স্টাফ রিপোর্টার – গ্রামীণফোনের গ্রাহকরাভোগান্তিতে পড়েছেন। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১ টার পর অপারেটরটির গ্রাহকরা কল (ভয়েস) করতে গিয়ে এবং মোবাইল ইন্টারেনট ব্যবহার করতে গিয়ে ভোগান্তির সম্মুখীন হয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও অনেককে এ বিষয়ে পোস্ট দিতে দেখা গেছে। অনেক গ্রাহক গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্কের বিষয়ে জানতে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন।
জানা গেছে, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জে গ্রামীণফোনের ফাইবার কাটা পড়েছে। ফলে ট্রান্সমিশনে সমস্যা হয়েছে। এ কারণে ভয়েস কল ও ইন্টারনেট ব্যবহার করতে সমস্যা হয়েছে গ্রামীণফোন গ্রাহকদের। গ্রাহকদের কেউ কেউ এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশও করেন।
নেটওয়ার্ক বিপর্যয় নিয়ে বিজ্ঞপ্তিও দিয়েছে গ্রামীণফোন। সেখানে অপারেটরটি জানিয়েছে, ফাইবার অপটিক ক্যাবল বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে সাময়িকভাবে কল করতে অসুবিধা হওয়ায় আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত। দ্রুত সমস্যা সমাধানে আমাদের টিম সর্বোচ্চ গুরুত্ব সহকারে কাজ করে যাচ্ছে।
সেবার মান নিয়ে প্রশ্ন তোলে গত বছরের ২৯ জুন গ্রামীণফোনের সিম বিক্রির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল বিটিআরসি। দীর্ঘ ছয়মাস পর গত ২ জানুয়ারি সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে বিটিআরসি গ্রামীণফোনকে চিঠি দেয়। তবে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ বরাবরই বলে আসছেন, গ্রাহকসেবার মান বাড়াতে যা যা করণীয় সব করছেন তারা।
গ্রামীণফোন বিবৃতিতে বলেছে, গাজীপুর, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জ এলাকায় রাস্তায় খনন কাজ চলাকালে অনিচ্ছাবশত ফাইবার অপটিক ক্যাবল কেটে যাওয়ার ফলে আমাদের কিছু সংখ্যক সম্মানিত গ্রাহক সংযোগ সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলেন। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি পুনরায় আমাদের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে এবং সকল সমস্যা সমাধান করা হয়েছে।
বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ী, দেশে চালু থাকা ১৮ কোটি ৮ লাখ মোবাইল সিমের মধ্যে ৭ কোটি ৯৩ লাখই গ্রামীণফোন। অর্থাৎ, দেশের মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের ৪২ শতাংশই গ্রামীণফোন ব্যবহার করেন, যাদের একটি বড় অংশ নেটওয়ার্ক না থাকায় ভোগান্তিতে পড়েন।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে টেলিযোগাযোগ খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির তরফ থেকে ব্যাখ্যা চেয়ে একটি জরুরি চিঠি পাঠানো হয় গ্রামীণফোনের সিইওকে। বিটিআরসির পরিচলক (ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড অপারেশন্স বিভাগ) মো. গোলাম রাজ্জাক স্বক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, গ্রাহক কর্তৃক প্রচুর পরিমাণে প্রাপ্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে জানা যায় যে দেশব্যাপী মোবাইলফোন অপারেটর গ্রামীণফোনের মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রাপ্তিতে বিঘ্নতার সৃষ্টি হচ্ছে। দেশের শীর্ষ মোবাইল অপারেটর হিসেবে গ্রামীণফোনের গ্রাহক সংখ্যা বিবেচনায় গ্রাহকসমূহ মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রাপ্তিতে বাধাগ্রস্ত হওয়ায় সকল শ্রেণীর গ্রাহকগণ চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এমতাবস্থায়, জাতীয় জরুরি অবস্থা বিবেচনায় গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক বিপর্যয়ের সঠিক কারণ ব্যাখ্যাসহ অতি দ্রুত জরুরি ভিত্তিতে দেশব্যাপী গ্রামীণফোনের নেটওয়ার্ক নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হল।