স্টাফ রিপোর্টার- বিএনপির শাসনামলে নিখোঁজ বা গুম ও হত্যার শিকার হওয়া ব্যক্তিদের তালিকা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
বিএনপি ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা ঘোষণায় বলেছে— গত দেড় দশক ধরে গুম, হত্যা ও নির্যাতন হয়েছে এর প্রত্যেকটির বিচার করবে তারা। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমরাও একটা স্টেপ নিচ্ছি। বিএনপির শাসনামলে ওই সময়ে হাজার হাজার মানুষ নিখোঁজ হয়েছে, বিচারহীনভাবে হত্যা করা হয়েছে, তাদেরও একটা তালিকা তৈরি করছি। এটা একটা গণদাবিতে পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, ‘সেই সময় মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হয়। ২০০১ থেকে ২০০৬ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা ও গুম করা হয়। আমরা সেগুলোর একটা রিপোর্ট তৈরি করছি। সবকিছু নিয়েই তদন্ত হোক, সবকিছু নিয়েই একটা ব্যবস্থা হোক, এটা আমরাও চাই।
সোমবার সচিবালয়ে আসন্ন বড়দিন উদযাপন এবং থার্টি ফার্স্ট নাইটে আইন-শৃঙ্খলা ও আনুষঙ্গিক বিষয়সংক্রান্ত সভা শেষে এক প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন মন্ত্রী।
থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে আগামী ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত সব বার বন্ধ থাকবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মাদকদ্রব্যের অপব্যবহাররোধে ২৮ থেকে ৩১ ডিসেম্বর বিশেষ অভিযান চলবে। ৩১ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ১ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টা সব বার বন্ধ থাকবে।
এদিকে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে আতশবাজি ও পটকা না ফোটাতে সবার প্রতি আহ্বান জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মন্ত্রী জানান, এবার পাঁচ হাজার ৬৮২টি চার্চে বড়দিন উদযাপন করা হবে। সব চার্চেই নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হবে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের নেতা, যাদের মাঝি বলা হয়, তাদের অনেককে হত্যার দৃশ্য আমরা ইতোমধ্যে দেখেছি। এ বিষয়ে আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোকে আরও সতর্ক অবস্থানে থাকার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি। ক্যাম্পগুলোর চারপাশে নিরাপত্তা বেষ্টনীর নির্মাণের জন্য সেনাবাহিনীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, সেটারও ৯৯ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে। শুধু মনিটরিংয়ের জন্য যে ক্যামেরাগুলো বসানো হয়েছে, সেগুলোর মনিটরিং রুমের কাজ বাকি রয়েছে।
রোহিঙ্গাদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য সেখানে একটি হাসপাতাল তৈরি করা হচ্ছে বলেও জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কাজ চলছে। রোহিঙ্গা নারী ও শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রম ছাড়াও বিভিন্ন কল্যাণমূলক কাজ চলমান রয়েছে। মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়সহ অন্যান্য মন্ত্রণালয় তাদের নিয়ে কাজ করছেন। রোহিঙ্গাদের কর্মক্ষম করে তুলতে ব্র্যাকসহ অনেকগুলো এনজিও কাজ করছে।
রোহিঙ্গাদের ফেরত নেওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়সহ আমরা সবাই কাজ করছি। যাতে তারা দ্রুত তাদের দেশে ফিরে যেতে পারে। আমেরিকা ও অস্ট্রেলিয়াসহ কয়েকটি দেশ অল্প কয়েকজনকে তাদের দেশে নিয়েছে। যা একেবারেই হাতে গোণা (সংখ্যায় কম)। আমরা সবার কাছে অনুরোধ জানিয়েছি, রোহিঙ্গাদের হারানোর আর কিছু বাকি নেই। সেজন্য ষড়যন্ত্রকারীদের যে কোনও খপ্পরে তারা পড়তে পারে। সন্ত্রাসী কার্যক্রমসহ যে কোনও অপরাধমূলক কাজে জড়িয়ে পড়তে পারে।