণ্য হবে। আর সে শপথ রক্ষা করতে হবে। শপথ ভঙ্গ করলে কাফ্ফারা আদায় করতে হবে। এ হিসাবে কোরআন ছুঁয়ে শপথ করলেও তা শপথ বলে গণ্য হবে। তবে কারো মাথা ছুঁয়ে বা মাজার ছুঁয়ে শপথ করা যাবে না।
কোনো ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার নামে করা শপথ ভঙ্গ করলে ‘কাফ্ফারা’ স্বরূপ তিনটি কাজের যেকোনো একটি করতে হবে।
১. দশজন দরিদ্রকে মধ্যম শ্রেণির খাদ্য সকাল-বিকেল দুই বেলা খাওয়াতে হবে। এটি অর্থমূল্যে দিতে চাইলে প্রত্যেককে পৌনে দুই কেজি গম বা তার অর্থমূল্য দিতে হবে।
২. দশজন দরিদ্রকে ন্যূনতম ‘সতর ঢাকা’ (শরীরের যতটুকু অংশ ঢাকা ফরজ) পরিমাণ পোশাক-পরিচ্ছদ দান করতে হবে।
৩. ক্রীতদাস থাকলে একজনকে মুক্ত করে দিতে হবে।
তবে কেউ যদি এ আর্থিক কাফ্ফারা দিতে সমর্থ না হয়, তার জন্য কাফ্ফারা হলো তিনটি রোজা রাখা। হানাফি মাজহাব মতে, ওই রোজা ধারাবাহিকভাবে রাখতে হবে।