Search
Close this search box.

জাতীয় কবির পুত্রবধূ কল্যাণী কাজীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক

জাতীয় কবির পুত্রবধূ কল্যাণী কাজীর মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রীর শোক

স্টাফ রিপোর্টার – বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী এবং জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কনিষ্ঠ পুত্রবধূ কল্যাণী কাজীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী এক শোক বার্তায় বলেন, বিখ্যাত এ নজরুল গীতি শিল্পীর মৃত্যুতে সংগীত জগতের এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো। প্রধানমন্ত্রী তাঁর শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

এর আগে শুক্রবার ভোরে কলকাতায় ৮৭ বছর বয়সে তার মৃত্যু হয়। তিনি জাতীয় কবির ছোট ছেলে কাজী অনিরুদ্ধের স্ত্রী। বার্ধক্যজনিত কারণে গত নভেম্বর থেকেই কলকাতার যোধপুর পার্কের কাছে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন কল্যাণী কাজী।

পরে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের সহায়তায় তার চিকিৎসা চলছিল কলকাতার মাল্টি সুপার স্পেশালিটি এসএসকেএম হাসপাতালে। সেখানে পেসমেকার বসানো হয় তার। যদিও অবস্থান উন্নতি হয়নি। হাসপাতালেই দীর্ঘকালীন চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসকরা জানায়, শুক্রবার সকালে কল্যাণী কাজীর মাল্টি অর্গান ফেইলিওর হয়ে মৃত্যু হয়।

গত নভেম্বর মাস থেকেই শারীরিক কষ্টে ভুগছিলেন কল্যাণী। ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়েছিল তার। সেই সঙ্গে নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। প্রথমে দেশপ্রিয় পার্কের কাছে এক বেসরকারি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। তারপর তাকে এসএসকেএমএ স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে চিকিৎসক রজত চৌধুরীর অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। মাল্টিঅর্গান ফেলিওর হয় তার। আজ শুক্রবার সকালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।

কল্যাণীর দুই পুত্র ও এক কন্যা রয়েছেন। তার দেহ পাইকপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হবে এবং পিস ওয়াল্ডে রাখার পরিকল্পনা রয়েছে। আগামীকাল শনিবার কন্যা অনিন্দিতা কাজী আমেরিকা থেকে ফিরলে পার্ক সার্কাসে কল্যাণীর শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।

ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন কাজী নজরুল ইসলামের গুণমুগ্ধ। বড় হয়েছেন তার কবিতা পড়ে, প্রভাত ফেরিতে তার লেখা উদ্দীপন সঙ্গীত গেয়ে। তখন কোনোদিনও স্বপ্নেও ভাবেন নি কবির ছোট ছেলে প্রখ্যাত গিটারবাদক কাজী অনিরুদ্ধর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে তিনি আবদ্ধ হবেন।

১৫/১৬ বছর বয়সে ভারতের বিহার রাজ্যে রাঁচী বেড়াতে গিয়ে আকস্মিকভাবে কাজী অনিরুদ্ধর সঙ্গে পরিচয়, তারপর প্রণয় ও বিয়ে। বিয়ের আগেই কবিকে প্রথম দেখার অভিজ্ঞতা ছিল স্বপ্নের মত, কিন্তু কবি তখন বাক্রুদ্ধ।
কল্যাণী কাজী এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, নজরুল ইসলামের স্ত্রী প্রমীলা নজরুল ইসলাম না থাকলে তখনকার রক্ষণশীল সমাজে কাজী অনিরুদ্ধর সঙ্গে তার বিয়ে হতো কীনা সন্দেহ।

১৮ বছর বয়সে পুত্রবধূ হয়ে ওই সংসারে ঢোকার পর খুব কাছ থেকে দেখেছেন কাজী নজরুল ইসলামকে। কল্যাণী কাজীর অসামান্য গায়কী থেকে গাওয়া নজরুলগীতি শ্রোতাদের মুগ্ধ করে রাখত। পশ্চিমবঙ্গ সরকার ২০১৫ সালে তাকে ‘সংগীত মহাসম্মান’ প্রদান করে। তিনি পশ্চিমবঙ্গ কাজী নজরুল ইসলাম অ্যাকাডেমির উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরও সংবাদ >

সর্বশেষঃ