স্টাফ রিপোর্টার- রাজধানীর বংশাল এলাকা থেকে সাংবাদিক ও আর্থিক গোয়েন্দা পরিচয়ে মাদক পাচারকালে বিপুল পরিমাণ গাঁজাসহ ৪ মাদক ব্যবাসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার দুপুরে র্যাব-৩ সদর দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৩ অধিনায়ক লে. কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ।
তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে র্যাব-৩ এর একটি অভিযানিক দল সোমবার দিবাগত রাতে রাজধানীর বংশাল এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে একটি প্রাইভেটকার থেকে বিশেষ কায়দায় প্যাকেট অবস্থায় তিন ব্যাগ ভর্তি ৫০ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়।
এসময় গ্রেফতার করা হয়, মুকুল হোসেন ওরফে মকবুল আহমেদ (৪৪), আব্দুল শাহীন ওরফে নোমান হোসেন (৩৩), ফয়সাল (২৭) ও আল-আমিন হোসেন (২৪)। গ্রেফতারকালে তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন পত্র পত্রিকার সাংবাদিকদের ভিজিটিং কার্ড, বিভিন্ন মিডিয়ার লোগো সংবলিত স্টিকার, ভূয়া আইডি কার্ড, দৈনিক মাতৃভুমি লোগো সংবলিত মাইক্রোফোন , চারটি মোবাইল ফোন জব্দ করে র্যাব সদস্যরা।
তিনি আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় পত্রিকা দৈনিক মাতৃভূমির খবর এর সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার পরিচয় দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাদক কারবার চালিয়ে আসছিলেন মুকুল হোসেন ওরফে মকবুল আহমেদ (৪৪)। মাদক পরিবহনে তার প্রধান সহযোগী ফয়সাল (২৭) বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত গাড়ির চালক। ছুটির দিনে বা অবসর সময়ে ওই ব্যাংক কর্মকর্তার আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট স্টিকার সম্বলিত গাড়িটি মাদক পাচারে ব্যবহার করতেন ফয়সাল।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটকদের কাছ থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তিনি জানান, এ চক্রের মূলহোতা মুকুল হোসেন। গাড়িতে আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিটের স্টিকার ব্যবহার করে চক্রটি সহজেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিতেন।গ্রেফতারকৃত মুকুল ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন পরিবহনের চালক হিসেবে কাজ করতেন। গত জুন মাস থেকে দৈনিক মাতৃভূমির খবর-এর চালক হিসেবে চাকরি শুরু করেন। এ সুযোগে সাংবাদিকতার লোগো ব্যবহার করে মাদক চোরাচালানের কাজ চালাতেন।
দুই মাস আগে চাকরিচ্যুত হলেও পত্রিকার লোগো সম্বলিত একটি মাইক্রোফোন মাদক বহন করা গাড়িতে রাখতেন। তল্লাশির মুখে পড়লে নিজেকে সিনিয়র ক্রাইম রিপোর্টার বলে পরিচয় দিয়ে সহজেই পার পাওয়ার চেষ্টা করতেন। এছাড়া, আটক শাহীন ও আল-আমিন বিভিন্ন জায়গা থেকে গাঁজাসহ অন্যান্য মাদক ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করে আসছিলেন। তাদের সবার নামেই বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে।
অধিনায়ক আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ আরও বলেন, সাংবাদিকতার মত একটি মহান পেশাকে তারা কলুষিত করেছে। র্যাবের এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি । আটকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।