স্টাফ রিপোর্টার – বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ভাষণ সবার জন্যই বিশেষ কিছু। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ঐতিহাসিক ভাষণের অনুবাদ সম্বলিত একটি বই উপহার দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার ভারত সফরে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এদিন স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৪০ মিনিটে দিল্লির পালাম বিমানবন্দরে পৌঁছান তিনি। সফরের দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাতটি সমঝোতা চুক্তি সই হয়েছে। দিল্লির হায়দরাবাদ হাউজে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মধ্যে দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পর এসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
চুক্তি স্বাক্ষরের আগে রাষ্ট্রীয় সফরে ভারতে যাওয়া বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নয়াদিল্লিতে রাষ্ট্রপতি ভবনে আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে তার আগমনে রাষ্ট্রপতির বাসভবন রাষ্ট্রপতি ভবনের ফোরকোর্টে স্বাগত জানান।
এছাড়া সফরের প্রথম দিন সোমবার রাজধানী নয়াদিল্লির নিজামুদ্দিন দরগাহ ও মাজারে গিয়ে কার্যত আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, নিজের পিতার হত্যার পরে দিল্লিতে নির্বাসনে থাকার সময় তিনি প্রথম এই দরগাহ পরিদর্শন করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার এই সফর সম্পর্কে একটি অস্বাভাবিক অনুভূতি ছিল, এটি খুব আধ্যাত্মিক জায়গা। আমি তখন গিয়ে আমার বাবার (বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের) ডায়েরি পড়ি এবং জানতে পারি, তিনি ১৯৪৬ সালের ৯ এপ্রিল নিজামুদ্দিনের দরগায় এসেছিলেন। বৃহস্পতিবার ভারতের রাজস্থান রাজ্যের আজমীর শরীফ দরগাহ পরিদর্শন করবেন শেখ হাসিনা।
ভারত প্রধানমন্ত্রী ও বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী একান্ত বৈঠক হয়। তারপর দ্বিপাক্ষীক বৈঠকও হয়। বৈঠক শেষে ৭টি চুক্তি ও সমঝোতা সই হয়। রাজঘাটে মহাত্মা গান্ধীর সমাধি সৌধে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি স্মারক বইতে সাক্ষর করেন। রাষ্ট্রপতির দেহরক্ষীদের একটি অশ্বারোহী দল রাষ্ট্রপতি ভবনের গেট থেকে ফোরকোর্ট পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর মোটর শোভাযাত্রাকে এসকর্ট করে। পরে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার প্রদান করে। এ সময় দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। এরপর শেখ হাসিনা গার্ড পরিদর্শন করেন এবং সালাম গ্রহণ করেন। এরপর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী প্রেজেন্টেশন লাইনে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার মন্ত্রিসভার সহকর্মীদের পরিচয় করিয়ে দেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার সফরসঙ্গীদের পরিচয় করিয়ে দেন।
নিরাপত্তা সহযোগিতা, বিনিয়োগ, বর্ধিত বাণিজ্য সম্পর্ক, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সহযোগিতা, অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, রোহিঙ্গা সমস্যা, পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনা, সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, মাদক চোরাচালান এবং মানবপাচার প্রতিরোধে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচনার এজেন্ডার শীর্ষে ছিল।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় কোয়াত্রার বরাত দিয়ে ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক নানা ইস্যুতে বিশদ আলোচনা হয়েছে। উভয় নেতা সন্ত্রাস দমনের মতো বিষয়গুলোতে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা অব্যাহত রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা রয়েছে।