Search
Close this search box.

গৃহবধুর অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে গণধর্ষণ! গ্রেফতার ৫

স্টাফ রিপোর্টার- রাজধানীতে এক গৃহবধূর অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে গণধর্ষণকারী ৫ লম্পটকে আটক করেছে ডিএমপির মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ। এছাড়াও ধর্ষনের বিভিন্ন আলামত ও দুটি অটোরিকশা উদ্ধার করা হয়েছে।

রবিবার ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার এইচ এম আজিমুল হক এসব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, গত ২৬শে জানুয়ারী অনুমানিক রাত  সাড়ে ১২ টায় অজ্ঞাতনামা ৫ জন লম্পট একজন অসহায় গৃহবধূকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে।

পরবর্তীতে পুলিশের সহায়তায় মামলাটি রুজু হলে ঘটনাটি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং চাঞ্চল্যকর হওয়ায় এডিসি মোহাম্মদপুর জোন ও এসি মোহাম্মদপুর জোন এর তত্ত্বাবধানে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ বিষয়টি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত শুরু করে।

ডিসি জানান, ঘটনাস্থল ও এর আশপাশের অসংখ্য সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে বিশ্লেষণ করে ও বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ঘটনায় জড়িত আসামীদের সনাক্ত ও গ্রেফতার করা হয়।

উপ- কমিশনার জানান, গত ২৫শে জানুয়ারী  ওই নারী ভিকটিম(২৯) দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের একটি জেলা থেকে সন্তানদের সাথে দেখা করার জন্য মোহাম্মদপুর থানাধীন বছিলা এলাকায় আসে। বছিলা এলাকার একটি বাসায় ভিকটিম তার স্বামী সন্তানসহ বসবাস করত। আনুমানিক ৪ মাস আগে শারীরিক অসুস্থতাজনিত কারনে সন্তানদের স্বামীর কাছে রেখে ভিকটিম তার গ্রামের বাড়িতে চলে যায়।

এই সুযোগে তার স্বামী তাকে ডিভোর্স প্রদান করে। ঘটনার দিন আনুমানিক বিকাল সাড়ে ৩ ঘটিকায় ভিকটিম তার আগের বাসায় এসে তার স্বামী সন্তানকে না পেয়ে আশেপাশে খোজাখুজি করতে থাকে। বাড়ির মালিক,
ও পার্শ্ববর্তী ভাড়াটিয়ারা তার স্বামী সন্তানদের কোন ঠিকানা দিতে না পারায় রাত অনুমানিক ৯ টা পর্যন্ত বছিলা চল্লিশফিট হাউজিং, গার্ডেনসিটি হাউজিং, স্বপ্নধারা হাউজিং ও এর আশপাশ এলাকায় খোজাখুজি করে সন্তানদের সন্ধান না পেয়ে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়।

পরবর্তীতে আনুমানিক রাত সাড়ে ৯ টায় ভিকটিম বছিলা চল্লিশফিট তিনরাস্তার মোড় থেকে গাবতলী যাওয়ার উদ্দেশ্যে একটি রিক্সা ভাড়া করে কিন্তু ওই রিক্সাওয়ালা ভিকটিমকে গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে না নিয়ে ঢাকা উদ্যান ও বসিলা এলাকার বিভিন্ন রাস্তায় ঘুরাতে থাকে এবং বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে মোবাইলে কথা বলে। ভিকটিমকে তার স্বামীর বাসা খুজে বের করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ও তার অসহায়ত্বকে পুঁজি করে সময় ক্ষেপন করতে থাকে।

রাত দেড়টার দিকে অজ্ঞাতনামা ওই রিক্সাচালক পরিকল্পনা অনুযায়ী ভিকটিমকে তার অন্যান্য সহযোগীদের নিয়ে মোহাম্মদপুর থানাধীন বসিলা ফিউচার টাউন রোড নং ৫/৩ এর শেষ মাথায় প্লট নং ১ এর নির্মাণ শ্রমিকদের জন্য তৈরী অস্থায়ী টিনের ঘরে ভিকটিমকে ভয়ভীতি দেখিয়ে নিয়ে যায়।

সেখানে ভিকটিম ডাক চিৎকার করলে ওই রিক্সার চালক ও তার সহযোগীরা ভিকটিমকে হত্যার হুমকী দিয়ে জোরপূর্বক পালাক্রমে ৫ জন ধর্ষণ করে। এক পর্যায়ে এলাকায় কর্তব্যরত সিকিউরিটি গার্ড লোকজনের উপস্থিতি টের পেয়ে ঘটনাস্থলে আসলে আসামীরা ভিকটিমকে ফেলে রেখে দৌড়ে পালিয়ে যায়। সিকিউরিটি গার্ড সাথে সাথে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশকে সংবাদ দেয় এবং পার্শ্ববর্তী লোকজনকে ঘটনাটি জানায়। সংবাদ পেয়ে মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছায় এবং ভিকটিমকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। ভিকটিমকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ওসিসিতে প্রেরণ করে।

ডিসি আরও জানান, তথ্য ও প্রযুক্তির সহায়তায় সোর্সের মাধ্যমে গত ৩১শে জানুয়ারি  মোহাম্মদপুর থানাধীন চাঁদ উদ্দ্যান এলাকা থেকে মোঃ শাহিন খান (১৯) কে গ্রেফতার করে পুলিশ। এসময় তার নিকট হতে ভিকটিমের ব্যবহৃত খোয়া যাওয়া মোবাইল ফোনটি উদ্ধার করা হয়।

এরপর গত ৪ ফেব্রুয়ারী দারুসসালাম থানাধীন গাবতলী এলাকা থেকে আসামী বিল্লাল হোসেন (২৫), ঢাকার ডেমরা এলাকা থেকে আসামী আল-আমিন হোসেন (২৬), মোহাম্মদপুর থানাধীন বছিলা এলাকা থেকে আসামী মোঃ সবুজ (২৬) ও মোঃ রাসেল ওরফে মোল্লা রাসেল (২৪) এবং ভোলা জেলার তজুমুদ্দিন থানা এলাকা হতে আসামী মোঃ শফিকুল ইসলাম (২৬) দের গ্রেফতার করা হয়েছে।তাদের হেফাজত থেকে একই অপরাধে ব্যবহৃত ২টি অটোরিক্সা উদ্ধার করা হয়।

পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত ৫ জন আসামীই ভিকটিমকে জোরপূর্বক ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ