স্টাফ রিপোর্টার – নয়াপল্টন থেকে মগবাজার পর্যন্ত বিএনপির গণমিছিল শুক্রবার। বিএনপির পূর্বঘোষিত গণমিছিল কর্মসূচি অনুযায়ীই নয়াপল্টন থেকে শুরু হয়ে মগবাজার চৌরাস্তায় গিয়ে শেষ হবে বলে জানিয়েছেন দলটির ভাইস-চেয়ারম্যান ও ঢাকা বিভাগীয় গণমিছিলের প্রধান সমন্বয়ক ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন। তিনি বলেন, আমাদের গণমিছিল হবে শান্তিপূর্ণ।
নেতাকর্মীরা জমায়েত হবে দুপুর ২টায়। মিছিলটি নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু হবে। এরপর কাকরাইল, শান্তিনগর, মালিবাগ হয়ে মগবাজার চৌরাস্তা ঘুরে ফের নয়াপল্টনে এসে শেষ হবে। বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকাবাসীকে গণমিছিল সফল করার আহ্বান জানিয়ে ডা. জাহিদ বলেন, গণমিছিল করা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। সেটার জন্যই আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়ার জন্য ডিএমপি কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। ডিএমপি আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন – বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, ইকবাল হোসেন শ্যামল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্য সচিব আমিনুল হক, ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নিপুন রায় চৌধুরী।
গত ১০ ডিসেম্বর ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশে যুগপৎ আন্দোলনের জন্য প্রথমবারের মত ১০দফা দাবি উত্থাপন করে বিএনপি। রাজধানীর গোলাপবাগ মাঠে সেই সমাবেশে কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। যেখানে ২৪ ডিসেম্বর যুগপৎ আন্দোলনের প্রথম কর্মসূচি হিসেবে সারা দেশে গণমিছিলের ডাক দেয় তারা। তবে একইদিন আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠানের ঘোষণা ছিল অনেক আগে থেকেই। এরপর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিএনপির কর্মসূচির তারিখ পরিবর্তনের অনুরোধ করা হলে তারা নতুন করে গণমিছিলের তারিখ ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করে।
বিএনপিকে গণমিছিলের অনুমতি দেয়া হয়েছে। ঢাকায় বিএনপিকে গণমিছিল করার অনুমতি দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, গণমিছিলে সুনির্দিষ্ট কোনো শর্ত দেওয়া হয়নি। তবে তাদের শান্তিপূর্ণভাবে গণমিছিল করতে বলা হয়েছে।
বিএনপির গণমিছিল ঘিরে রাজধানীতে পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। মিছিল থেকে কোনো ধরনের অরাজকতা করার চেষ্টা হলে কঠোর অবস্থানে যাবে পুলিশ। এপিসি, জলকামানসহ সব ধরনের সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুত থাকবেন মতিঝিল ও রমনা বিভাগের পুলিশ সদস্যরা। বিএনপিকে গণমিছিলের জন্য নয়াপল্টন থেকে মগবাজার পর্যন্ত অনুমতি দিয়েছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান এ জেড এম জাহিদ হোসেন এবং বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার গণমিছিল করার অনুমতি নিতে ডিএমপি কমিশনারের কার্যালয়ে যান। পরে ডিএমপি কমিশনার খন্দকার গোলাম ফারুক সাংবাদিকদের জানান, গণমিছিলের অনুমতি নিতে এসেছিলেন বিএনপি নেতারা। তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গণমিছিলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের কোনো শর্ত দেওয়া না হলেও কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি না করতে বলা হয়েছে। গণমিছিলের রাস্তাও তাঁদের সুনির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।
গণমিছিলকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এ ছাড়া যেকোনো ধরনের অরাজকতা ঠেকাতে পুলিশ প্রস্তুতি নিচ্ছে। মিছিলের চারপাশে পুলিশের উপস্থিতি থাকবে। অনুমোদিত এলাকা ছাড়াও রাজধানীর অন্য এলাকায় পুলিশের সতর্ক উপস্থিতি থাকবে।
ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মো. ফারুক হোসেন বলেন, গণমিছিলের জন্য অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কোথায় কোথায় মিছিল করবে, সেটিও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। মিছিলে পুলিশ নিরাপত্তা দেবে। অরাজকতা করার চেষ্টা করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।