বিএনপিকে ষড়যন্ত্রের পথ ছেড়ে নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, বিএনপি নামক দলটির অবশিষ্ট যদি রক্ষা করতে চান তাহলে নির্বাচনের পথে আসুন। নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন। প্রমাণ করুন বাংলাদেশের জনগণ সৃষ্টির পক্ষে না ধ্বংসের পক্ষে?
শনিবার (৫ আগস্ট) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শহীদ শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন নানক।
আগামী নির্বাচনেও বিএনপিকে জনগণ ভোট দেবে না জেনেই তারা ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। কারণ ২০১৪ সালে নির্বাচন প্রতিহতের আন্দোলনের নামে অগ্নিসন্ত্রাস করে জীবন্ত মানুষ হত্যা করেছে। বাস, ট্রেন ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করেছে, রাস্তার গাছ কেটে ফেলেছে। শেখ হাসিনা সৃষ্টি করে আর তোমরা ধ্বংস করো।
নানক বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের শাসনামলে ১৭ আগস্ট সারা দেশে বোমা হামলা, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ হত্যা, ক্যু, লুটতরাজের রাজনীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য। জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, সেই বিএনপি-জামায়াত এখন আমাদের গণতন্ত্রের কথা শোনায়, মানবাধিকার শিখায়। বাংলাদেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে অভিযোগ করা জাতীয়-আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোরও সমালোচনা করেন তিনি।
বিএনপির উদ্দেশে নানক বলেন, ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে দেবে না, এই ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ কে পাস করেছিল ফখরুল সাহেব? আপনাদের প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। এখন গণতন্ত্রের কথা বলেন, মানবাধিকারের কথা বলেন, আইনের শাসনের কথা বলেন তখন ঘোড়াও হাসে, কি বলে ওরা।
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা গণতন্ত্র দিয়েছেন, কথা বলার সুযোগ দিয়েছেন। সেই কারণে কথা বলেন, তবে সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাবেন না। বিএনপি-জামায়াত চক্রান্তে রয়েছে। এই চক্রান্তের অংশ হিসেবেই আজ তারা মানুষের কাছে পৌঁছাতে না পেরে, মানুষের হৃদয়কে জয় করতে না পেরে এখন দৌড়াচ্ছে আন্তর্জাতিক মোড়লদের কাছে। এই আন্তর্জাতিক মোড়লরা আপনাদের ক্ষমতায় আনতে পারবে না।
বিএনপির এক দফা আন্দোলনের সমালোচনা করে নানক বলেন, জনগণের জন্য এ পর্যন্ত কি দিয়েছেন? ২০০১ সালে মায়ের সামনে মেয়েকে রেপ করেছেন। ভাইয়ের সামনে বোনকে রেপ করেছেন। আমাদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দিয়েছেন, হাত কেটেছেন, চোখ উপড়ে ফেলেছেন। কাজেই মির্জা ফখরুল সাহেব, জনগণের জন্য যেহেতু কোনো কিছু করেননি। সেই জনগণকে কোনো দিনই আপনারা পাশে পাবেন না।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এ সদস্য বলেন, আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন। আগামী নির্বাচন হবে সবার কাছে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। তাই সেই নির্বাচনে বিএনপিকে জনগণের কাছে অগ্নিপরীক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি। পাশাপাশি আগামী নির্বাচনকে কেন্দ্র বিএনপি-জামায়াতসহ সব অপশক্তির ষড়যন্ত্র মোকাবিলায় দলীয় নেতাকর্মীদের সতর্ক ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান নানক।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মান্নাফির সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবিরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজমসহ মহানগরের নেতারা।