Search
Close this search box.

প্রতিটি ধর্মের মানুষ যেন নিজ নিজ ধর্ম নিশ্চিতভাবে পালন করতে পারে- প্রধানমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা সব সময় চেষ্টা করি, আমাদের ধর্মের সম্মান যেন আরও উন্নত হয়। বাংলাদেশে প্রতিটি ধর্মের মানুষ যেন নিজ নিজ ধর্ম নিশ্চিতভাবে পালন করতে পারে, সেই ধর্মীয় স্বাধীনতা যেন নিশ্চিত থাকে, এটিই আমরা বিশ্বাস করি। আমরা যেন ধর্মীয় সহিষ্ণুতা দেখাই।

সারা দেশে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে এ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন তিনি।

মসজিদের ইমাম-খতিবদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সমাজে যেসব অসংগতি রয়েছে—মাদকাসক্তি, নারীর প্রতি সহিংসতা, বাল্যবিবাহ, গৃহকর্মীদের নির্যাতন, খাদ্যে ভেজাল, দুর্নীতি ইত্যাদি দূর করতে ইমাম ও খতিবদের প্রতি আমার অনুরোধ থাকবে। এসব বিষয় থেকে মানুষ যেন বিরত থাকে, সেগুলো আপনারা আপনাদের বয়ানের মাধ্যমে মানুষের সামনে তুলে ধরবেন। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ থেকে যেন সব পরিবারের সন্তান বিরত থাকে, সে বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টিতে আপনারা অবদান রাখতে পারেন।’

ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ অর্থনৈতিক মন্দা থেকে যেন বাংলাদেশ দূরে থাকে। সবার কাছে আমার আবেদন থাকবে, কোথাও যেন অনাবাদি জমি না থাকে।

তিনি বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প সবকিছু যেন ঠিকভাবে চলে সে জন্য আমরা শুরুর দিকেও প্রণোদনা দিয়েছি। কৃষক-শ্রমিকদেরও আমরা আর্থিকভাবে সহায়তা দিয়েছি। এ ছাড়া সমাজের নিম্নবিত্তদেরও আমরা খাদ্য সহায়তা দিয়েছি, বিনা পয়সায় টিকা দিয়েছি।

দ্বিতীয় পর্যায়ে ৫০টি মসজিদ খোলার মাধ্যমে, প্রধানমন্ত্রী এখন পর্যন্ত ৯৪৩৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫৬৪টির মধ্যে ১০০টি মসজিদ উদ্বোধন করলেন।

তিনি এর আগে ২০২১ সালের ১০ জুন প্রথম ধাপে ৫০টি মসজিদ উদ্বোধন করেছিলেন। আশা করা হচ্ছে, আগামী ফেব্রুয়ারির শেষে তৃতীয় ধাপে আরও ৫০টি মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র চালু করা হবে। মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত মসজিদগুলোতে ওজু ও নামাজের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে।

এছাড়া হাজীদের জন্য রেজিস্ট্রেশন ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা, ইমাম প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, গবেষণা কেন্দ্র ও ইসলামিক লাইব্রেরি, অটিজম কর্নার, লাশ দাফনের আগের প্রস্তুতি, গাড়ি পার্কিং সুবিধা, প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা ও কুরআন শিক্ষার ব্যবস্থা, ইসলামী সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের জন্য সম্মেলন কক্ষ ও থাকবে। ইসলামিক দাওয়াত, ইসলামী বই বিক্রয় কেন্দ্র এবং দেশী-বিদেশী অতিথিদের জন্য বোর্ডিং সুবিধা থাকবে।

ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান এবং মন্ত্রণালয়ের সচিব কাজী এনামুল হাসান বক্তব্য দেন।

কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম, রাজশাহী ও শরীয়তপুর  থেকেও কর্মসূচিতে ভাচুয়ালি যুক্ত ছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দল, সরকারি কর্মকর্তা ও সাধারণ মানুষ। অনুষ্ঠানে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের ওপর একটি ভিডিও-ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।

ইসলামের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে শেখ হাসিনা সারাদেশে ৫৬৪টি মডেল মসজিদ নির্মাণের পরিকল্পনা করেন।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল ইসলামী ভ্রাতৃত্ব এবং এর মূল্যবোধের প্রচার এবং সেইসাথে চরমপন্থা ও জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ইসলামের সারমর্ম প্রচার করা কারণ ধর্ম কখনই এগুলোকে সমর্থন করে না।

এটি সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- প্রচারের পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদ ও নারীর প্রতি সহিংসতার বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টিতেও মনোনিবেশ করবে।

এ ক্যাটাগরির অধীনে, ৬৪টি জেলা ও সিটি কর্পোরেশন এলাকায় লিফট সুবিধা এবং ফ্লোর স্পেস ২,৩৬০.০৯ বর্গমিটার বিশিষ্ট প্রায় ৬৯টি চারতলা মসজিদ নির্মাণ করা হচ্ছে।

বি ক্যাটাগরির অধীনে, প্রতিটি ১৬৮০.১৪ বর্গ মিটার ফ্লোর স্পেসসহ ৪৭৫টি মসজিদ তৈরি করা হচ্ছে এবং উপকূলীয় অঞ্চলে সি ক্যাটাগরির অধীনে ১৬টি মসজিদের প্রতিটি ২,০৫২.১২ বর্গ মিটার মেঝে থাকবে।

জাতির পিতা ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন আইন, ১৯৭৫ প্রণয়ন করেছিলেন। বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারার সাথে সঙ্গতি রেখে প্রকল্পটি সারা দেশে এই মসজিদ এবং ইসলামী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে একটি শক্তিশালী ইসলামী সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তোলার দিকেও দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ