স্টাফ রিপোর্টার – ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে পদ্মা সেতু দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশিই এমনটি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদিকে পদ্মা সেতু দেখতে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। কারণ, এটা শুধু বাংলাদেশ নয়; এই অঞ্চলের সব দেশই কম-বেশি উপকৃত হবে।’
নয়াদিল্লির হোটেল আইটিসি মৌরিয়াতে ফেডারেশন অফ বাংলাদেশ চেম্বারস অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) এবং কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি (সিআইআই) আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অংশ নেন বাণিজ্যমন্ত্রী। এ অনুষ্ঠানেই বাণিজ্যমন্ত্রী এমন কথা জানিয়েছেন।
পদ্মা সেতুর উদ্বোধন হয় এ বছর ২৫ জুন। এ সেতু উদ্বোধন উপলক্ষে বাংলাদেশ সরকার ও জনগণকে শুভেচ্ছা জানায় ভারত। ঢাকার ভারতীয় হাইকমিশন থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অভিনন্দন জানানো হয়। ভারতীয় হাইকমিশন থেকে দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘যুগান্তকারী পদ্মা সেতু প্রকল্পের সফল সমাপ্তিতে বাংলাদেশ সরকার এবং জনগণকে ভারত সরকার ও দেশটির জনগণের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। প্রতীক্ষিত এই সেতু প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী সিদ্ধান্ত ও দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রতিফলন ঘটেছে। বাংলাদেশ যখন একাই প্রকল্পটি এগিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তখন আমরা পাশে ছিলাম।’
এই সেতু বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে যোগাযোগকে আরও সহজ করবে উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘পদ্মা সেতু কেবল বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থারই উন্নয়ন করবে না। বরং ভারত ও আমাদের অভিন্ন উপ-অঞ্চলকে সংযুক্ত করবে এবং ব্যবসার সম্প্রসারণে সহায়ক হবে।’
বিজ্ঞপ্তিতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০তম বার্ষিকীতে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনে ভারতের জনগণ আবারও ভ্রাতৃপ্রতিম বাংলাদেশের জনগণকে অভিনন্দন জানায়। ২০১৫ সালে ভারত বাংলাদেশকে ২০ কোটি মার্কিন ডলার মঞ্জুরি সহায়তা দিয়েছিল। বাংলাদেশ সরকার সেই সহায়তা পদ্মা সেতুতে কাজে লাগানোর ঘোষণা দিয়েছিল।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হয়। ২০১৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর ৩৭ ও ৩৮ নম্বর খুঁটিতে প্রথম স্প্যান বসানোর মধ্য দিয়ে দৃশ্যমান হয় স্বপ্নের পদ্মা সেতু। এরপর একে একে ৪২টি পিলারে ১৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের ৪১টি স্প্যান বসিয়ে ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতু পুরোপুরি দৃশ্যমান হয়েছে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর। একই সাথে চলতে থাকে রোডওয়ে, রেলওয়ে স্ল্যাব বসানো সহ অন্য কাজ। সেতুর মূল আকৃতি দোতলা। কংক্রিট ও স্টিল দিয়ে নির্মিত হয় এ সেতুর কাঠামো। মূল সেতু নির্মাণের জন্য কাজ করে চীনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি (এমবিইসি) ও নদীশাসনের কাজ করে দেশটির আরেকটি প্রতিষ্ঠান সিনো হাইড্রো করপোরেশন। দুটি সংযোগ সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ করেছে বাংলাদেশের আবদুল মোমেন লিমিটেড। ভারত সফরে গিয়ে মোদিকে পদ্মা সেতু দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।