আন্তর্জাতিক ডেস্ক – ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রচারের সময় রাহুল বলেছিলেন, সব মোদি কেন চোর হয়? এতে ‘মোদি’ পদবীর অসম্মান হয়েছে বলে রাহুলের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন গুজরাটের সাবেক মন্ত্রী বিজেপি বিধায়ক পূর্ণেন্দু মোদি। নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে রাহুল গান্ধী মানহানিকর বক্তব্য দেন বলে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলেন রাহুল। বৃহস্পতিবার ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
এনডিটিভি জানিয়েছে, সেই মামলায় রাহুলকে দোষী সাব্যস্ত করেছে আদালত। যদিও রাহুলের দাবি, তিনি নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে, নীরব মোদি, ললিত মোদিকে বোঝাতে এই মন্তব্য করেছিলেন। মোদি পদবীর অসম্মানের উদ্দেশ্য তার ছিল না। কিন্তু সুরতের একটি আদালত রাহুলকে এ জন্য দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে।
জানা গেছে, রায়ের সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন রাহুল গান্ধী। তবে কারাদণ্ড দেয়া হলেও এখনই জেলে যেতে হচ্ছে না এই কংগ্রেস নেতাকে। তাকে ৩০ দিনের জামিন দিয়েছে আদালত। এই সময়ের মধ্যে আপিল করতে পারবেন তিনি।
অবশ্য সত্যের পথ থেকে সরে আসবেন না বলে জানান রাহুল গান্ধী। গুজরাতের সুরত জেলা আদালতের রায় ঘোষণার পরে রাহুল টুইটারে মহাত্মা গান্ধীর মন্তব্য উদ্ধৃত করে পোস্ট করেছেন। লিখেছেন, আমার ধর্ম সত্য এবং অহিংসার উপর প্রতিষ্ঠিত। সত্য আমার ঈশ্বর, অহিংসা তা পাওয়ার মাধ্যম – মহাত্মা গান্ধী।
‘মোদী’ পদবি নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের দায়ে বৃহস্পতিবার সুরত জেলা আদালতের বিচারক বিচারক এইচএইচ বর্মা রাহুলকে দু’বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেন। তবে প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতির কিরীট পানওয়ালার আবেদনে সাড়া দিয়ে জামিনের আবেদন মঞ্জুর করেছেন বিচারক। ফলে আপাতত ওয়েনাড়ের কংগ্রেস সাংসদের পদ খারিজের সম্ভাবনা নেই বলেই আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন। কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা এমনটিই জানায়।
২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, সব চোরেদের পদবি ‘মোদী’ হয় কেন? আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ললিত মোদী, ব্যাঙ্ক-ঋণ মামলায় ‘পলাতক’ নীরব মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তুলনা টেনেছিলেন তিনি। ওই ঘটনায় রাহুলের বিরুদ্ধে ‘পদবি অবমাননার’ অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৯ এবং ৫০০ ধারায় অপরাধমূলক মানহানির মামলা করা হয়। সেই মামলাতেই দোষী সাব্যস্ত হলেন রাহুল। এর আগে ‘চৌকিদার চোর হ্যায়’ স্লোগানের জন্য রাহুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছিল।
২০১৯ সালের ১০ অক্টোবর এই মামলায় সুরত আদালতে হাজির হয়েছিলেন রাহুল। সে সময়ও নিজের অবস্থানে অনড় থেকে বিচারকের সামনে দেওয়া বয়ানে জানিয়েছিলেন তিনি কোনও ভুল করেননি। পরে টুইটারে লিখেছিলেন, বিজেপি মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে তাঁর মুখ বন্ধ করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। বৃহস্পতিবারও সেই অবস্থানেই অটল থাকার বার্তা দিলেন তিনি। রাহুলের আইনজীবী জিগ্নেশের দাবি, আদালতে রাহুল জানিয়েছেন তিনি ইচ্ছাকৃত ভাবে কোনও পদবিধারীদের আঘাত করেননি।