মিথুন আশরাফ – অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে, বিদায় করে কাতার ফুটবল বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গেছে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। নকআউট পর্বে, শেষ ষোলতে ২-১ গোলে অস্ট্রেলিয়াকে হারায় আর্জেন্টিনা। প্রথম গোল করেন লিওনেল মেসি। নিজের ১০০০তম ম্যাচ খেলতে নেমে বিশ্বকাপে প্রথমবার নকআউট পর্বে গোল করেন মেসি। দ্বিতীয় গোল করেন জুলিয়ান আলভারেস। অস্ট্রেলিয়াও একটি গোল করে। তবে নিজেদের জালে ভুল করে বল জড়ান আর্জেন্টিনার মিডফিল্ডার ফার্নান্দেজ।
বিশ্বকাপের গত আসরে সেরা ষোল থেকেই বিদায় নিয়েছিল আর্জেন্টিনা। এবার কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে। এখন ৯ ডিসেম্বর কোয়ার্টার ফাইনালে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে লড়াই করবে আর্জেন্টিনা। জিতলে সেমিফাইনালে উঠে যাবে। ২০১৪ সালের বিশ্বকাপের পর আবার সেমিফাইনাল খেলবে আর্জেন্টিনা।
আহমেদ বিন আলী স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ১ টায় আর্জেন্টিনা ও অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচটি শুরু হয়। ম্যাচটিতে আক্রমন খুব সাবধানে খেলে মেসিরা। ৩৫ মিনিটে ডিবক্সের মাঝখান থেকে শট নিয়ে গোল করে দলকে এগিয়ে দেন মেসি। ১-০ গোলে এগিয়ে যায় আর্জেন্টিনা। এই ১ গোল করে অনেক অর্জন করেছেন মেসি। ডিয়েগো ম্যারাডোনার (৮ গোল) চেয়ে বিশ্বকাপে বেশি গোল করেন মেসি। নিজের ১০০০তম ম্যাচ খেলতে নেমে গোল পান। সেটি আবার বিশ্বকাপে নকআউট পর্বে মেসির প্রথম গোলও হয়।
প্রথমার্ধে ১ গোলই হয়। মেসি গোলটি করেন। দ্বিতীয়ার্ধে ৫৭ মিনিটে জুলিয়ান আলভারেস গোল করে আর্জেন্টিনাকে আরও এগিয়ে দেন (২-০)। অস্ট্রেলিয়া অনেক পেছনে পড়ে যায়। আর্জেন্টিনা অনেক এগিয়ে থাকে। অসাধারণ খেলতে থাকেন মেসিরা। ৭৭ মিনিটে একটি গোল খায় আর্জেন্টিনা। নিজেদের জালে নিজেরাই বল পাঠায় (২-১)। ফার্নান্দেজের পায়ে লেগে বল জালে জড়ায়।
গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয়ার শঙ্কায় পড়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনা। সৌদি আরবের কাছে ১-২ গোলে হেরে যায়। এরপর শেষ ষোলতে নাম লেখাতে হলে মেক্সিকো ও পোল্যান্ডকে হারাতেই হতো আর্জেন্টিনাকে। দুই দলকেই ২-০ গোলে হারায় আর্জেন্টিনা। দাপটের সঙ্গেই জিতে। ৬ পয়েন্ট নিয়ে ‘সি’ গ্রুপের গ্রুপ সেরা হয়েই শেষ ষোলতে খেলতে নামে। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষেও জয় পেয়ে যায়।
কাগজে-কলমের হিসেবে আকাশী-নীলরা অনেকটাই অস্ট্রেলিয়ার চেয়ে এগিয়ে থাকে। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে বর্তমানে তিনে আর্জেন্টিনা। ৩৮তম স্থানে অস্ট্রেলিয়া। মুখোমুখি লড়াইয়ের ইতিহাস আর্জেন্টিনার পক্ষেই কথা বলে। ৭ বারের দেখায় আর্জেন্টিনা এরআগে জিতেছে ৫ বার। একবার জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। একটি ম্যাচ হয়েছিল ড্র।
বিশ্বকাপের ইতিহাসে এরআগে কখনোই মুখোমুখি লড়াই করেনি দুই দল। ১৯৯৪ বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে প্লে-অফ ম্যাচে অবশ্য লড়েছিল। প্রথম লেগের খেলাটি ১-১ গোলে ড্র হয়। ফিরতি লেগে ২-১ গোলে জিতে মূলপর্বের টিকিট কেটেছিল ডিয়েগো ম্যারাডোনার দল। আর্জেন্টিনাকে হারাতে অবশ্য সুদূর অতীত থেকে অনুপ্রাণিত হতে পারত অস্ট্রেলিয়া। ১৯৮৮ সালে তখনকার বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়ে অজিরা বিস্ময় জাগিয়েছিল। সেটাই ছিল দুদলের প্রথম আন্তর্জাতিক দেখা। ৩২ বছর আগের সেই মধুর স্মৃতি কাতারে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করেছিল অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু মেসির দল তা হতে দেয়নি। অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে যায় মেসির আর্জেন্টিনা।