স্টাফ রিপোর্টার- ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বেলসাড়া গ্রামের মোশারফ হোসেন (৫৫) নামের এক কৃষকের সাজার সংবাদ পেয়ে ছেলে ক্ষমা চাইতে গেলে বাবার সঙ্গে ছেলেকেও কারাগারে পাঠিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার যোবায়ের হোসেন। এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
শুক্রবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বড়পলাশ বাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান সাহাবউদ্দীন।
এলাকাবাসী ও ভুক্তভোগীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জেলার বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার বেলসাড়া গ্রামের কৃষক মোশারফ হোসেন পৈতৃক ও কবলা সূত্রে জমি কিনে প্রায় ২০ বছর আগে টিনসেড বিল্ডিং নির্মাণ করে বসবাস করছিলেন। কিন্তু গ্রামের কতিপয় ব্যক্তি সুপরিকল্পিতভাবে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে রেকর্ডিয় রাস্তায় পাকা ঘর নির্মাণ করেছে মর্মে ইউএনও’র বরবারে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগে ইউএনও ওই কৃষককে তার স্থাপনা সরিয়ে নিতে সময় বেঁধে দেন। কিন্তু মোশারফ হোসেন আর্থিক সংকটের কারণে স্থাপনা সরিয়ে নিতে পারেননি।
গত বুধবার (৩১ আগস্ট) বিকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ,ফোর্স, সার্ভেয়ার ও মিস্ত্রীসহ গিয়ে মোশারফ হোসেনের সীমানা পাচীর ও শয়ন ঘরের একটি কক্ষের ওয়াল (আংশিক) ভেঙে দেন। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের হস্তক্ষেপে ওয়াল ভাঙা বন্ধ করেন।
এরপর স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদে ডেকে মোশারফ হোসেনের কাছে অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর চান। কিন্তু তিনি অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে রাত ৮টার দিকে ওই কৃষককে সঙ্গে নিয়ে যেতে বলেন। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে গেলে ইউএনও ফের অঙ্গীকারনামায় স্বাক্ষর চান, তিনি আবারও স্বাক্ষর দিতে অস্বীকৃতি জানায়। পরে ইউএনও ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে কৃষক মোশারফ হেসেনকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। এই সংবাদ পেয়ে ছেলে মাহফুজ (৩০) ইউএনও অফিসে গিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করলে ছেলেকেও তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন ইউএনও।
মাহফুজের স্ত্রী রিনা আক্তার বলেন, ‘এলাকার একটি কুচক্রী মহল মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে আমাদের পরিবারকে হয়রানি করে আসছে। আমার স্বামী ও শ্বশুর ন্যায়বিচার হতে বঞ্চিত হয়েছে।’
বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ যোবায়ের হোসেন বলেন, ‘রেকর্ডিয় রাস্তায় ওই ব্যক্তি পাকাঘর নির্মাণ করায় এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে এবং সরকারি কাজে বাধা সৃষ্টি করায় তাদের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।’
স্থানীয় এক আইনজীবী জানান, ‘উপজেলা নির্বাহী অফিসার যে কাজটি করেছেন তা সংবিধান পরিপন্থী।’