স্টাফ রিপোর্টার \ রাজধানীর আগারগাঁও থেকে জ্বালানি তেল চুরি সিন্ডিকেটের চার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চোর চক্রটি প্রতিদিন সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের কমপক্ষে ৫০টি গাড়ি থেকে গড়ে তিন থেকে চার লিটার তেল চুরি করতো।
বুধবার বিকেলে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিসি এইচ এম আজিমুল হক।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- মো. আবু কালাম (৫৬), মো. সুমন (৪০), মো. বাবু (২১), মো. শাহিন (১৯)। এ সময় তাদের কাছ থেকে প্রায় ৬০০ লিটার অকটেন ও পেট্রল উদ্ধার করে পুলিশ।
ডিসি আজিমুল হক বলেন, আমাদের কাছে গোয়েন্দা তথ্য ছিল আগারগাঁওয়ে বিজ্ঞান প্রযুক্তি জাদুঘরের সামনের কয়েকটি দোকান সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অফিসিয়াল গাড়ির জ্বালানি তেল চুরি করে বিক্রি হচ্ছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে বুধবার দুপুরে তেজগাঁও জোনের এসি মো. মাহমুদ খানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে তিনটি দোকান থেকে প্রায় ৬০০ লিটার অকটেন ও পেট্রল উদ্ধার করা হয়। এ সময় চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত চক্রের সদস্যদের সূত্র ধরে তিনি বলেন, দোকানগুলো প্রতি লিটার অকটেন ১০০ টাকায় কিনতো। এরপর খোলাবাজারে ১২৮ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি করতো। প্রতি লিটার পেট্রল ১১০ টাকায় কিনে ১৩০ টাকা এবং প্রতি লিটার ডিজেল ১০০ টাকায় কিনে ১০৮ থেকে ১১০ টাকায় বিক্রি করতো।
ডিসি আজিমুল হক বলেন, প্রতিটি সরকারি গাড়ি থেকে তিন থেকে চার লিটার তেল ক্রয় করতো এবং দৈনিক ৪৫ থেকে ৫০টি গাড়ি থেকে তেল সংগ্রহ করতো অর্থাৎ প্রতিদিন একটি দোকানে সরকারি গাড়ি থেকে আনুমানিক ২০০ লিটার তেল ক্রয় করতো। যার মাসিক হিসাব প্রায় ৬ হাজার লিটার দাঁড়ায়। ‘এ রকম মোট তিনটি দোকানে মাসে প্রায় ১৮ হাজার লিটার চোরাই তেল ক্রয়-বিক্রয় হয়ে আসছিল। যার আনুমানিক মূল্য ১৮ লক্ষ টাকা। আগারগাঁও এলাকায় অনেক সরকারি অফিস রয়েছে এই কারণে চক্রটি এই এলাকাকে টার্গেট করে এমন অসাধু কার্যক্রম চালিয়ে আসছিল বলে তদন্তে পাওয়া যায়।’
তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার আরও বলেন, সুনির্দিষ্ট কিছু তথ্য পেয়েছি যা যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি যে সরকারি কর্মকর্তাদের গাড়িচালক এই তেল চুরি চক্রের সঙ্গে জড়িত তাদেরও বিষয়টি জানানো হবে।
তেজগাঁও বিভাগ এলাকায় এ রকম চোরাই তেল বেচা-কেনা চক্র আরও থাকলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।