Search
Close this search box.

শেখ রেহানার ৬৭তম জন্মদিন আজ

শেখ রেহানার ৬৭তম জন্মদিন আজ

স্টাফ রিপোর্টার – জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোট মেয়ে শেখ রেহানার ৬৭তম জন্মদিন আজ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বোন ১৯৫৫ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছাসহ পরিবারের সদস্যদের নির্মমভাবে হত্যা করে। সে সময় শেখ হাসিনার স্বামী এম ওয়াজেদ মিয়ার কর্মস্থল জার্মানির কার্লসরুইয়ে বড় বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে থাকায় বেঁচে যান তিনি। সেখান থেকে ভারতে চলে যান দুই বোন। শেখ রেহানা পরে পরিবার নিয়ে লন্ডনে চলে যান। শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হয়েও কখনও রাজনীতিতে আসেননি শেখ রেহানা। তবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রামে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনাসহ সক্রিয় রাজনীতিবিদদের অনুপ্রেরণা ও সহযোগিতা দিয়ে গেছেন। জনহিতৈষী কাজে সব সময়ই ভূমিকা রেখেছেন শেখ রেহানা।

ধানমন্ডিতে তার নামে বরাদ্দ বাড়িটিও দিয়েছেন দেশের কাজে। বঙ্গবন্ধুর ছোট মেয়ে শেখ রেহানা, সবার কাছে ‘ছোট আপা’ বলে পরিচিত। অধ্যাপক ড. শফিক আহমেদ সিদ্দিক ও শেখ রেহানা দম্পতির তিন ছেলেমেয়ে। তাদের মধ্যে বড় মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিক ব্রিটিশ পার্লামেন্টে লেবার পার্টির একজন এমপি। ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক আওয়ামী লীগের গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এর ট্রাস্টি। আর ছোট মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক লন্ডনে কন্ট্রোল রিস্কস নামে একটি প্রতিষ্ঠানের গ্লোবাল রিস্ক অ্যানালাইসিস সম্পাদক।

বঙ্গবন্ধু ১৯৫৪ সালের ৩০ মে থেকে ১৯৫৫ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত কারাগারে ছিলেন। পুনরায় তিনি কারাগারে নিক্ষিপ্ত হন ১৯৫৮ সালের ১২ অক্টোবর। অর্থাৎ শেখ রেহানার জন্ম থেকে বেশ কয়েক বছর বঙ্গবন্ধুর মুক্ত জীবনে বিচরণের সুযোগ ঘটেছিল। বড় মেয়ের মতোই ছোট মেয়ের প্রতি ছিল তার অপত্যস্নেহ ও মমত্ববোধ। তার প্রকাশ রয়েছে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’য়। যেমন :একটি অংশ—‘ছোট মেয়েটার (শেখ রেহানা) শুধু একটা আবদার। সে আমার কাছে থাকবে। আর কেমন করে কোথায় থাকি তা দেখবে। সে বলে, থেকে যেতে রাজি আছি।’ (১৫ জুন ১৯৬৬, বুধবার, কারাগারের রোজনামচা)

১৯৭৫ সালের শোকাবহ এই কালোদিবসে সূর্য ওঠার আগে খুব ভোরে সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপদগামী সদস্য  ধানমন্ডির বাসভবনে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে। ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ হারিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধু সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল। বঙ্গবন্ধুর দুই মেয়ে শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা দেশের বাইরে থাকায় সে সময় প্রাণে বেঁচে যান। বড় বোন শেখ হাসিনার সঙ্গে সে সময় জার্মানীতে ছিলেন শেখ রেহানা। শেখ হাসিনার স্বামী এম ওয়াজেদ মিয়ার কর্মস্থল ছিল জার্মানির কার্লসরুইয়ে। সেখান থেকে পরে ভারতে চলে যান দুই বোন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর শেখ রেহানা যুক্তরাজ্যে রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেন। ব্রিটিশ সরকার তার প্রার্থনা মঞ্জুর করেন। সেখানেই অদ্যাবধি অবস্থান করছেন তিনি।

শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হয়েও সক্রিয় রাজনীতির সামনের সারিতে আসেননি শেখ রেহানা। তবে তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন-সংগ্রাম এবং আওয়ামী লীগের প্রতিটি সংকটে বড় বোন শেখ হাসিনার পাশে থেকে সহযোগিতা করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারের দাবিতে বিদেশে জনমত গঠনে অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন শেখ রেহানা।

২০০৭-০৮ সালে ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে জরুরি অবস্থা চলাকালে শেখ হাসিনা কারাবন্দি হয়েছিলেন। সে সময়ও শেখ রেহানা তাঁর বোনের মুক্তি আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। পর্দার আড়ালে থেকে দলের ঐক্য বজায় রাখতে লন্ডন থেকেই তিনি ব্যাপক তৎপরতা চালান। ওই দুঃসময়ে দলের নেতাকর্মীদের সাহস জোগান তিনি। জাতির জনকের ছোট কন্যা শেখ রেহানা বর্তমানে লন্ডনে অবস্থান করছেন। লন্ডন প্রবাসী হলেও শেখ রেহানা বছরের একটি বড় সময় দেশেই কাটান।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

সর্বশেষঃ