স্টাফ রিপোর্টার-বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন পাঁচ বছরে পাঁচ সপ্তাহও ঘরে থাকতে পারেননি বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
রবিবার বেলা ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মেট্রোরেল-১ (এমআরটি লাইন-১) -র নির্মাণকাজ তদারকির জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, ফখরুল সাহেবকে বিকেলে আমন্ত্রণ জানিয়েছি, একটা জেলা সম্মেলনে কত মানুষ হয় দেখার জন্য। লাখ বলে বলে মনকলা খাচ্ছেন চিত্তকে সুখ দেওয়ার জন্য। ভুলে গেছেন, আওয়ামী লীগের অফিসের সামনে ফুটপাতের উপর আমরা মিটিং করতে পারিনি, বাধা কাকে বলে। মোহাম্মদ নাসিম নেই, মতিয়া চৌধুরীকে পেটানো হয়েছে। সাধারণ একটা সমাবেশে আব্দুস সামাদকেও রেহাই দেওয়া হয়নি, তিনিও হাসপাতালে গেছেন। বিএনপি বাধার কথা বলে, জাতীয় পার্টিও বলছে তাদের রাস্তায় নামতে দেওয়া হচ্ছে না। এ অবস্থা তো আমাদের উপরও ছিল। কি না করেছে তারা।
তিনি বলেন, বিএনপির আমলে পাঁচ বছরে পাঁচ সপ্তাহও আমি আমার ঘরে থাকতে পারিনি। কিন্তু তারা সবাই নিজের ঘরে অবস্থান করছেন। মরা গাঙ্গে জোয়াড় আর আসবে না। গণমাধ্যমকর্মীরা এতদিন পর ঘুমিয়ে থাকাদের জেগে উঠতে দেখে বড় করে ছবি প্রচার করেছে।
বিএনপির কর্মসূচির প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ কোন পাল্টা কর্মসূচি দেবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপির সঙ্গে কিসের পাল্টাপাল্টি। প্রতিদিন আমাদের প্রোগ্রাম হচ্ছে। লাখ লাখ লোক দেখবেন? আসেন। ২৯ তারিখ ঢাকা মহানগর সম্মেলন করব, সেখানে আসেন।
তিনি বলেন, ক্ষমতার পালাবদলে নির্বাচনই সেফ এক্সিট । সম্প্রতি পদত্যাগ করে সেফ এক্সিট নিতে ক্ষমতাসীনদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তা না হলে পালানোর পথ খুঁজে পাবে না বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
এ বিষষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ফখরুল সাহেবের নিজের সেফ এক্সিট নেই। তার নিজেরই সেটা দরকার। যেভাবে লাঠিসোটা নিয়ে নেমেছেন এবং আবার অগ্নি সন্ত্রাসের আভাস দিচ্ছেন- এর পরিনাম শুভ হবে না। আমরা এক্সিট করবো না, আমরা ফাইটার, ফাইট করবো। বন্দুকের নল আমাদের ক্ষমতার উৎস নয়। আওয়ামী লীগের রাজনীতির ইতিহাসে ষড়যন্ত্র নেই। সেফ এক্সিট নির্বাচন, এটি সবার জন্য সেফ এক্সিটের জায়গা। আপানার পরিবর্তন চাইলে নির্বাচনে আসুন। অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় বাংলাদেশেও সেভাবে হবে। যাদের কাছে নালিশ করেন তাদের কোথায় তত্ত্বাবধায়ক আছে? এই ভূত মাথা থেকে নামান। পালিয়েছেন আপনারা, পালানোর দল বিএনপি।
তিনি বলেন, কেউ যদি বলে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কোথায়? তিনি তো পালিয়ে আছেন। নির্বাচনে আসেন আমরা প্রস্তুত আছি। জনগণ আপনাদের চাইলে, আমরা সেটিকে গ্রহণ করবো। ওটা ডিসাইড করার ক্ষমতা জনগণের। কয়েক হাজার লোক হলেই শুধু লক্ষ না, লক্ষ-লক্ষ বলা হয়। চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনায় কত হয়েছে সেটি সাংবাদিকরা দেখেছেন। এর সঙ্গে বাস্তবতার মিল নেই।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, আওয়মী লীগ কি পালানোর দল, তারা কেন পালাবে? পালিয়েছেন যিনি আপনাদের মূল নেতা। যিনি টেমস নদীর পার থেকে ফরমায়েশ দেন। যার নির্দেশে চলেন তিনি তো কাপুরুষের মতো মুচলেকা দিয়ে পালিয়েছেন লন্ডনে। দেশে ফেরার সৎ সাহস পেলেন না। তিনি নাকি আবার গণ অভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেবেন! পাগলে কী না বলে ছাগলে কী না খায়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির সমাবেশ হলে বাস ধর্মঘট হয়। তিনি প্রশ্ন করেন, চট্টগ্রামে কি বাস বন্ধ ছিল। বাস-মালিকদের সেটি জিজ্ঞাসা করুন। আমি যখন মন্ত্রী তখন যে তারা (বাস-মালিক) আমাদের বিরুদ্ধে ধর্মঘট করেছে। বেসরকারি গাড়ি চালাবে কি না চালাবে সেটি আমি জোর করতে পারি না। আমার বিরুদ্ধে যখন করে তখন আপনারা দেখেন না?
তিনি বলেন, বিএনপির কর্মসূচিতে পরিবহন মালিকরা ভয় পান । তারা জানমালের ক্ষতির ভয় পান। সে কারণে পরিবহন বন্ধ করে। আমরাতো আর বিআরটিসির বাস বন্ধ করিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সমাবেশ সামনে রেখে বিএনপি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করছে। বিএনপি লাঠিতে কেন পতাকা টানায়, এটা কিসের আলামত এই প্রশ্নও করেন তিনি।
১০ ডিসেম্বর থেকে বিএনপি দেশ চালাবে এ বক্তব্যের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাদের বলেন, এটা রঙিন খোয়াব। বিএনপি মুক্তিযুদ্ধে বিশ্বাস করে না। ডিসেম্বর বিজয়ের মাস, এই বিজয়ের মাসে আমরাই উজ্জ্বীবিত থাকবো।
এর আগে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের অগ্রগতি হয়েছে। এর অন্যতম উদাহরণ হলো- নিউইয়র্ক টাইমস লিখেছে, বাংলাদেশের দিকে তাকাও। আর এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্যই সম্ভব হয়েছে।