মিথুন আশরাফ – বাংলাদেশ ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যকার তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আজ। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুপুর ২ টায় ম্যাচটি শুরু হবে। এই ম্যাচটিতে জিতলেই আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করবে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। আজ জিতলে ৩-০ ব্যবধানে জয় হয়ে যাবে। ওয়ানডে সিরিজের পর আয়ারল্যান্ডকে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও নাজেহাল করা হয়ে যাবে।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে বৃষ্টি আইনে ২২ রানে জিতেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে ৭৭ রানের বড় ব্যবধানে জয় মিলে। বাংলাদেশ দলের প্রধান কোচ চন্দ্রিকা হাথুরুসিংহে টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে বলেছিলেন, আক্রমণাত্মক ক্রিকেট দেখতে চান। তাই দেখাচ্ছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটাররা। বল হাতে যেমন বোলাররা বিধ্বংসী, তেমনি ব্যাট হাতে ব্যাটাররা আরও বিধ্বংসী হয়ে উঠেছেন।
প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯.২ ওভারে ২০৭ রান করে বাংলাদেশ। রনি তালুকদার ৬৭, লিটন কুমার দাস ৪৭, শামিম হোসেন ৩০ রান করেন। চট্টগ্রামে টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ নিজেদের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান করে। যখন বাংলাদেশের ইনিংস শেষ হতে ৪ বল বাকি, তখন বৃষ্টি শুরু হয়। খেলা আবার শুরু হয় যখন আয়ারল্যান্ডের সামনে জিততে ৮ ওভারে ১০৪ রানের টার্গেট দাড় হয়। এই টার্গেট অতিক্রম করতে গিয়ে ৪ ওভারে ৪০ রানেই ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তাসকিন আহমেদ তো নিজের প্রথম ওভারেই হ্যাটট্রিক সুযোগ সৃষ্টি করে ৩ উইকেট শিকার করে নেন। এরপর আর একটি উইকেট যায়। তবে ৮ ওভারে ৮১ রানের বেশি করতে পারেনি আয়ারল্যান্ড।
দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে একের পর এক রেকর্ড গড়ে বাংলাদেশ। সাকিব তো ৫ উইকেট শিকার করে নিয়ে ম্যাচের নায়কও হয়েছেন, আবার বিশ^রেকর্ডও গড়েছেন। নিজেদের টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট ইতিহাসে সবচেয়ে কম ২১ বলে দলীয় স্কোরে ৫০ রান যোগ হওয়ার রেকর্ড হয়। লিটন কুমার দাস সবচেয়ে কম বলে ১৮ বলে হাফসেঞ্চুরি করেন। এতই দ্রুত রান তুলতে থাকেন দুই ওপেনার লিটন ও রনি তালকুদার যে পাওয়ার প্লে’তেই ৭৩ রান স্কোরে যোগ হয়ে যায়। দুই ওপেনার মিলে ১২৪ রানের জুটি গড়ে রেকর্ডের পাতায় নাম লেখায়। বৃষ্টির জন্য খেলা ১৭ ওভারে হয়। তাতেই বাংলাদেশ ৩ উইকেট হারিয়ে ২০২ রান করে।
লিটন ৪১ বলে ১০ চার ও ৩ ছক্কায় ৮৩ রান করেন। রনি তালুকদার ২৩ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৪৪ রান করেন। সাকিব আল হাসান ২৪ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৩৮ রান করেন। তাওহীদ হৃদয় ১৩ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় ২৪ রান করেন। আর নাজমুল হোসেন শান্ত করেন অপরাজিত ২ রান।
আইরিশদের বড় ব্যবধানেই হারায় বাংলাদেশ। ১৭ ওভার খেলতে পারে আয়ারল্যান্ড। তবে হারায় ৯ উইকেট। ১২৫ রানের বেশি করতে পারেনি। কার্টিস ক্যাম্ফার সর্বোচ্চ ৫০ রান করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেন হ্যারি টেকটর (২২)। সাকিব আল হাসান একাই ৫ উইকেট শিকার করে নেন। তাসকিন আহমেদ ৩টি ও হাসান মাহমুদ একটি উইকেট শিকার করে নেন।
আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৫ উইকেট শিকারের মধ্য দিয়ে অনন্য উচ্চতায় উঠে গেছেন সাকিব আল হাসান। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে শীর্ষ উইকেট শিকারি বনে গেলেন সাকিব। ১১৪ ম্যাচে ১১২ ইনিংসে সর্বোচ্চ ১৩৬ উইকেট শিকারের নজির গড়েছেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাকিব। এতদিন এই রেকর্ডের মালিক ছিলেন নিউজিল্যান্ডের তারকা পেসার টিম সাউদি। তিনি ১০৭ ম্যাচের ১০৫ ইনিংসে ১৩৪ উইকেট শিকার করে বর্তমানে দ্বিতীয় পজিশনে আছেন।
যে বিধ্বংসী রূপ বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের থেকে মিলছে, তাতে শেষ টি-টোয়েন্টিতেও যে আইরিশদের উড়িয়ে দেবে বাংলাদেশ, তা ধরেই নেয়া হচ্ছে। এখন দেখা যাক, কী হয়। তবে এরআগে দুই দলের মধ্যকার একবারই টি-টোয়েন্টি সিরিজ অনুষ্ঠিত হয়। ২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডে হওয়া সেই তিন ম্যাচের সিরিজে বাংলাদেশই জিতে। আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করে। এবারও বাংলাদেশ সিরিজ জয় করে নেয়। এখন আয়ারল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার অপেক্ষা।