Search
Close this search box.

ব্যাংকের নিরাপত্তায় অবৈধ অস্ত্রধারী!

রাকিব হাসান– দেশে বানিজ্যিক ব্যাংক অথবা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্বারক্ষী হিসেবে বেশিরভাগ স্থানেই   দায়িত্ব পালন করেন বিভিন্ন সিকিউরিটি কোম্পানীর অস্ত্রধারী সদস্যরা। তাদের হাতেই মূলত দেশের বেশিরভাগ ব্যাংকের নিরাপত্বা নির্ভর করে। বানিজ্যিক ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলো ওইসব সিকিউরিটি কোম্পনী গুলোর সাথে চুক্তির মাধ্যমে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ প্রদান করে থাকে।

আমরা সকলেই জানি দেশে বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স করতে হলে সরকার নির্ধারিত সকল প্রকৃয়া মেনে আবেদন সম্পন্ন কারার পর বিভিন্ন সংস্থার তদন্দ সাপেক্ষ স্বরাষ্ট মন্ত্রনালয় লাইসেন্স প্রদান করে থাকে। যার মাধ্যমে একজন বৈধ লাইসেন্সধারী বিভিন্ন ব্যাংক বা ব্যাক্তি পর্যায়ে গানম্যান বা দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ পান।

কিন্তু সম্প্রতি র‌্যাবের গোয়েন্দা অনুসন্ধানে উঠে এসেছে অবৈধ অস্ত্রের জাল লাইসেন্স তৈরির ভয়াবহ চিত্র। একটি অসাধু চক্র চোরাচালানের মাধ্যমে পাশ্ববর্তী দেশ থেকে বিভিন্ন অস্ত্র নিয়ে এসে জাল লাইসেন্স তৈরির মাধ্যমে অস্ত্র তুলে দিচ্ছে এক শ্রেনীর মানুষের হাতে। আরও ভয়াবহ তথ্য হলো এই জাল লাইসেন্স ও অস্ত্র দিয়েই তারা চাকরী করছেন বিভিন্ন ব্যাংক, বীমা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে।

র‌্যাবের লিগ্যাল এন্ড মিডিয়া উইং এর পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, চোরাচালানকৃত অবৈধ অস্ত্র অভিনব কৌশলে ভুয়া ও জাল লাইসেন্স তৈরির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যক্তির কা‌ছে বিক্রি চক্রের মূল হোতাকে গ্রেফতারের পর কারা এসব অস্ত্র দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরী করছে বা ইতিপূর্বে করেছে এর একটি তালিকা পাওয়া গেছে। অনুসন্ধান চলমান রয়েছে। আশা করছি খুব শিঘ্রই তাদের আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

তি‌নি ব‌লেন, চক্রটি প্রায় পাঁচ বছর ধরে অবৈধ অস্ত্র কেনাবেচা এবং জাল লাইসেন্স তৈরী করে আসছিল । তারা এসব অস্ত্র বিক্রির সময় গানম্যান হিসেবে চাকরী দেয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে অস্ত্র, লাইসেন্সে এবং চাকরী বাবদ ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা নিত। কিছু কিছূ ক্ষেত্রে তারা অবৈধ অস্ত্র বিক্রির জন্য বেসরকারী বিভিন্ন স্বনামধন্য নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তারক্ষী হিসেবে চাকরি প্রদানে আকৃষ্ট করে আগ্রহীদের কাছ থে‌কে বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিত।

র‌্যাবের এই কর্মকর্তা ব‌লেন, চক্রটির মূলহোতা গ্রেপ্তার পলাশ। তার কাজ ছিল পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে চোরাচালানের মাধ্যমে অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ এবং ভুয়া লাইসেন্স তৈরী করে বিভিন্ন বেসরকারী সিকিউরিটি কোম্পানীতে চাকুরী দেয়ার প্রলোভনের মাধ্যমে বিভিন্ন বিপুল পরিমান অর্থের বিনিময়ে অবৈধ অস্ত্র বিক্রয় করা। চক্রটি পার্শ্ববর্তী দেশ হতে রিভলবার, পিস্তল ও এক নলা বন্দুকসহ বিভিন্ন ধরণের আগ্নেয়াস্ত্র অবৈধ পথে দেশে নিয়ে আসে। পরে আগ্রহী চাকুরী প্রার্থীদের কাছে জাল লাইসেন্সসহ অবৈধ অস্ত্র বিক্রি করে এবং চাকরী দিয়ে থাকে।

এক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন জানান, চক্রটির মাধ্যমে অস্ত্র সংগ্রহ করে যারাই এধরনের প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছে, অভিযান শুরুর পর তারা “গা ঢাকা” দিয়েছে। আমরা যখন ব্যাংকে অভিযান চালাতে যাই ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আমদের সহযোগীতা করেননি।

প্রশ্ন উঠেছে সিকিউরিটি কোম্পানীগুলো কি তাহলে অস্ত্রের লাইসেন্স যাচাই বাছাই ছাড়াই তাদের নিয়োগ দিয়েছে। ব্যাংক, বীমার মত এমন গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠান গুলো কি তাহলে কোনরকম ভেরিফিকেশন ছাড়াই লোক নিয়োগ দিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার পাহাড়ায় বসাচ্ছে।

সম্প্রতি এ চক্রের ছয়জনকে গ্রেফতারের পর ব্যাংকের নিরাপত্তা নিয়ে সকলকে ভাবিয়ে তুলেছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ