ধর্ম ডেস্ক: ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে নামাজ হলো দ্বিতীয়। এটি একটি ফরজ ইবাদত। একজন মুমিন দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করে থাকেন। এর মধ্যে রয়েছে ফজর, জোহর, আসর, মাগরিব ও এশা। প্রত্যেক নামাজের জন্য ওয়াক্ত নির্ধারিত থাকে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই নামাজ আদায় করা ফজর।
পবিত্র কুরআনে ৮২ বার নামাজের কথা এসেছে। ইরশাদ হয়েছে, যখন তোমরা সালাত (নামাজ) পূর্ণ করবে তখন দাঁড়ানো, বসা ও শোয়া অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ করবে। অতঃপর যখন নিশ্চিন্ত হবে, তখন সালাত (পূর্বের নিয়মে) কায়েম করবে। নিশ্চয়ই সালাত মুমিনদের ওপর নির্দিষ্ট সময়ে ফরজ। (সুরা নিসা, আয়াত: ১০৩)।
ওয়াক্তমতো নামাজ আদায় করা মহান রবের নিকট প্রিয় একটি আমল। আবদুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞাসা করলাম, কোন আমল আল্লাহর নিকট অধিক প্রিয়? তিনি বললেন, যথাসময়ে সালাত আদায় করা। ইবনু মাসঊদ (রা.) পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কোনটি? তিনি বললেন, এরপর পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার। ইবনু মাসঊদ (রা.) আবার জিজ্ঞাসা করলেন, এরপর কোনটি? রাসুল (সা.) বললেন, এরপর আল্লাহর পথে জিহাদ বা জিহাদ ফী সাবিলিল্লাহ। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫০২)
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসুল (সা.) বলেছেন- মুনাফিকদের জন্য সবচাইতে ভারী সালাত হলো এশা ও ফজরের সালাত। তারা যদি এই দুই সালাতে কী মর্যাদা আছে জানতে পারত, তবে হামাগুড়ি দিয়ে হলেও এ দুই সালাতে উপস্থিত হতো। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১৩৫৭)
এশার নামাজের ওয়াক্ত থাকে যতক্ষণ
কেউ কেউ মনে করেন রাত ১২টা পর্যন্ত এশার নামাজ পড়া যায়। তবে ঘড়ির কাটার হিসেবে নির্দিষ্ট সময় ধরে ওয়াক্ত নির্ধারণ সঠিক নয়।
হাদিস অনুসারে, সূর্য ডোবার পর থেকে ফজরের আজানের আগ পর্যন্ত সময়কে তিন ভাগে ভাগ করলে এর মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত এশার ওয়াক্ত থাকে। এই হিসাবে রাতের মধ্যভাগ ১২টাও হতে পারে বা তার পরেও হতে পারে।
যদি এশার নামাজ সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় শুরু হয় এবং ভোর সাড়ে ৪টার দিকে ফজর শুরু হয় তাহলে এশার ওয়াক্ত হলো সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৪টা পর্যন্ত। এর এক তৃতীয়াংশ হলো রাত সাড়ে ১০টা। এ ক্ষেত্রে এশার নামাজ আদায়ের উত্তম সময় হলো- প্রথম এক তৃতীয়াংশের শেষের দিকে এশার নামাজ পড়া।
আবদুল্লাহ ইবনু ওমর ইবনু আ’স (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- রাসুলুল্লাহকে (সা.) সালাতের ওয়াক্ত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন ফজরের সালাতের ওয়াক্ত সূর্যের ঊর্ধ্বাংশের উদয় না হওয়া পর্যন্ত। জোহরের সালাতের ওয়াক্ত মধ্যাকাশ থেকে সূর্য ঢলার পর আসরের সময় না হওয়া পর্যন্ত। আর আসরের ওয়াক্ত সূর্য হলুদ না হওয়া এবং তার নিম্নাংশ অস্ত না যাওয়া পর্যন্ত। একইভাবে মাগরিবের সালাতের ওয়াক্ত সূর্যাস্ত থেকে শাফাক (সূর্যের লাল আভা) গায়েব না হওয়া পর্যন্ত। এ ছাড়া এশার সালাতের ওয়াক্ত অর্ধরাত্রি পর্যন্ত। (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ১২৬৫)
যদি কেউ কোনো কারণে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এশার নামাজ আদায় করতে না পারেন তাহলে ফজরের ওয়াক্ত শুরুর আগে তা আদায় করে নিতে হবে। তবে এটা মাকরূহ। এ ক্ষেত্রে উত্তম হচ্ছে, যথাসময়ে সালাত আদায় করা।